সাধারণত কোনো মানুষ মৃত্যুর ঠিক আগ সময়ে একবার অন্তত তার চোখ মুহূর্তের জন্য খোলেন। তাই সেটি মৃত্যুর পরেও খোলা থাকে। এক সময় মৃত্যুর পরে চোখ খোলা রাখাকে অশুভ বলে মনে করা হতো এবং সঙ্গে সঙ্গে চোখের পাতা বন্ধ করে দেয়া হতো।
সিনেমায় এমন দৃশ্য আমরা প্রত্যেকেই দেখেছি৷ কোনো ব্যক্তি মারা গেলে, প্রথমেই তার খোলা চোখ বন্ধ করে দেয়া হচ্ছে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, মৃত্যুর কয়েক ঘণ্টা পরেও মানুষের চোখ কর্মক্ষম অবস্থায় থাকে।
চিকিৎসা বিজ্ঞান অনুযায়ী, মানুষের হৃৎপিণ্ড স্তব্ধ হয়ে গেলেই তার মৃত্যু ঘটে। মস্তিষ্কও কাজ করা বন্ধ করে দেয়। শরীরের সব সিস্টেম থেমে যায়। কিন্তু মানুষ মারা গেলে কেন চোখ খোলা থাকে সেটা বড় প্রশ্ন। এর পিছনে বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা জানা থাকলে, মনে আর কোনো সংশয় থাকবে না।
আমাদের চোখের পাতা কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্র দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। স্নায়ু আমাদের মস্তিষ্কে সংকেত পাঠায়। তার মাধ্যমেই আমাদের শরীরে চোখ বন্ধ বা খোলা রাখা নিয়ন্ত্রিত হয়। আমরা যখন বেঁচে থাকি, এটি একটি সিস্টেমের মতো কাজ করে। সেই কারণে, যখন চোখে রোদ পড়ে বা আমরা ঘুমাতে যাই, তখন আমাদের চোখ বন্ধ করে ফেলি। কিন্তু মৃত্যু হলে কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্র কাজ করা বন্ধ করে দেয়। সেই কারণে চোখের পাতা খোলা-বন্ধ হওয়াও আর নিয়ন্ত্রিত হয় না। তাই চোখের পাতা খোলা অবস্থাতেই থাকে।
বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ঘুমন্ত অবস্থায়ও মানুষ মারা যাওয়ার আগে জেগে ওঠে এবং তারপর তাদের চোখ খুলে যায়। এমতাবস্থায় মৃত্যুর পরও তার চোখ খোলা থাকে। আরেকটি কারণ হলো চোখের সাথে সংযুক্ত পেশী চোখ খোলা ও বন্ধ করার কাজ করে। মৃত্যুর ক্ষেত্রে মস্তিষ্ক মারা গেলে, সেগুলো কাজ করা বন্ধ করে দেয়।
যদিও এটা বিশ্বাস করা হয় যে মৃত্যুর পর চোখ ৫ ঘণ্টা কাজ করে। কেউ যদি চোখ দান করতে চায়, তবে এই সময়ের মধ্যেই এটি করা উচিত, অন্যথায় ধীরে ধীরে কর্নিয়া নষ্ট হতে শুরু করে এবং তারপর এটি কাজ করা বন্ধ করে দেয়।
তথ্যসূত্র: নিউজ এইটিন
ইউএইচ/
Leave a reply