ইতিহাসের সবচেয়ে উত্তপ্ত এপ্রিল পার করছে এশিয়া, ঝুঁকিতে জনস্বাস্থ্য

|

ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত ছবি।

ইতিহাসের সবচেয়ে উত্তপ্ত এপ্রিল পার করছে এশিয়া। বাংলাদেশ ছাড়াও ভারত, পাকিস্তান, মিয়ানমার, থাইল্যান্ডে একের পর এক রেকর্ড ভাঙছে তাপমাত্রা। চরম ঝুঁকিতে জনস্বাস্থ্য। তীব্র তাপদাহ, খরার ভয়াবহ প্রভাব পড়ছে খাদ্য উৎপাদনে। ক্রমে ইউরোপ-আমেরিকায়ও অসহনীয় হয়ে উঠছে গ্রীষ্মকাল। ছড়াচ্ছে ভয়াবহ দাবানল। এমন দীর্ঘমেয়াদী তাপদাহ জলবায়ু পরিবর্তনের সংকেত বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। খবর এশিয়া নিউজ নেটওয়ার্কের।

স্পেনে মাইলের পর মাইল এলাকা পুড়ছে দাবানলে। প্রতিবেশী ফ্রান্সের বনভূমি এলাকায়ও জ্বলছে নিয়ন্ত্রণহীন আগুন। উষ্ণ ও শুষ্ক আবহাওয়ায় বাড়ছে গরমের তীব্রতা।

ইউরোপ-আমেরিকার দেশগুলোয় দিনদিন বাড়ছে তাপমাত্রা। গত কয়েক বছর ধরেই শীতপ্রধান দেশগুলোতেও দাবদাহে নাকাল হচ্ছে বাসিন্দারা। গরমের প্রকোপ বেড়েছে আফ্রিকাতেও। তবে সবচেয়ে ভয়াবহ পরিস্থিতি এশিয়ায়। ভারত, পাকিস্তান, বাংলাদেশ, মিয়ানমার, থাইল্যান্ডসহ বিভিন্ন অঞ্চলে আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে গড় তাপমাত্রা।

এ প্রসঙ্গে বিশিষ্ট পানি বিশেষজ্ঞ আলা মারজৌগুই বলেন, আবহাওয়ার চরম ভাবাপন্ন রূপ দেখছে বিশ্ব। তীব্র ঠাণ্ডা, নজিরবিহীন তুষারপাত, ঝড়, সাইক্লোন যেমন হচ্ছে। তেমনই বাড়ছে তাপমাত্রা। এটা ভাবার জন্য বিশেষজ্ঞ হওয়ার প্রয়োজন হয় না। প্রাকৃতিক বিপর্যয় মোকাবেলায় প্রস্তুতি নেই আমাদের।

সম্প্রতি ১২২ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা দেখেছে ভারত। পশ্চিমবঙ্গ, ওড়িষ্যা, অন্ধ্র প্রদেশ, বিহারে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের আশপাশে তাপমাত্রা। ঝাড়খণ্ড, মহারাষ্ট্র, রাজস্থান, কেরালা, এমনকি হিমালয় সংলগ্ন সিকিমও পুড়ছে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি উত্তাপে। ভারতের আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, মার্চ থেকে মে মাস পর্যন্ত তাপদাহের কবলে পড়বে দেশটির বেশিরভাগ অংশ।

এছাড়া গোটা উপমহাদেশেই বিরাজ করছে অস্বাভাবিক গরম। পাকিস্তানে কোনো কোনো অঞ্চলে ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছাকাছি পৌঁছেছে তাপমাত্রা। পারদ ৪০ ডিগ্রির ওপরে থাকলেও থাইল্যান্ডে অনুভূত হচ্ছে ৫০ ডিগ্রি পর্যন্ত। চীনে গড় তাপমাত্রা ৩৫ ডিগ্রি হলেও ইউনান, সিচুয়ান, গুইঝৌ, হুবেই প্রদেশে তা ৩৭ ডিগ্রির ওপরে।

এদিকে, তীব্র গরমে তৈরি হয়েছে মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুকি। কেবল তাই নয়, প্রকট হয়েছে খাদ্য, পানি, জ্বালানি সংকট।
পরিসংখ্যান বলছে ১২০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ খরা দেখছে ভারতীয় উপমহাদেশ। যার বিরূপ প্রভাব পড়েছে শস্য উৎপাদনে।

এ প্রসঙ্গে বিশিষ্ট জলবায়ু বিশেষজ্ঞ আনিস খারবৌচি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের বড় প্রভাব পড়েছে কৃষিকাজে। সেচের অভাবে অনেক কৃষিজমি পতিত। আবার অসময়ের ঝড়-বৃষ্টিতেও শস্য উৎপাদনে ক্ষতির মুখে পড়ছেন কৃষকরা।

প্রসঙ্গত, তাপমাত্রা বৃদ্ধির অস্বাভাবিকতাকে বৈশ্বিক উষ্ণতার ফল বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। সতর্ক করছেন, এখনই লাগাম টানতে না পারলে, ভয়াবহ বিপর্যয় দেখতে হবে বিশ্বকে।

/এসএইচ


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply