মামুনুর রশীদ:
জাতীয় বা বয়সভিত্তিক ফুটবল দলের প্রতিটি আসরে অংশগ্রহণের আগে অন্তত ১৭টি আইটেম কিনতে প্রত্যেকবারই দুর্নীতি করেছে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) কর্মকর্তারা। সেই প্রমাণ মিলেছে যমুনা টেলিভিশনের অনুসন্ধানে।
এমনকি, নারী দলের মোজা থেকে শুরু করে জার্সি ক্রয়েও বাদ যায়নি টাকা খাওয়া। আর বিমানের টিকিট মানেই যেনো কোটি টাকার হাতছানি! সোহাগ, হাসান ছাড়িয়ে এবার নাম উঠে এসেছে ক্রয় সংক্রান্ত বিভাগের কর্মী শরিফের নাম।
পুরুষ কিংবা নারী, জাতীয় দল কিংবা বয়সভিত্তিক দল- তাদের জন্য বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের অন্যতম পছন্দ গুলিস্তানের স্পোর্টস মার্কেট। অন্ধকার গলিতে লুকিয়ে থাকা এই দোকানই পছন্দের শীর্ষে বাফুফে কর্তাদের। এর কারণটা বেশ সহজ এবং অনুমেয়। সেই অনুমান থেকে হাতে কলমে প্রমাণও উঠে এসেছে যমুনা টেলিভিশনের হাতে। নারী ও পুরুষ দলের দেশীয় ও আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট ঘিরে প্রতি বছর কোটি কোটি টাকা লোপাট করছে বাফুফের একটি পক্ষ।
নারী দলের মোজার জন্য মন্ত্রণালয়ে বাজেট দেয়া হয় ৪২ হাজার ৫০০ টাকা। কিন্তু স্পোর্টস কর্নার নামের সেই দোকান থেকে সেটি কেনা হয় মাত্র ১৫ হাজার টাকায়। এক মোজাতেই লাভ প্রায় ২৭ হাজার টাকা! জাতীয় দল ও বয়সভিত্তিক মিলিয়ে বছরে ডজনখানেক আসরে খেলে পুরুষ ও নারী দল, সে হিসেবে এই লাভের পরিমাণ দাঁড়ায় প্রায় সাড়ে তিন লাখ টাকা।
অনুশীলন জার্সির জন্য মন্ত্রণালয়ে দেয়া বাজেটে ধরা হয়েছে ৫৬ হাজার ২৫০ টাকা। কিন্তু স্পোর্টস কর্নার নামের সেই দোকান থেকে সেটি কেনা হয় ৩৭ হাজার ৫০০ টাকায়। এখানেই লাভ প্রায় ১৯ হাজার টাকা। যা বছরের হিসেবে দাঁড়ায় ২ লাখ ৩৫ হাজার টাকা।
এ রকম করে প্রতি টুর্নামেন্টে কমপক্ষে ১৭টি আইটেম কেনা হয় দলের জন্য। মোজা আর জার্সি বাদে বাকি ১৫ আইটেমে গড়ে ১০ হাজার টাকা বেশি ধরলেও বছরে প্রায় ২০ লাখ টাকা করে পকেটে ঢোকে বাফুফে কর্তাদের।
বাফুফের ক্রয় সংক্রান্ত বিভাগের পক্ষে সরাসরি দোকানে গিয়ে এসব কেনাকাটা করেন শরিফ নামের এক কর্মী। যোগাযোগ করা হলে বাফুফের মিডিয়া উইংয়ের অনুমতি ছাড়া কথা বলতে পারবেন না বলে জানান এই শরিফ।
আর, এক বিমান টিকিটেই প্রতি বছর বাফুফে কর্তারা হাতিয়ে নেন প্রায় দেড় থেকে দুই কোটি টাকা। এর প্রমাণ ইতোমধ্যে এসেছে গণমাধ্যমে।
ফিফার বরাদ্দ নিয়ে অনিয়মের অভিযোগে ইতোমধ্যে আবু নাইম সোহাগ নিষেধাজ্ঞা পেয়েছেন। কিন্তু এই অনিয়ম তিনি একা করেননি। বাফুফের প্রশাসনিক কাঠামোয় যারা আছেন- তাদের অনেকেই যে এর সাথে জড়িত, তার প্রমাণ মিলছে একের পর এক।
/আরআইএম/এম ই
Leave a reply