ব্যাকহ্যান্ড স্লোয়ার, নিখুঁত ইয়র্কার, মাথা ঠান্ডা রেখে চাপ সামলানো এবং ম্যাচের পরিস্থিতি নিরীক্ষণ, প্রতিনিয়ত টিম ম্যানেজমেন্টের আস্থার প্রতিদান দিয়ে যাচ্ছেন হাসান মাহমুদ। আয়ারল্যান্ডের সাথে সিরিজ জয়ের ম্যাচে শেষ ওভারের ১০ রানের সমীকরণে যেভাবে আটকে দিয়েছেন প্রতিপক্ষকে, ঠিক তেমনিভাবে নতুন বলে দুই দিকের সুইংয়েও নজর কেড়েছেন ক্রিকেট বিশ্লেষকদের। আসন্ন ওয়ানডে বিশ্বকাপে টাইগারদের অন্যতম বড় অস্ত্র হতে যাচ্ছেন এই ‘লক্ষ্মীপুর এক্সপ্রেস’।
হাসান মাহমুদের জন্য শেষ ওভারের চ্যালেঞ্জ ছিল ১০ রানের। পিচে তখন ২০০’র বেশি স্ট্রাইক রেটে ব্যাট করা ব্যাটার মার্ক অ্যাডায়ার। ব্যাটের মাঝ ব্লেডে পাওয়া বলগুলোকে অনায়াসে খেলা অ্যাডায়ারকে প্রথম বলটাই হাসান দিলেন ব্যাক হ্যান্ড স্লোয়ার। আড়াআড়ি গিয়ে প্যাডল করতে চাওয়া অ্যাডায়ার ব্যাট চালিয়ে ফেললেন আগেই। ফলাফল, বোল্ড মার্ক অ্যাডায়ার।
আপাতদৃষ্টিতে ব্যাপারটা সহজ মনে হলেও কার্যক্ষেত্রে তা মোটেও সহজ না। ক্রস সিমে ধরা বলটা কব্জি ঘুরিয়ে ব্যাকহ্যান্ড স্লোয়ার করতে গেলে আঙুলের একটু ছোঁয়ায় নিখুঁত নাও হতে পারতো। কিন্তু হাসানের বোধহয় নিজের ওপর আত্মবিশ্বাসে ছিল না কোনো ঘাটতি। দ্বিতীয় বলটিও ব্যাকহ্যান্ড স্লোয়ার করলেন এই পেসার। এখানেও ব্যাটারকে টাইমিং করতে হয়েছে খুব কষ্ট করে।
তৃতীয় বলটি ব্যাক হ্যান্ড স্লোয়ারে ওয়াইড ইয়র্কার করলেন হাসান মাহমুদ। থার্ডম্যান ভেতরে ছিল, তার হাতেই ধরা পড়লেন ম্যাকব্রায়ান। এখানেও হাসানের সাহসের তারিফ করতে হবে। প্রথমত, ব্যাকহ্যান্ড স্লোয়ারকে দারুণভাবে কার্যকর করতে পারা। আর দ্বিতীয়ত, থার্ডম্যান ভেতরে থাকা অবস্থাতেও ওয়াইড ইয়র্কারের ঝুঁকি নেয়া।
৩টি বল ব্যাকহ্যান্ড স্লোয়ার করার পর ব্যাপারটা ব্যাটারের জন্য একটু অনুমেয় হয়ে যায়। তাই এবার হাসান করলেন সিম আপ পেস অন ডেলিভারি। সব থেকে আকর্ষণীয় ব্যাপার ছিল, ঠিক জায়গায় ইয়র্কার ফেলতে পারা। ৫ম ও ৬ষ্ঠ বল দু’টিই ছিল ইয়র্কার। বিশেষ করে ৬ষ্ঠ বলটি ছিল ব্যাটারের পা লক্ষ্য করে। ডেথ বোলিংয়ে পরিপক্বতার দারুণ এক নিদর্শনই এদিন দেখালেন হাসান মাহমুদ।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নিজের পরিপক্বতার প্রমাণ দিয়ে চলেছেন হাসান মাহমুদ। নতুন বলে নিজের কার্যকারিতার প্রমাণ এর আগেই দিয়েছেন তিনি। এবার ডেথ ওভারেও নিজের আত্মবিশ্বাস ও পরিকল্পনার সঠিক বাস্তবায়নের প্রমাণ দিয়ে টিম ম্যানেজমেন্টের আস্থার প্রতিদান দিচ্ছেন এই ‘লক্ষ্মীপুর এক্সপ্রেস’।
/এসএইচ
Leave a reply