পঞ্চগড়ে বিএসএফের গুলিতে আহত শ্রমিকের মৃত্যু

|

পঞ্চগড় প্রতিনিধি:

পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলার ভজনপুর ইউনিয়নের করতোয়া নদীতে নুড়ি পাথর সংগ্রহ করতে গিয়ে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের গুলিতে আহত পাথর শ্রমিক পলাশ হোসেন (৩৫) মৃত্যুবরণ করেছেন। রোববার রাতে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

নিহতের চাচা ও সাবেক ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। আহত পলাশ হোসেন উপজেলার ভজনপুর ইউনিয়নের বগুলাহাটি গ্রামের আব্দুর রহমানের ছেলে।

এর আগে রোববার (২১ মে) দুপুরে ভজনপুর ইউনিয়নের বাংলাদেশ ভারত সীমান্তের মেইন পিলার ৭৩৯ এর ১ আর ও ২ আর এর মাঝামাঝি বগুলাহাটি এলাকায় বাংলাদেশের অভ্যন্তরে করতোয়া নদীতে নুরী পাথর উত্তোলনের সময় বিএসএফের গুলিতে আহত হন পলাশ। পরে স্থানীয়দের সহযোগিতায় পরিবারের সদস্যরা তাকে গুরুতর আহত অবস্থায় পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে নিয়ে আসে। পরে জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন।

এ ঘটনার পরপরই বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)’র পক্ষ থেকে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের এমন কর্মকাণ্ডের কড়া প্রতিবাদ জানিয়ে কমান্ডার পর্যায়ে পতাকা বৈঠকের আহ্বান জানানো হয়।

বিজিবি ও স্থানীয়দের সূত্রে জানা যায়, রোববার দুপুরে বগুলাহাটি এলাকায় বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের করতোয়া নদীতে স্থানীয় কয়েকজন পাথর শ্রমিকের সাথে নুড়ি পাথর সংগ্রহ করছিলেন পলাশ। এ সময় ভারতের গ্রীনগছ ১৯৫ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের টহল টিম নদীর পাড়ে থাকা চা বাগান থেকে পাথর শ্রমিকদের উদ্দেশে গুলি ছোড়েন। এতে একটি গুলি পলাশের পেটের বাঁ পাশে লাগলে নদীর পানিতে পড়ে যান তিনি। এ সময় বাকি পাথর শ্রমিকেরা ভয়ে পালিয়ে যায়। পরে কয়েকজন শ্রমিক একটু পরে তাকে উদ্ধার করে পরিবারের সদস্যদের সহায়তায় পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের নিয়ে যায়।

পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. রাকিবুল হাসান বলেন, আহত পাথর শ্রমিকের পেটের বাঁ পাশে একটি ক্ষত পাওয়া গেছে। ধারণা করা হচ্ছে তার পেটে গুলি লেগেছে। ভুঁড়ির কিছু অংশ সেই ক্ষত দিয়ে বের হয়ে এসেছে।

তেতুঁলিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু সাইদ চৌধুরী পাথর শ্রমিক পলাশের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, নিহতের মরদেহ রংপুরেই ময়নাতদন্ত করা হবে জেনেছি। পরে আইনি প্রক্রিয়া শেষে তার মরদেহ পরিবারের সদস্যদের কাছে হস্তান্তর করা হবে।

পঞ্চগড় ১৮ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফট্যানেন্ট কর্নেল যুবায়েদ হাসান বলেন, সীমান্তে আমরা সর্বদা সতর্ক অবস্থানে থাকি। অনবরত আমাদের টহল থাকে। তবে ঘটনাস্থল বাংলাদেশ ভারত সীমান্তের করতোয়া নদীতে। যার এক অংশ বাংলাদেশে অপর অংশ ভারতে। তবে ঘটনার পরপরই আমরা ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের এমন কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদ জানিয়ে কমান্ডার পর্যায়ে পতাকা বৈঠকের আহ্বান জানিয়েছি।

ইউএইচ/


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply