রাখাইনের বহু গ্রামের প্রবেশপথে দেখা মিলবে অদ্ভুত এক ধরনের সাইনবোর্ডের। তাতে বার্মিজ ভাষায় বড় বড় অক্ষরে লেখা, ‘মুসলমানমুক্ত এলাকা’। সাথে থাকে আরও নানা মুসলিমবিদ্বেষী কথাবার্তা। অবশ্য শুধু রাখাইন নয়, মিয়ানমারের অন্যান্য এলাকায়ও এমন সাইবোর্ডের দেখা মিলে প্রায়ই।
মানবাধিকার সংগঠন বার্মা হিউম্যান রাইটস নেটওয়ার্ক (বিএইচআরএন) এ রকম ২১টি সাইনবোর্ডের ছবি ও তথ্য সংগ্রহ করেছে। সংস্থাটির সম্প্রতি প্রকাশিত এক রিপোর্টে এ নিয়ে বিস্তারিত তুলে ধরা হয়েছে। একই সাথে বলা হয়েছে, এ ধরনের মুসলিমবিদ্বেষী সাইনবোর্ডের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছেই।
অবাক করা বিষয় হল, এসব বিদ্বেষমূলক সাইনবোর্ড ঝুলানোর জন্য স্থানীয় সরকারি কর্তৃপক্ষ অনুমোদন দিয়ে থাকে! মিয়ানমারের শান প্রদেশের ইয়াসাউক শহরে থেকে বিএইচআরএন’র তোলা একটি সাইনবোর্ডে লেখা রয়েছে, ‘মুসলমানমুক্ত এলাকা’। তার নিচে তিনটি পয়েন্টে লেখা: ১. এই এলাকায় রাতে মুসলমানদের থাকার অনুমতি নেই। ২. মুসলমানদের সম্পত্তি বিক্রি বা কেনার অনুমতি নেই। কোনো মুসলমানকে বিয়ের অনুমতি নেই। এই বোর্ডটি লাগিয়েছে ‘দেশপ্রেমী যুবসংঘ’ নামে স্থানীয় একটি সংগঠন।
এ ধরনের নানা মুসলিমবিদ্বেষী সাইনবোর্ডের পাশাপাশি রয়েছে বৌদ্ধ ধর্ম ও জাতিকে ‘সবার চেয়ে সেরা’ হিসেবে তুলে ধরে বিভিন্ন বক্তব্য।
বিএইচআরএন’র নির্বাহী পরিচালক কিয়াও উইন বলেন, এ ধরনের বোর্ড লাগানোর ক্ষেত্রে সরকারি কর্তৃপক্ষের প্রত্যক্ষ সহযোগিতা রয়েছে।
বিগত কয়েক দশক ধরে মিয়ানমারে রাষ্ট্রীয় মদদে মুসলিম বিদ্বেষী মনোভাব বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই বিদ্বেষী মনোভাবের সবচেয়ে বেশি শিকার হচ্ছেন রাখাইন প্রদেশের রোহিঙ্গা মুসলিমরা। সেখানে সেনাবাহিনী জাতিগত নিধন চালাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে জাতিসংঘ। সর্বশেষ গত ২৫ অগাস্ট থেকে রোহিঙ্গাদের ওপর হত্যাযজ্ঞ শুরুর পর পাঁচ লাখের বেশি রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে।
/কিউএস
Leave a reply