নিকোলা বারেল্লা ফেটে পড়েছেন কান্নায়। রোমেলু লুকাকুর দুই তর্জনী নির্দেশ করছে স্বর্গ! সিমোনে ইনজাঘির দৃষ্টিতে অবিশ্বাস ও মুক্তি। কোনো ভুল হয়নি এবার। বায়ার্ন মিউনিখ ও বার্সেলোনার সাথে একই গ্রুপে থাকার পরও ইউরোপে সেরার লড়াইয়ে ফাইনালে এখন ইন্টার মিলান। চ্যাম্পিয়নস লিগের সেমিফাইনালের দ্বিতীয় লেগে নগর প্রতিদ্বন্দ্বী এসি মিলানকে একমাত্র গোলে হারিয়ে দুই লেগ মিলিয়ে ৩-০ গোলের অগ্রগামিতা নিয়ে ফাইনালে উঠে গেছে ইন্টার। নেরাজ্জুরিদের ঐতিহাসিক রাত আরও একবার প্রত্যক্ষ করলো, নিজেকে এসি মিলানের ভয়ঙ্করতম দুঃস্বপ্নে পরিণত করেছেন ইন্টার অধিনায়ক লাউতারো মার্তিনেজ। একমাত্র গোলটির পর দর্শক গ্যালারি গিয়ে এই আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ডের উদযাপনের ছবি ইন্টার রেখে দিতে পারে তাদের হল অব ফেইমে; ক্যাপশন দিতে পারে, মিলান ডার্বি লেজেন্ড! গোল ডটকমের খবর।
মিলান ডার্বিতে পাদপ্রদীপের আলোয় আরও একবার আসার জন্য এমন কিছুই করতে হতো লাউতারোকে। গত সপ্তাহের প্রথম লেগে এই ইন্টার ফরোয়ার্ডকে নিষ্ক্রিয় রাখার পরীক্ষায় বেশ ভালোই করেছিল এসি মিলান। কিন্তু মিলান যখন বিভক্ত হয়ে যায় দুই ভাগে, প্রতিবারই যেন কিছু জানান দেয়ার বাকি থাকে এই আর্জেন্টাইনের। ২০১৯ সালের মার্চে মিলান ডার্বিতে অভিষেকের পর রোজোনেরিদের বিপক্ষে তার চেয়ে বেশি গোল করেনি কেউই। এসি মিলানের বিরুদ্ধে ১৩ বারের দেখায় এ নিয়ে ৮ গোল করলেন লাউতারো মার্তিনেজ। শেষটি এলো শেষ বাঁশি বাজার ১৬ মিনিট আগে। এতে শেষ হয়ে গেলো এসি মিলানের চ্যাম্পিয়নস লিগ স্বপ্ন। সত্যি বলতে, গোলকিপিং খুব ভালো হয়নি সে যাত্রা। এসি মিলানের গোলবার সামলানোয় মাইক মাইনান সাধারণত যেসব দারুণ পারফরমেন্স দিয়ে থাকেন, এবার হয়ে গেলো বিচ্যুতি। ডান হাত দিয়ে লাউতারোর বাঁ পায়ের শট রুখতে পারলেন না মাইনান। নিকটপ্রান্তের পোস্ট ঘেঁষে বল জড়ালো জালে।
সে সব খেয়াল করতে যেন বয়েই গেছে ইন্টারের নাম্বার টেনের! মিলান ডার্বির কিংবদন্তি হিসেবে লাউতারো মার্তিনেজের মর্যাদা ততক্ষণেই উঠে গেছে বিশেষ স্থানে। ইন্টারের দর্শক গ্যালারিতে লাউতারোর উদযাপনের আলোড়ন সৃষ্টিকারী দৃশ্য দ্বারাও ভালোভাবেই সংরক্ষিত হয়ে গেছে সে মর্যাদা। আর লাউতারোর এই গোলে অ্যাসিস্ট করে ‘লুলা’ জুটির রেনেসাঁর সম্ভাবনা আবারও জাগিয়ে তুলেছেন রোমেলু লুকাকু।
গত শনিবার সাসুলোর বিরুদ্ধে জোড়া গোলের পরও বেঞ্চে বসে থাকতে হয়েছিল দীর্ঘদেহী এই বেলজিয়ান স্ট্রাইকারকে। লাউতারোর সাথে আক্রমণভাগের দায়িত্বে ছিলেন এডেন জেকো। প্রথম লেগে জেকো দিয়েছিলেন তার উপর আস্থার প্রতিদান। তবে, বেঞ্চ থেকে মাঠে নেমে ফল নির্ধারণী মুহূর্ত সৃষ্টির কারিগর হিসেবে নিজেকে আবারও চিনিয়েছেন লুকাকু। মাথা ঠান্ডা রেখে লাউতারোকে খুঁজে বের করে তার পায়ে বল বাড়িয়েছেন এই বেলজিয়ান। তারপর লাউতারোর জোরালো শটেই ম্যাচ পুরোপুরিই শেষ করে ফেলে ইন্টার। ২০২১ সালে ইন্টারের সিরি আ’ জয়ের অন্যতম নায়ক এই ‘লুলা’ জুটিকে যদি চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনালে প্রথম একাদশে নামান সিমোনে ইনজাঘি, তাহলে অবাক হওয়ার খুব বেশি কিছু থাকবে না। লাউতারোকে সেরা ফর্মে রাখার তাড়না যে ইন্টার কোচের না থেকেই পারে না!
আরও পড়ুন: হাল্যান্ড গোল করবে নাকি ডি ব্রুইনা, এসব চিন্তা মাথায় ভিড় করলেও শান্ত আছি: আনচেলত্তি
/এম ই
Leave a reply