অ্যালেক্সিস ডাউডেলের সেদিন ছিল ১৬তম জন্মদিন। যুক্তরাষ্ট্রের আলাবামার ডেইডভিলে নাচের একটি স্টুডিওতে তিনি জন্মদিন পালন করছিলেন। কিন্তু সেদিন সেই স্থানেই ঘটে যায় একটি এলোপাতাড়ি গুলিবর্ষণের ঘটনা; যাতে জন্মদিনে অ্যালেক্সিসের প্রাণ বাঁচিয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন তার ভাই ফিল ডাউডেল। শনিবার (১৫ এপ্রিল) আলাবামার এই পার্টিতে এলোপাতাড়ি গুলিবর্ষণে প্রাণ হারিয়েছে আরও ৪ জন ব্যক্তি। বিবিসির খবর।
অ্যালেক্সিস ডাউডেলের জন্মদিনের পার্টিতে কেউ একজন বহন করছে আগ্নেয়াস্ত্র। এরকম একটি খবর শুনে সেখানে হাজির হন অ্যালেক্সিসের ভাই ফিল। তাদের মা লাটনিয়া অ্যালেনের কানেও পৌঁছায় এরকম খবর। তিনি পার্টিতে গিয়ে জ্বেলে দেন সবকটি বাতি। ডিজে বুথে গিয়ে ঘোষণা করেন, যার কাছে আগ্নেয়াস্ত্র আছে সে যেন বের হয়ে যায়। কিন্তু কেউই আগ্নেয়াস্ত্র বহনের কথা স্বীকার করেনি। কিছুক্ষণ পর তাই বাতি নিভিয়ে দেন অ্যালেন।
এর কিছুক্ষণ পরই শুরু হয় গুলিবর্ষণ। বিবিসির কাছে অ্যালেক্সিস বলেন, হুট করেই শুনলাম গুলিবর্ষণের শব্দ। সবাই দৌড়ে যাচ্ছিল দরজার দিকে। দৌড়াতে গিয়ে পড়ে যাচ্ছিল মানুষ। আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে চারিদিকে। কান্নার আওয়াজও পেয়েছি। অ্যালেক্সিস জানান, তার ভাই ফিল ছুটে এসে তাকে মাটিতে ফেলে আড়াল করার চেষ্টা করেন। কিন্তু মানুষের হুড়োহুড়িতে আলাদাও হয়ে যান তারা। ফিলের কথামতো অ্যালেক্সিস কোনোমতে ভেন্যু থেকে বেরিয়ে যান। কিছুক্ষণ পর সেখানে ফিরে এসে অ্যালেক্সিস দেখতে পান, গুলি লেগেছে ভাই ফিলের গায়ে।
সে সময়ের কিছুক্ষণ পরেই চেতনা হারান ফিল। শেষ সময় পর্যন্ত ফিলের পাশেই ছিলেন অ্যালেক্সিস। কোনো কথা বলতে পারছিলেন না ফিল। অ্যালেক্সিসের কাঁধে মাথা রেখেই নিস্তেজ হয়ে যান ফিল ডাউডেল। অ্যালেক্সিসের মতে, আর কখনোই তার জন্মদিন আগের মতো থাকবে না। তিনি বলেন, ফিলের শেষ কথাটা ছিল, শক্ত থেকো।
শনিবার রাতের এই আক্রমণে আহতে হয়েছেন প্রায় ৩২ জন। পুলিশ এখনও হামলাকারীকে আটক করতে পারেনি। হামলার কারণ সম্পর্কেও স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী করতে পারেনি কোনো সুরাহা। ডেইডভিলের মেয়র জিমি ফ্র্যাংক গুডম্যান সিনিয়র বলেন, এই হামলার পর স্থানীয় হাসপাতালে বিভীষিকাময় পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। এটা এতই ভয়ঙ্কর যে, ভিয়েতনামের যুদ্ধের কথা মনে পড়ে যাচ্ছে।
/এম ই
Leave a reply