সত্যিই কী বাখমুত ছাড়ছে ওয়াগনার গ্রুপ? রাশিয়ার বিশ্লেষকরা বলছেন, নিজ স্বার্থ হাসিলের জন্য আল্টিমেটামের নাটক সাজিয়েছেন ইয়েভগেনি প্রিগোঝিন। তাদের অভিমত, পুতিন সরকারের মাথাব্যাথা এখন এই ভাড়াটে সেনাদলটি। সুতরাং আপোষে সরে যাওয়ার অপেক্ষায় মস্কো। নতুনভাবে সাজাচ্ছে রণ-পরিকল্পনাও। সেই অনুসারে, চেচেন যোদ্ধারা দিয়েছে লড়াইয়ের ঘোষণা। খবর এপির।
ইউক্রেনে সামরিক অভিযানের শুরু থেকেই আলোচনায় রয়েছে ওয়াগনার গ্রুপ। কারণ, ২০১৪ সালে ক্রাইমিয়া যুদ্ধের সময়ও ভাড়াটে সেনাদলটির ছিল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। তাছাড়া, সিরিয়া-লিবিয়া অভিযানে পুতিন প্রশাসনের জন্য বয়ে এনেছিল সুনাম।
গত একমাস বাখমুত দখল ঘিরেও বেশ তৎপর দলটি। হঠাৎই রুশ সরকারের ওপর চটলো ওয়াগনার। অভিযোগ রয়েছে, পর্যাপ্ত অস্ত্র-গোলাবারুদের প্রতিশ্রুতি দিয়েও সহায়তা করছে না প্রশাসন। বিশ্লেষকরা বলছেন, তাতে উভয়পক্ষের ফাটল স্পষ্ট হয়ে পড়লো।
এ নিয়ে সিরোকিয়ুস বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ব্রায়ান টেইলর বলেন, অতীতের কোনো ভিডিওতে প্রিগোঝিনকে এতোটা উত্তেজিত দেখা যায়নি। সরাসরি রুশ প্রশাসনকে গালিগালাজ করছিলেন তিনি। বলেছেন, মস্কোয় বিলাসবহুল জীবনযাপন করছে পুতিনের মন্ত্রীরা। আর ফ্রন্টলাইনে শত্রুদের খাবারে পরিণত হচ্ছে স্বেচ্ছাসেবী যোদ্ধারা। এখানেই পার্থক্যটা স্পষ্ট। রুশ প্রশাসনের সাথে অদৃশ্য গণ্ডগোলটা এবার এসে পড়লো সর্বসম্মুখে।
যমুনা টেলিভিশনের সবশেষ আপডেট পেতে Google News ফিড Follow করুন।
অনেকের অভিমত, সুযোগ পেয়ে পুতিন সরকারকে ব্ল্যাকমেইল করছেন দলের প্রতিষ্ঠাতা প্রিগোঝিন। কারণ, দীর্ঘদিন নানা দাবি-দাওয়া রাখলেও পূরণ করছিল না প্রশাসন। পুতিনের অন্যতম মাথাব্যাথা হিসেবেও দলটিকে আখ্যা দিয়েছেন কেউ কেউ।
রাশিয়া বিশ্লেষক ক্যারোলিনা হির্ড বলছেন, শুরু থেকেই রাশিয়ার সরকারের সাথে দ্বন্দ্বের পথে হাঁটছে ওয়াগনার গ্রুপ। ১০ মে যোদ্ধা প্রত্যাহারের ঘোষণাও পুরোটা নাটক। প্রিগোঝিনের দাবি, বিপুল সমরাস্ত্র-গোলাবারুদ দেয়া হোক, নতুবা তারা বাখমুত ছাড়বে। কিন্তু, তারাই শুধু কোণঠাসা এবং হামলার শিকার, বিষয়টি তা নয়। মূলত, সরকারের মাথাব্যাথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে ওয়াগনার।
সিনিয়র গবেষক, রান্ড করপোরেশনের জ্যেষ্ঠ গবেষক দারা মাসিকট জানান, গেলো কয়েক সপ্তাহে বাখমুত পুরোপুরি দখলের কাছাকাছি পৌঁছে গেছে রুশ বিমান বাহিনী ও ওয়াগনার গ্রুপ। এটাকেই তুরুপের তাস হিসেবে ব্যবহার করছে ভাড়াটে সেনাদলটি। প্রিগোঝিন একপ্রকার ব্ল্যাকমেইল করছে পুতিন সরকারকে। কারণ, যুদ্ধে তাদের সামরিক সরঞ্জাম ক্ষয় হয়ে এসেছে। সরকারের অস্ত্রাগার থেকে সেগুলো পুনরায় মজুদ করতে পারলে তাদেরই লাভ।
বিবিসির এক অনুসন্ধান বলছে, চেচনিয়ায় যুদ্ধ করা এক রুশ সেনা কর্মকর্তা দিমিত্রি উটকিন ছিলেন দলটির প্রতিষ্ঠাতা। যা কৌশলে হাতিয়ে নেন এককালে পুতিনের রাঁধুনী হিসেবে পরিচিত ইয়েভগেনি প্রিগোঝিন। বর্তমানে যোদ্ধা সংখ্যা ৫০ হাজার। যাদের মাত্র পাঁচ হাজারই সাবেক সৈন্য। বাকিরা, কারাবন্দি রুশ নাগরিক।
এসজেড/
Leave a reply