পঙ্গপালের আক্রমণে চরম ভোগান্তিতে আফগানিস্তানের কৃষকরা। দেশটিতে সম্প্রতি ভয়াবহ আকারে বেড়েছে পতঙ্গটির তাণ্ডব। মাত্র কয়েক দিনেই নষ্ট হয়ে গেছে হাজার হাজার একর জমির ফসল। ফলে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটিতে তীব্র খাদ্য সঙ্কটের আশঙ্কা বিশ্লেষকদের। তারা বলছেন, খরা ও অনাবৃষ্টির কারণে এবার পঙ্গপালের প্রকোপ ভয়াবহ। পর্যাপ্ত কীটনাশকের অভাবে পঙ্গপাল দমন করতে পারছেন না কৃষকরা। খবর দ্য গার্ডিয়ানের।
কীটনাশক নেই তাই কাপড় বিছিয়েই পঙ্গপাল ধরছেন আফগান কৃষকরা। পঙ্গপালের আক্রমণে দিশেহারা কৃষকরা সনাতন এ পদ্ধতির মাধ্যমে চেষ্টা করছেন পতঙ্গ দমনের। ধরার পর সাথেসাথে মাটি চাপা দেয়া হচ্ছে পঙ্গপাল- এমন দৃশ্য এখন হরহামেশাই দেখা যাচ্ছে আফগানিস্তানের গ্রামগুলোতে। কোনো উপায় না পেয়ে এভাবেই ফসল বাঁচানোর চেষ্টা করছেন কৃষকরা। কিন্তু, স্থানীয় এসব পদ্ধতির ব্যবহারে মোটেও কমছে না পঙ্গপাল। লাখলাখ পঙ্গপাল দলবেঁধে হানা দিয়ে উজাড় করে দিয়েছে মাঠের ফসল।
মোহাম্মদ নাজিবুল্লাহ নামের এক আফগান কৃষক দ্য গার্ডিয়ানকে বলেন, ভয়ানক পরিস্থিতি এখানে। এরমধ্যেই আমার ৬০ হেক্টর জমিতে লাগানো গম নষ্ট হয়ে গেছে। কবে এদের থেকে মুক্তি মিলবে জানা নেই। বাকি ফসলগুলো টিকবে বলে মনে হয় না।দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া না গেলে কষ্টের ফসল পুরোটাই চলে যাবে ওদের পেটে। এ অবস্থা চলতে থাকলে সারাবছর কীভাবে চলবো?
প্রায় দুই দশক পরে আবারও দেশটিতে বেড়েছে পঙ্গপালের উপদ্রব। কীটনাশকসহ প্রয়োজনীয় উপকরণ থাকায় সে সময় খুব সহজে নিয়ন্ত্রন করা গিয়েছিলো এসব পতঙ্গকে। কিন্তু, গেলো দুবছরে দেশব্যাপী কীটনাশকের অভাবে এবার কোনোভাবেই কমানো যাচ্ছে না পঙ্গপালের বিস্তার। পরিস্থিতে নিয়ন্ত্রণে সহযোগিতা করছে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও)।
এ প্রসঙ্গে জাতিসংঘ খাদ্য ও কৃষি সংস্থার আফগানিস্তান বিষয়ক প্রতিনিধি রিচার্ড ট্রেঞ্চার্ড বলেন, আমরা চেষ্টা করছি কৃষকদের সহযোগিতা করতে। টাকা দিয়ে স্থানীয়ভাবে পঙ্গপাল ধরতে উদ্বুদ্ধ করছি বাসিন্দাদের। এটা ফসলের সাথে নষ্ট করছে চারণভূমিও।
প্রসঙ্গত, ক্ষতিকর এ পতঙ্গ দমন করা না গেলে খুব দ্রুত অঞ্চলটিতে প্রায় ১০০ গুন বেড়ে যেতে পারে এর সংখ্যা। যা আফগানিস্তানসহ পার্শ্ববর্তী অঞ্চলগুলোতে তীব্র খাদ্য সংকট তৈরি করবে বলে আশঙ্কা বিশেষজ্ঞদের।
/এসএইচ
Leave a reply