স্টাফ করেসপনডেন্ট, রংপুর
রংপুর মহানগর ও মেডিকেল কলেজ ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্ত এবং জেলা ছাত্রলীগের কমিটির কার্যক্রম স্থগিত ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটি।
মঙ্গলবার (৪ জুলাই) কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের এক যৌথ বিবৃতিতে এ সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়। রংপুর বিভাগীয় সমাবেশের এক দিন পরই এ ঘটনা ঘটলো।
বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান স্বাক্ষরিত তিনটি পৃথক বিবৃতিতে জানানো হয়, ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের জরুরি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মেয়াদ উত্তীর্ন হওয়ায় ছাত্রলীগের রংপুর মহানগর ও রংপুর মেডিকেল কলেজ শাখার কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হলো।
এছাড়া, রংপুর জেলা কমিটির কার্যক্রমও স্থগিত ঘোষণা করা হয় বিবৃতিতে।
ছাত্রলীগের ঘনিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ঈদের আগে পঞ্চগড়ে নিজের বাড়িতে যান ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি সাদ্দাম হোসেন। ওইদিন সৈয়দপুর বিমানবন্দরে রংপুর বিভাগের প্রতিটি জেলা ছাত্রলীগ কমিটির পক্ষ থেকে তাকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানানো হয়। তাকে ঘিরে সাজসাজ রব পড়ে যায় রংপুরসহ পুরো বিভাগজুড়ে। রোববার (২ জুলাই) রংপুর শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে রংপুর বিভাগের ছাত্রলীগের দ্বায়িত্বে থাকা প্রায় তিনশতাধিক নেতাকে নিয়ে বিভাগীয় ছাত্র সমাবেশ করেন কেন্দ্রীয় সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান। সেখানে সাংগঠনিকসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আলোচনা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় সোমবার (৩ জুলাই) টাউন হল মাঠে রংপুর জেলা ছাত্রলীগের ঈদ পুনর্মিলনী ও ছাত্র সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সাদ্দাম হোসেন।
সেখানে সাদ্দাম বলেন, ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের প্রস্তুত হতে হবে। আমাদের বাগাড়ম্বর ত্যাগ করতে হবে, গ্রুপিংয়ের রাজনীতি, ভাইয়ের রাজনীতি বন্ধ করতে হবে। সংগঠনের নাম করে অনৈতিক সুবিধা নেয়ার রাজনীতি বন্ধ করতে হবে। ছাত্রলীগকে আদর্শিকভাবে প্রস্তুত করতে হবে।’
এরপর, সোমবার রংপুর থেকে ঢাকায় ফেরেন সাদ্দাম। পরের দিন মঙ্গলবার ( ৪ জুলাই) ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কমিটি বিলুপ্ত ও স্থগিতের ঘোষণা দেয়া হয়।
ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদ সূত্রে আরও জানা গেছে, পারে আগামী কয়েকদিনের মধ্যে রংপুর বিভাগের অনেক জেলা, কলেজ ছাত্রলীগের কমিটি স্থগিত এবং বিলুপ্ত ঘোষণা হতে। সেক্ষেত্রে সংগঠনের নাম ভাঙ্গিয়ে অনৈতিক কর্মকাণ্ড, প্রভাব বিস্তার এবং বিভিন্ন অপকর্মের সাথে জড়িদের কপাল পুড়বে। এছাড়া, আসন্ন নির্বাচনকে সামনে রেখে মাঠের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় প্রস্তুত থাকতে সক্ষম এবং পরিচ্ছন্ন ইমেজের নেতাদের নিয়ে ছাত্রলীগের কমিটি গঠনে গুরুত্ব দিয়েছে কেন্দ্রীয় সংসদ। সেক্ষেত্রে গোয়েন্দা রিপোর্টের পাশাপাশি দলীয় রিপোর্টও বিবেচনায় আসবে।
এ বিষয়ে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন জানান, যেসব কমিটির মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে, সেসব কমিটি নতুন করে গঠনের জন্য আগের কমিটিগুলো বিলুপ্ত করা হচ্ছে। আর, যেসব কমিটি সাংগঠনিক তৎপরতায় পিছিয়ে আছে বা বিভিন্ন অভিযোগ আছে, সেগুলো কেন্দ্রীয় সংসদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী স্থগিত করা হচ্ছে। ছাত্রলীগকে আরও শক্তিশালী করার জন্যই এসব করা হচ্ছে। কারণ, আগামী জাতীয় নির্বাচন ছাত্রলীগের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। আমরা বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্মের স্বপ্ন-প্রত্যাশা পূরণ করতে চাই। আমাদের নিজেদের স্বার্থে, বাংলাদেশের মানুষের আত্মমর্যাদা রক্ষার স্বার্থে, উন্নয়ন অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখার স্বার্থে আমাদের নিজেদের স্বপ্ন ও আমাদের বাবা-মায়ের স্বপ্ন পূরণ করার জন্য শেখ হাসিনাকে আবারও নির্বাচিত করার কোনো বিকল্প নেই। আমরা বারবার বলার চেস্টা করছি, শেখ হাসিনাকেই আবারও নির্বাচিত করতে হবে। আমাদের একটিই রায়, সেটি হচ্ছে বঙ্গবন্ধু কন্যা দেশরত্ন শেখ হাসিনা। সেই সংগ্রামকে যদি সাফল্য মণ্ডিত করতে চাই, তাহলে সংগঠনকে সুসংগঠিত করতে হবে। সুশৃংখল করতে হবে। ছাত্রদের মন জয় করার রাজনীতি করতে হবে। ছাত্রলীগ সেটিই করছে।
/এসএইচ
Leave a reply