রাজশাহী ব্যুরো:
রাজশাহী সিটি নির্বাচনে বিএনপি’র ঠিক উল্টোপথে হাঁটছে তাদের দীর্ঘদিনের মিত্র জামায়াত। বিএনপি যখন কাউন্সিলর প্রার্থী হওয়ায় নেতাদের বহিষ্কার করেছে, তখন জামায়াত তাদের তৃণমূলের শক্তি ব্যয় করছে কাউন্সিলর প্রার্থী নেতাকর্মীদের জন্য। এ স্থানীয় নির্বাচনকে ‘টেস্ট কেস’ উল্লেখ করে জামায়াতপন্থী প্রার্থীরা বলছেন, ভোটকেন্দ্রে নিজ সমর্থকদের সর্বাধিক উপস্থিতি নিশ্চিত করতে চান তারা। দলীয় সমর্থন না থাকলেও বহিস্কৃত বিএনপিপন্থী প্রার্থীরাও কাজ করছেন একই লক্ষ্যে।
দল থেকে তারা বারবার পেয়েছেন সতর্কবার্তা। তারপরেও রাজশাহী সিটি নির্বাচনের মাঠে ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদের লড়াইয়ে থেকে গেছেন ১৬ জন বিএনপি নেতাকর্মী। কদিন আগেই দল থেকে আজীবনের জন্য বহিস্কার করা হয়েছে তাদের সবাইকে। স্থানীয় নির্বাচনে দলের এমন সিদ্ধান্তে মোটেও খুশি নন বহিস্কৃতরা।
এ প্রসঙ্গে কাউন্সিলর প্রার্থী ও সাবেক যুবদল নেতা বেলাল আহম্মেদ বলেন, জনগণের সাথে আছি। জনগণের অনুরোধেই নির্বাচনে দাঁড়িয়েছি।
বিএনপিপন্থী এসব প্রার্থীর দাবি, ওয়ার্ড কাউন্সিলর নির্বাচনে দলের বাইরেও ব্যক্তিগত ভোটব্যাংক কাজ করে। এসব ভোটারের ভোট নিজেদের পক্ষে নিশ্চিত করতে চান তারা।
আরেক কাউন্সিলর প্রার্থী ও সাবেক বিএনপি নেতা মির্জা রিপন বলেন, দল ভোট দেয়ার বাধা দিতে পারে না। মেয়র বা কাউন্সিলর প্রার্থীদেরকে হয়তো দল থেকে বহিষ্কার করতে পারে, সেটা ঠিক আছে। কিন্তু, ভোট দানে বাধা দিতে পারবে না।
এদিকে, এ নির্বাচনে জামায়াতের বিভিন্ন স্তরের ৯ জন নেতাকর্মী কাউন্সিলর প্রার্থী হয়েছেন। কেন্দ্র থেকে তাদের ওপর কোনো চাপ নেই। বরং এ নির্বাচনকে টেস্ট কেস হিসেবে দেখতে চান তারা।
এ ব্যাপারে জামায়াত নেতা ও কাউন্সিলর প্রার্থী আবদুস সামাদ বলেন, নির্বাচন কমিশন ও কমিশনার বারবার স্বীকার করেছেন যে তারা নিরপেক্ষ নির্বাচন করবেন। আমরা তাদের অবস্থাটা দেখতে চাই। তাদের অবস্থা দেখার জন্যই আমরা নির্বাচন করছি।
নির্বাচনের পরিবেশ নিয়েও সন্তুষ্টি তাদের কণ্ঠে। বলছেন, নিজেদের পক্ষের ভোটারদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করাই এখন তাদের প্রধান লক্ষ্য।
আরেক জামায়াত নেতা ও কাউন্সিলর প্রার্থী আফজাল হোসেন এ ব্যাপারে বলেন, নির্বাচনের আমেজ আছে। ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে যাওয়ার জন্য যে পরিবেশ প্রয়োজন তা মোটামুটি নিশ্চিতে আমরা সক্ষম হয়েছি।
দলগতভাবে বিএনপি নেই। ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থীও সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে কাউন্সিলর প্রার্থীদের এই তৎপরতা নির্বাচনে সার্বিকভাবে ভিন্ন মতের ভোটার উপস্থিতি বাড়াতে সহায়তা করবে বলে মনে করছে আওয়ামী লীগ।
সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন এ প্রসঙ্গে বলেন, আমরা তাদের প্রচার-প্রচারণা বা কর্মীদের কোনভাবে বাধা দিইনি। আমরা বাধা দেবোও না। নির্বাচন উৎসবমুখর ও শান্তিপূর্ণ রাখবো, এটা আমাদের ওয়াদা।
প্রসঙ্গত, আগামী ২১ জুনের নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগের প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে রয়েছেন জাতীয় পার্টি ও জাকের পার্টির মেয়র প্রার্থী।
/এসএইচ
Leave a reply