পঞ্চগড় প্রতিনিধি:
তিন মাস আগে দাখিল পরীক্ষায় অংশ গ্রহণের জন্য ফরম পূরণ করেছিলেন পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলার শিলাইকুঠি বালাবাড়ি দাখিল মাদরাসার ছাত্রী সুমাইয়া আক্তার। ফরম পূরণের সময় মাদরাসা কর্তৃপক্ষ তার কাছে ২৫০০ টাকা আদায়ও করে। এরপর পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন সুমাইয়া। কিন্তু, মাদরাসা কর্তৃপক্ষের ভুলে প্রবেশপত্র হাতে পাননি তিনি।
জানা গেছে, শনিবার (২৯ এপ্রিল) মাদরাসায় দাখিল পরীক্ষার প্রবেশপত্র আনতে যান সুমাইয়া। প্রবেশপত্রের জন্য অন্যদের মতো মাদরাসার কর্তৃপক্ষকে ৫০০ টাকাও দেন তিনি। কিন্তু, প্রবেশপত্র নিতে গিয়ে দেখেন যে তার নামে কোনো প্রবেশপত্র আসেনি। খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন তার ফরম পূরণই করেনি মাদরাসা কর্তৃপক্ষ। তার জায়গায় দুই বছর আগে ঝরে পড়া সুরাইয়া নামের এক ছাত্রীর ফরম পূরণ করে দিয়েছে মাদরাসা কর্তৃপক্ষ।
শুরুতে ঘটনাটি নিজেই বিশ্বাস করতে পারছিলেন না সুমাইয়া। পরে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পরে তার মাথায় যেন আকাশ ভেঙে পড়ে। মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়েন তিনি। তার পরিবারের সদস্যদেরও একই অবস্থা। দশ বছর লেখাপড়া করে দাখিল পরীক্ষার যে স্বপ্ন দেখেছিলেন প্রত্যন্ত গ্রামের শিক্ষার্থী সুমাইয়া তা বুঝি আর পূরণ হলো না।
বিষয়টি জানাজানি হলে পুরো এলাকায় ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। স্থানীয়রা মাদরাসার কর্তৃপক্ষের এমন দায়িত্বজ্ঞানহীন কর্মকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন।
যমুনা টেলিভিশনের সবশেষ আপডেট পেতে Google News ফিড Follow করুন।
ভুক্তভোগী সুমাইয়ার বড় বোন মোর্শেদা আক্তার বলেন, মাদরাসায় গিয়ে প্রবেশপত্র আনতে গিয়ে যখন আমার বোন জানতে পারে যে তার ফরম পূরণই হয়নি তখন সে মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে। এখন সে যদি কোনো অঘটন ঘটিয়ে ফেলে এর দায় কে নেবে? যে টাকা দিয়েছে তার ফরম পূরণ না করে তারা যে লেখাপড়া বাদ দিয়েছে তার ফরম পূরণ করে দিয়েছে মাদরাসা কর্তৃপক্ষ। কয়েক মাস আগে ফরম পূরণ হয়েছে। তখনও তারা নিজেদের ভুল ধরতে পারেনি। আর প্রবেশপত্র আসার পরও তারা টাকা নেয়ার জন্য তা খুলে দেখেনি। এখন আমার বোন যদি পরীক্ষা দিতে না পারে এর দায় কে নিবে?
ওই মাদরাসার সুপার বদরুল আলম সরকার বলেন, সুমাইয়ার পরিবর্তে ভুলক্রমে সুরাইয়া নামের এক ছাত্রীর ফরম পূরণ হয়ে গেছে। আমরা আজকেই বিষয়টি জানতে পেরেছি। আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ও বোর্ডের কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলেছি। দেখি কী করা যায়। তবে এ ভুলের দায়ভার কার এমন প্রশ্নের কোনো জবাব দিতে পারেননি তিনি।
এ বিষয়ে তেঁতুলিয়া উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শওকত আলী বলেন, বিষয়টি আমি শুনেছি। এটি প্রতিষ্ঠান প্রধানের গাফিলতি। প্রবেশপত্র এসেছে আরও অন্তত দুই সপ্তাহ আগে। তারা খুলেছে আজ। এ শিক্ষার্থী পরীক্ষা দিতে না পারলে এর দায় অবশ্যই প্রতিষ্ঠান প্রধানের। আমি সুপারকে নির্দেশ দিয়েছি যেভাবেই হোক ওই শিক্ষার্থী যেন পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারে সেজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে।
/এসএইচ
Leave a reply