রিমন রহমান:
সরকারের সামনে ঝুলছে কঠিন ঋণ শর্ত। বাড়াতে হবে অভ্যন্তরীণ আয়। এজন্য বাজেটে কর হারে পরিবর্তন আনতে চায় সরকার। যা উসকে দেবে জীবনযাত্রার ব্যয়। ব্যক্তির করমুক্ত আয়সীমা বাড়ছে। করযোগ্য না হলেও দিতে হতে পারে ন্যূনতম কর। জমি-ফ্ল্যাট কেনার ক্ষেত্রে বাড়তে পারে ব্যয়। স্মার্টফোন, বিদেশি টিভি-ফ্রিজ, এলপিজি সিলিন্ডারেও খরচ বাড়তে পারে। একাধিক গাড়ি ও ভ্রমণে বাড়তে পারে ব্যয়।
বৈশ্বিক সংকট ও অভ্যন্তরীণ অর্থনৈতিক নানান চাপের মধ্যে এবারের বাজেট আসছে। আইএমএফ এর ঋণ শর্ত পালনেই কর কাঠামোতে পরিবর্তন আনতে চায় সরকার। কিন্তু বিশ্লেষকদের মত, আইএমএফ এর শর্ত অনুযায়ী রাজস্ব আদায় সম্ভব নয়।
যমুনা টেলিভিশনের সবশেষ আপডেট পেতে Google News ফিড Follow করুন।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সাবেক চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন বলেন, মানুষ চায়, আমি এত টাকা কর দিচ্ছি, কী সেবা পাচ্ছি, তা। শুধু এনবিআর নয়, সব সরকারি প্রতিষ্ঠানকেই ভালো সেবা দিতে হবে। আর আইএমএফের শর্ত অনুযায়ী ৬০-৬৫ হাজার কোটি টাকা অতিরিক্ত কর আদায় করা সম্ভব নয়।
নতুন অর্থবছরে ভ্রমণ করে পরিবর্তন আনার প্রস্তাব করতে পারেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। কোমল পানীয় পান করার ক্ষেত্রে বাড়তে পারে ব্যয়। নতুন অর্থবছরে বাড়তে পারে নির্মাণ সামগ্রীর খরচও। এক্ষেত্রে বসতে পারে ভ্যাট। প্লাস্টিক ও অ্যালুমিনিয়াম তৈরির পণ্যের দামও বাড়ানোর ঘোষণা দিতে পারেন অর্থমন্ত্রী। বিদেশ থেকে স্বর্ণ আনার ক্ষেত্রেও ব্যয় করতে হতে পারে বেশি অর্থ। চেইন শপ থেকে পণ্য কিনতে হলে ১৫ শতাংশের জায়গায় দিতে হতে পারে বাড়তি ৫ ভাগ ভ্যাট। একাধিক গাড়ি আছে এমন করদাতাদের দ্বিতীয় গাড়ি নিবন্ধন ও নবায়নে দিতে হতে পারে বাড়তি কার্বন কর।
নাসির উদ্দিন বলেন, কর অব্যহতি একেবারে কমানো যাবে না। পর্যায়ক্রমে রিভিউ করে কমাতে হবে। আর সারাজীবন তো কর অব্যহতিও দেয়া যাবে না।
আগামী বাজেটে তামাক পণ্যের বিক্রি পর্যায়ে বাড়তে পারে ৩ ভাগ টার্নওভার ট্যাক্স। স্তরভিত্তিক বাড়বে সম্পূরক শুল্ক। মূল্যস্ফীতি বিবেচনা করে ব্যক্তি করমুক্ত আয়সীমা কিছুটা বাড়ানোর ঘোষণা আসতে পারে। তাজা ও শুকনা খেজুর আমদানিতে শুল্ক বসাতে পারেন অর্থমন্ত্রী। কলম উৎপাদনে এতো দিন ভ্যাট ছিল না। তবে, নতুন করে ভ্যাট আরোপ করা হতে পারে। বাড়তে পারে চশমার ফ্রেম ও সানগ্লাসের দাম।
তবে, স্থানীয় উৎপাদনে শুল্ক মওকুফ করায় কমতে পারে ক্যানসার, ডায়বেটিকস, যক্ষা, ম্যালেরিয়া ওষুধের দাম। প্রশ্ন হচ্ছে বিশাল রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্য কীভাবে পূরণ করবে সরকার?
পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, আমদানি কম হচ্ছে, শুল্ক কম পাচ্ছি। বড় বড় করপোরেশনগুলো ওই হারে ব্যবসা করতে পারছে না। করপোরেট ট্যাক্সও কমে যাচ্ছে। ভ্যাটও সেভাবে পাচ্ছি না, মূদ্রস্ফীতির চাপ বাড়ছে। এনবিআরকে আমরা লক্ষ্য বেশি দিই, যাতে তাদের ওপর চাপ থাকে।
এদিকে, কমতে পারে দেশে উৎপাদিত খেলনা, কমপিউটার, কৃষিযন্ত্র ও বিভিন্ন ধরণের ইলেট্রনিক্স যন্ত্রের দাম। স্থিতিশীল থাকতে পারে, দেশে উৎপাদিত ডায়াপার, স্যানিটারি ন্যাপকিন, ফ্রিজের মূল্য।
/এমএন
Leave a reply