বিদ্যুৎ সংকট কাটতে আরও ২-৩ মাস লাগতে পারে: তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী

|

মাহফুজ মিশু:

গরমের সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে লোডশেডিং। তাপমাত্রা না কমলে খুব শিগগিরই বিদ্যুৎ পরিস্থিতি উন্নতিরও সম্ভাবনা দেখছেন না নীতিনির্ধারকরা। প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী বলেছেন, চলমান বিদ্যুৎ জ্বালানি সংকট কাটতে আরও অন্তত ২/৩ মাস সময় লাগতে পারে। এই সংকটের পেছনে সরকারের কোনো গাফিলতি নেই দাবি করে সবাইকে ধৈর্য্য ধরার অনুরোধ করেছেন তিনি।

রাজধানীর রায় সাহেব বাজার মোড়ে রাত ১২ টায় দেখা গেলো, বেশিরভাগ দোকানপাট বন্ধ। ভ্রাম্যমাণ যে দু’একটি দোকান খোলা, সেগুলোও চলছে কুপির আলোয়। মধ্যরাতেও ঘুম নেই অনেকের। কারণ, ফ্যান চলে না বাসায়। তীব্র গরমে জমছে না গলির চায়ের আড্ডা। ব্যবসা বাণিজ্যের মতো জরুরি কাজে চার্জার লাইট ভরসা কারও কারও। তাদের কথা উঠে আসলো প্রাত্যাহিক সংকটের চিত্র।

একজন বললেন, রাত ২টায় বিদ্যুৎ চলে যায়, সকাল ৭টায়ও যায়। আর প্রতি ঘণ্টায় বিদ্যুৎ চলে যাওয়া তো আছেই! আইপিএস কেনার সামর্থ্য সবার নেই বলেও আক্ষেপ করেন এক ব্যক্তি। একজন মা বললেন, পানি পাই না, কারেন্ট পাই না। ছেলেপেলে লেখাপড়া করতে পারে না। রাস্তায় ঘুরে সময় কাটায়।

রাজধানীর মতো তীব্র দাবদাহে পুড়ছে পুরো দেশ। ঢাকার বাইরে জেলা শহরগুলোতে লোডশেডিং আরও বেশি। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, অনেক এলাকায় একটানা বিদ্যুৎ থাকে না আড়াই-তিন ঘণ্টা। সব মিলিয়ে দিনে লোডশেডিং ৬/৭ ঘণ্টার কম না। আধ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকার পর লোডশেডিং হয় আড়াই ঘণ্টা! রাতে ঘুমোতে পারছে না শিশুরা, অসুস্থ হয়ে যাচ্ছে।

সরকারি হিসেবে, দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা ২৩ হাজার মেগাওয়াটের বেশি। এর মধ্যে কেবল জ্বালানি সংকটেই বন্ধ সাড়ে ৪ হাজার মেগাওয়াট ক্ষমতার কেন্দ্র। কারিগরি ত্রুটির কারণে রক্ষণাবেক্ষণে আছে আরও আড়াই হাজার মেগাওয়াট। ভোর-সন্ধ্যা কিংবা মধ্যরাত, তীব্র গরমে সবসময়ই চাহিদা ঊর্ধ্বমুখী; গড়ে সাড়ে ১৫ হাজার মেগাওয়াট। যদিও নানা সংকটে ১৩ হাজার মেগাওয়াটের বেশি উৎপাদন করতে পারছে না সরকার।

প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী।

প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী বলেন, জ্বালানির দাম বহুগুণ বেড়ে যাওয়ায় প্রথমে একটি অভিঘাত আসে আমাদের ফরেন এক্সচেঞ্জ রিজার্ভের উপর। সেটা কাটিয়ে উঠতে আমাদের সময় লাগছে। এ অবস্থা থেকে উত্তরণের সময়ই এমন গরম পড়লো। আমরা ভাগ্যবান যে, এই গরম রমজানের সময় ছিল না।

ব্যাখ্যা যাই হোক, সাধারণ মানুষের চাওয়া লোডশেডিং থেকে মুক্তি। কবে নাগাদ তা মিলবে, এমন প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টা বলেন, এটা খুব একটা সান্ত্বনার ব্যাপার না। তবে আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি। এই ধাপে বিভিন্ন যায়গায় এলসি খোলা হয়েছে। আমি মনে করি, দুই-তিন মাসের মধ্যেই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসবে।

বিদ্যমান বাস্তবতায় জনগণের কাছে দুঃখপ্রকাশ করে তাদের সাশ্রয়ী হওয়ার আর ধৈর্য্য ধরার আহ্বান জাানিয়েছে বিদ্যুৎ বিভাগ।

/এম ই


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply