মারিয়া হোসেন:
দীর্ঘদিন ধরে আটকে রয়েছে বলিউডের একাধিক বিগ বাজেট সিনেমা। একদিকে স্টুডিও থেকে প্রয়োজনীয় বাজেট জোগাড় করতে হিমশিম খাচ্ছেন প্রযোজকরা, অন্যদিকে কোন তারকায় বিনিয়োগ করলে রিটার্ন তা আসবে সেটি নিয়েও আছে অনিশ্চিয়তা। সম্প্রতি আমির, সালমান কিংবা অক্ষয় কুমারেরর মতো সুপারস্টারদের সিনেমা ফ্লপ করায় কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে প্রযোজকদের।
করোনা পরবর্তী সময়ে হাতে গোনা হিট সিনেমা উপহার দিয়েছে বলিউড। দক্ষিণী ইন্ডাস্ট্রির সাঁড়াশি চাপে রীতিমত প্রাণ ওষ্ঠাগত বি-টাউন নির্মাতাদের। একদিকে প্যান ইন্ডিয়া মার্কেট দখলে মরিয়া দক্ষিণ, অন্যদিকে দর্শক হারাচ্ছে হিন্দি সিনেমা।
সম্প্রতি, ভারতের সবচেয়ে বড় বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান ডিজনি ইন্ডিয়া জানিয়েছে, ‘ব্রহ্মাস্ত্র’ ফ্র্যাঞ্চাইজির পরবর্তী সিনেমায় আগ্রহী নয় তারা। বক্স অফিসে হিটের তকমা পাওয়া সিনেমাও বিনিয়োগ হারাচ্ছে। ডিজনি সরে যাওয়ার পর ধার্মা প্রোডাকশনের সিনেমাটি নিয়ে আগ্রহ দেখিয়েছে আম্বানির জিও স্টুডিও। তবে ‘ব্রহ্মাস্ত্র টু’ সিনেমায় লিড তারকা কে হবেন সেটি এখনও চূড়ান্ত নয়। ফলে মাঝপথেই আটকে আছে এ প্রোজেক্ট! এদিকে, পরিচালক অয়ন মুখার্জী এখন ব্যস্ত যশ রাজের নতুন সিনেমা নিয়ে।
মিথোলজিক্যাল ড্রামা ‘দ্য ইমমর্টাল অশ্বথামা’র কাজও আপতত আটকে আছে। শুরুতে জানা গিয়েছিল, ভিকি কৌশলকে দেখা যাবে মুখ্য ভূমিকায়। তবে প্রযোজক রনি স্ক্রুওয়ালা সিনেমা থেকে সরে দাঁড়ালে দায়িত্ব নেয় জিও স্টুডিও। ভিকি কৌশলের মতো অভিনেতার ওপর কয়েক’শো কোটি রুপি বিনিয়োগে রাজি নয় এ সংস্থা। তাই পরিচালকের আদিত্য ধরের অমত সত্ত্বেও ‘বাদ’ পড়েন ভিকি। চলছে নতুন নায়কের খোঁজ।
অন্যদিকে, করন জোহরের ‘ড্রিম প্রোজেক্ট’ ‘তাখত’ এর নেই কোনো আপটেড। করোনা মহামারির আগে ঘোষণা হয়েছিল এ সিনেমার তারকাবহুল কাস্টের। কিন্তু হঠাৎ ঘোষণা ছাড়াই বন্ধ হয়ে যায় এ সিনেমার প্রি-প্রোডাকশনের কাজ।
তবে শুধু এঅ দুই বিগ বাজেট প্রোজেক্টই নয়, হৃতিক রোশনের ‘কৃষ’ ফ্রাঞ্চাইজির নতুন সিনেমাও আটকে আছে দীর্ঘদিন। ২০১৩ সালে মুক্তি পেয়েছিল ‘কৃষ থ্রি’। ১০ বছর পরেও ফ্লোরে যায়নি সুপারহিরো হৃতিকের সিনেমা।
এদিকে, লার্জ স্কেলের সিনেমা তৈরির আগে প্রযোজকরা চাইছেন বক্স অফিসের গভীরতা আরও খানিকটা মাপতে। বড় বড় সুপারস্টারদের পারিশ্রমিক নিয়েও চলছে আলোচনা। বলিউডের অনেক প্রযোজকই বলছেন, রিস্ক নিতে ভয় পাচ্ছেন সবাই, কারণ মার্কেটে মন্দা চলছে।
অন্যদিকে, চলচ্চিত্র বোদ্ধারা বলছেন- বিগ বাজেট সিনেমা তৈরির জন্য ভারতে আজও সুপারস্টারদের ওপর ভরসা করা ছাড়া উপায় নেই। হলিউডের মতো ফ্র্যাঞ্চাইজির নামে সিনেমা এদেশে চলবে না। আজকাল তারকারাও সচেতন বক্স অফিস নাম্বার নিয়ে, পাশাপাশি স্টুডিওগুলোও সতর্ক কোন তারকার ওপর বিনিয়োগ করলে লাভ হবে সে ব্যাপারে।
সালমন খানের ‘কিসি কা ভাই কিসি কা জান’ মাত্র ১১০ কোটিতেই আটকে গেছে। রণবীর কাপুরের ‘তু ঝুটি ম্যায় মাক্কার’ ১৫০ কোটি আয় করেছে। ‘ব্রহ্মাস্ত্র’র মতো বিগ স্কেলের সিনেমার আয় মাত্র ২৫৭ কোটি। সিনেমার গুণগতমান সঠিক না হলে আজকের দিনে যে দর্শক টিকিট কেটে হলে যাবে না, তা বলছেন ডিস্ট্রিবিউটররাও। ট্রেড অ্যানালিস্ট গিরীশ জোহরের মতে, ‘সতর্ক ঘণ্টা তো বেজে গেছে ইন্ডাস্ট্রিতে। বক্স অফিস টেস্টে পাশ করতে বলিউডকে ভাবতে হবে নতুন করে।
/এসএইচ
Leave a reply