মারিয়া হোসেন:
ভারতীয় সেনাবাহিনী ও তাদের লড়াই নিয়ে বহু সিনেমা নির্মিত হয়েছে ভারতীয় সিনে ইন্ডাস্ট্রিতে। জে পি দত্ত’র ‘বর্ডার’ থেকে হালের সিদ্ধার্থ মালহোত্রা অভিনীত ‘শের শাহ’। এসব সিনেমায় বড় পর্দায় উঠে এসেছে সীমান্ত রক্ষা থেকে শত্রুর মোকাবিলা পর্যন্ত ভারতীয় সেনাবাহিনীর বিভিন্ন রণকৌশল। কিন্তু, বলিউডে এমন অনেক অভিনেতাই কাজ করেছেন বা এখনও করেন, যারা এককালে কর্মরত ছিলেন সেনাবাহিনীতে।
‘কুচ তো লোগ কাহেঙ্গে’ থেকে ‘মেহেন্দি লাগাকে রাখনা’ পর্যন্ত একের পর এক হিট গান বলিউড ভক্তদের উপহার দিয়েছেন বলিউডের প্রখ্যাত গীতিকার আনন্দ বক্সী । রুপালি দুনিয়ায় পা রাখার আগে তিনি ছিলেন ভারতীয় প্রতিরক্ষা বাহিনীতে। সেনাবাহিনীর বিভিন্ন অনুষ্ঠান উপলক্ষে গানও লিখতেন তিন। পাশাপাশি বলিউডেও চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিলেন। প্রথম সুযোগ পান ১৯৫৮ সালে বৃজ মোহনের সিনেমা ‘ভালা আদমি’তে। এরপরের ঘটনা পরিণত হয়েছে ইতিহাসে। কিংবদন্তি রাজেশ খান্না থেকে শুরু করে হালের হার্টথ্রব হৃতিক রোশনের লিপেও শোনা গেছে তার লেখা গান। চার বার ফিল্মফেয়ার অ্যাওয়ার্ডও পেয়েছেন তিনি।
তার সুরের মূর্ছনায় মেতে ওঠে কাশ্মির থেকে কন্যাকুমারী। পেয়েছেন জাতীয় পুরস্কার থেকে শুরু করে অ্যাকাডেমি অ্যাওয়ার্ড পর্যন্ত বিভিন্ন পুরস্কার। দাবি করা হয়, এ আর রহমানও ছিলেন প্রতিরক্ষা বাহিনীতে! বিমান বাহিনীর পাইলট ছিলেন তিনি। যদিও তার স্বপ্ন ছিল সুর তৈরি করা। পরে চাকরি ছেড়ে দেন রহমান। সিনেমার গান তৈরিতে বাবা আর কে শেখরকে সাহায্য করতে গিয়েই আজকের গানের জাদুকরে হয়ে ওঠা তার।
মহাভারতে শকুনির চরিত্রে অভিনয় করে সাড়া ফেলে দিয়েছিলেন গুফি পেন্টাল। সেই পেন্টালও এককালে ছিলেন ভারতীয় সেনাবাহিনীতে। এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানিয়েছিলেন, ১৯৬২ সালে ভারত-চীন যুদ্ধের সময় সেনাবাহিনীতে যোগ দেন তিনি। পরে চাকরি ছেড়ে বলিউডে আসেন ভাগ্যের অন্বেষণে।
‘পেজ থ্রি’ সিনেমার বিক্রমজিৎ কানওয়ারপালকে মনে পড়ে? ‘মার্ডার ২’, ‘রকেট সিং’, ‘যাব তাক হ্যায় জান’ এর মতো সিনেমায়ও অভিনয় করেন তিনি। সেই বিক্রমজিৎও ছিলেন সেনাবাহিনীতে। তার বাবাও ছিলেন সেনাবাহিনীতে। শোনা যায়, সেনাবাহিনী থেকে অবসর নিয়ে অভিনয়ে দিকে ঝোঁকেন বিক্রমজিৎ।
‘ছিচোড়ে’ সিনেমায় মন কেড়েছিলেন রূদ্রাশিস মজুমদার। এ বছর তার আলোচিত সিনেমা ‘জার্সি’। যেখানে মুখ্য ভূমিকায় ছিলেন শহীদ কাপুর। অভিনয়ে ক্যারিয়ার শুরুর আগে রূদ্রাশিস ছিলেন সেনাবাহিনীর মেজর। পরে চাকরি ছেড়ে ঝুঁকেছেন অভিনয়ে।
দক্ষিণী সিনেমার জনপ্রিয় অভিনেতা মোহনলালও ছিলেন ভারতীয় সেনাবাহিনীতে। লে. কর্নেল পর্যন্ত প্রমোশনও পেয়েছিলেন তিনি। ২০০৮ সালে তাকে ভারতীয় সেনায় সম্মানিক পদে নিয়োগ করা হয়। তার আগে, ভারতের আর কোনো অভিনেতা এ খেতাব পাননি।
প্রসঙ্গত, মুম্বাইকে বলা হয় ‘মায়ানগরী’। আর এ মায়ানগরীতে বেশিরভাগ মানুষই যান ভাগ্য অন্বেষণে। বিশেষ করে সিনে দুনিয়ার অন্যতম বড় ইন্ডাস্ট্রি থাকার কারণে অনেকেরই স্বপ্ন থাকে বলিউড অভিনেতা হওয়ার। পর্দায় যারা সীমান্ত রক্ষা থেকে শত্রুর মোকাবিলা করেন, তাদের সম্মানে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে কখনও সম্মানিক পদ দেয়া হয়, কেউ বা বাস্তবে সীমান্তে রক্ষা করতে করতেই রিল লাইফের সৈনিক হতে পা রাখেন রুপালি জগতে।
/এসএইচ
Leave a reply