কুমিল্লা ব্যুরো:
ফাঁসির আদেশ কার্যকর করার মাত্র কয়েক ঘণ্টা আগে প্রাণভিক্ষা পাওয়া কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলার বেগমাবাদ গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা রাখাল চন্দ্র নাহা প্রায় ২৪ বছর জেলে থাকার পর অবশেষে মুক্তি পেয়েছেন। রোববার (২ জুলাই) দুপুরে কুমিল্লা কারাগার থেকে মুক্তি পান তিনি।
জানা যায়, ১৯৯৯ সালে করা একটি হত্যা মামলায় রাখাল চন্দ্র নাহাকে আসামি করা হয়। ওই মামলায় ২০০৮ সালে তার ফাঁসির আদেশ হয়। কিন্তু বীর মুক্তিযোদ্ধা রাখাল চন্দ্র নাহার পরিবারে আর্থিকভাবে অসচ্ছল হওয়ায় তার স্ত্রী ও সন্তানেরা মামলা পরিচালনায় ব্যর্থ হওয়ার ফলে পর্যায়ক্রমে সব আদালতে তার ফাঁসির দণ্ড বহাল থাকে। পরে ফাঁসির রায় কার্যকর করার বিষয়ে তার বাড়িতে কারা কর্তৃপক্ষ চিঠি পাঠালে ২০০৮ সালের ৩ এপ্রিল চিঠিটি পায় তার পরিবার। ওই বছর ৭ এপ্রিল রাত ১১টায় রায় কার্যকর করার সময় নির্ধারণ করা হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়।
যমুনা টেলিভিশনের সবশেষ আপডেট পেতে Google News ফিড Follow করুন।
এই খবরটি ছড়িয়ে পড়লে ওই সময় ‘আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান’ নামের সংগঠন তৎকালীন জরুরি অবস্থা ভঙ্গ করে এ মুক্তিযোদ্ধার ফাঁসির দণ্ড রহিত করার দাবিতে সারাদেশে মানববন্ধনসহ নানা কর্মসূচি পালন করে। পরে বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে ‘মুক্তিযোদ্ধার ফাঁসি কাল’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হলে তৎকালীন সেনাপ্রধান জেনারেল মইন ইউ আহমেদের দৃষ্টিগোচর হয়। তিনি রাষ্ট্রপতিকে এই মুক্তিযোদ্ধার ফাঁসির দণ্ড মওকুফ করার অনুরোধ জানান। এর পরিপ্রেক্ষিতে ফাঁসির আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হওয়ার মাত্র কয়েক ঘণ্টা আগে তা রহিত করা হয়। পরে সাজা কমিয়ে তাকে যাবজ্জীবন করা হয়।
কারাগারে থাকার সময় রাখাল চন্দ্র নাহা ভালো কাজ করায় ৩০ বছর কারাদণ্ড থেকে প্রায় ছয় বছর দণ্ড মওকুফ করে কারা কর্তৃপক্ষ। অবশেষে দীর্ঘ ২৪ বছরের কারাজীবনের অবসান হলো এ বীর মুক্তিযোদ্ধার। মুক্তি পেয়ে রাখাল চন্দ্র নাহা সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান।
ইউএইচ/
Leave a reply