বাংলাদেশে শ্রম আইনের সংশোধন চায় যুক্তরাষ্ট্র

|

আলমগীর স্বপন:

তৈরি পোশাকসহ কলকারখানায় ট্রেড ইউনিয়ন করার সুযোগ বৃদ্ধিতে বাংলাদেশে শ্রম আইনের সংশোধন চায় যুক্তরাষ্ট্র। সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর বিনিয়োগ উপদেষ্টা ও আইনমন্ত্রীর সাথে বৈঠকে মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস এ বিষয়টি জানিয়েছেন।

আইনমন্ত্রী বলেন, বিনিয়োগ ও রফতানির স্বার্থে শ্রম আইন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের তিন প্রস্তাবের দুটি এরই মধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। এই সংশোধনী প্রস্তাব দীর্ঘদিনের। নির্বাচন সুষ্ঠু করতে এর কোনো যোগসূত্র নেই বলেও জানান তিনি।

ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজ- বিলসের তথ্য অনুযায়ী, সব খাত মিলিয়ে বাংলাদেশে শ্রমিকের সংখ্যা প্রায় ৬ কোটি ৩৫ লাখ। ৪২টি খাতে কাজ করছেন তারা। এর মধ্যে তৈরি পোশাক শিল্পে শ্রমিকদের সংখ্যা প্রায় ৩২ লাখ।

বাংলাদেশের পোশাক খাতের বড় ক্রেতা যুক্তরাষ্ট্র। তাই কলকারখানাসহ এ খাতের শ্রমিকদের ট্রেড ইউনিয়ন করার অধিকার সহজ করার ওপর জোর দিচ্ছে দেশটি। এ নিয়ে ৬ জুন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা এবং আইনমন্ত্রীর সাথে বৈঠক করেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস। বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে শ্রম আইনের তিনটি ধারার সংশোধনী প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা হয়। এর মধ্যে রয়েছে ট্রেড ইউনিয়নের রেজিস্ট্রেশন সহজ করা এবং বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলেও শ্রম আইন কার্যকর করা। এ দুটি প্রস্তাব সরকার এরইমধ্যে কার্যকর করেছে। তবে মতভেদ আছে শ্রম আইনের ১৭৯ ধারার সংশোধন নিয়ে।


যমুনা টেলিভিশনের সবশেষ আপডেট পেতে Google News ফিড Follow করুন।

বিদ্যমান আইন অনুযায়ী, কোনো পোশাক কারখানায় শ্রমিক সংগঠন করতে হলে ৩০ শতাংশ শ্রমিকের সম্মতি থাকতে হবে। যা জানাতে হবে অনলাইনে। এ ক্ষেত্রে আইএলও’র মতো যুক্তরাষ্ট্রেরও প্রস্তাব, শ্রমিকের সম্মতির হার ১০ ভাগ করার।

আইনমন্ত্রী বলেন, ট্রেড ইউনিয়ন বান্ধব সংশোধন, আমরা সেগুলি দেখছি। মালিকদের সাথে আলাপ করতে হবে আবার শ্রমিকদের সাথেও আলাপ করতে হবে। আমরা আলাপ করবো। প্রথম কথা হচ্ছে বিনিয়োগকারীদের যাতে কোনো সমস্যা না হয়, এক্সপোর্টে যেন কোনো সমস্যা না হয় আর তৃতীয় কথা হচ্ছে আমাদের গার্মেন্টস ইন্ডাস্ট্রি ও অন্যান্য ইন্ডাস্ট্রি যেগুলো ইউরোপ-আমেরিকায় পণ্য পাঠায়, সেই গুলিতে যাতে কোনো প্রতিবন্ধকতা তৈরি না হয়।

এক্ষেত্রে বাংলাদেশকে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেয়ার তাগিদ দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। তা না হলে ইউএস ডেভেলপমেন্ট ফিনান্স কর্পোরেশন-ডিএফসির সহায়তা পাওয়া কঠিন হবে। এর সঙ্গে জড়িত ইউরোপীয় ইউনিয়নেরও জিএসপি প্লাস সুবিধার বিষয়টিও।

এ বিষয়ে আইনমন্ত্রী বলেন, তারা যে প্রস্তাব দিলো সেটাতে যদি বাংলাদেশ একটা সিদ্ধান্তে আসতে পারে তাহলে বাংলাদেশ ফান্ডিংটা পেতে পারে। এই ফান্ডিংটা তারা সরকারকে অল্প সুদে দিবে প্রাইভেট সেক্টরকে ঋণ দেয়ার জন্য।

আগামী জাতীয় নির্বাচন সুষ্ঠু করার শর্তে ভিসা নীতি ঘোষণার পর শ্রম আইন সংশোধনের প্রস্তাব নতুন কোনো চাপ কিনা- এমন প্রশ্নে আইনমন্ত্রী বলেন, এ নিয়ে আলোচনা দীর্ঘদিনের। তা নির্বাচনী কোনো বিষয় নয়। সব কিছু বিবেচনা করেই শ্রম আইন সংশোধনের উদ্যোগ নেবে সরকার। এর কোনো সময়সীমা নেই বলেও জানান তিনি।

ইউএইচ/


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply