বরগুনায় ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে সাংবাদিককে হয়রানির অভিযোগ

|

অভিযুক্ত ইউপি চেয়ারম্যান আখতারুজ্জামান খান বাদল।

বরগুনা প্রতিনিধি:

একের পর এক বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের জন্ম দিয়ে আলোচনায় বরগুনার চাওড়া ইউপি চেয়ারম্যান আখতারুজ্জামান খান বাদল। এবার আমতলী উপজেলায় সংবাদকর্মীদের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণের জেরে আবারও আলোচনায় তিনি। সম্প্রতি, এলজিইডি অফিসে সবার উপস্থিতিতে স্থানীয় সংবাদকর্মীদের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণের অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে। তবে এটাই প্রথমবার না। এর আগেও সাংবাদিক নির্যাতনের অভিযোগ আছে এ উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতার বিরুদ্ধে। এর প্রেক্ষিতে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার ঘোষণা দিয়েছে জেলা প্রেসক্লাব।

বিতর্কে মেতে ওঠা এই ব্যক্তি কোনো সরকারি কর্তা নন, বরং তিনি একজন জনপ্রতিনিধি। অথচ, তিনি উপজেলা এলজিইডি অফিসের চেয়ার দখল করে দিব্যি বসে আছেন। একইসাথে বাধা দিচ্ছেন সংবাদ সংগ্রহেও।

নিজস্ব ভবন না থাকায় বরগুনার আমতলী উপজেলা পরিষদে দাপ্তরিক কাজে বিঘ্ন এবং সেবা প্রার্থীদের ভোগান্তি নিয়ে গত সোমবার (৩ জুন) সংবাদ সংগ্রহ করতে যান একটি বেসরকারি টেলিভশনের স্থানীয় প্রতিনিধি। এ সময় উপজেলা এলজিইডি অফিসে ওই রিপোর্টারের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন চাওড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আখতারুজ্জামান খান বাদল।

সময় টেলিভিশনের বরগুনা প্রতিনিধি সাইফুল ইসলাম মিরাজ বলেন, বাদল চেয়ারম্যান আমাকে অহেতুক হুমকিধমকি ও গালমন্দ দিতে শুরু করেন। ঘটনার আকস্মিকতায় আমি হতভম্ব হয়ে যাই। আমি তার সাথে যতোটা বিনয়ী আচরণ করেছি উনি ঠিক ততোটাই রূঢ় আচরণ করেছেন।

একজন জনপ্রতিনিধি কীভাবে সরকারি অফিসের চেয়ার দখলে নিলেন? জানতে চাইলে ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী আমতলীর এলজিইডি কমিউনিটি অর্গানাইজার শ্রীদাম চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, তারা মূলত এসেছিলেন ইউএনও স্যারের সাথে দেখা করতে। স্যার ছিলেন না বলে তারা আমাদের রুমে এসে বসেন।

অথচ, দাপ্তরিক অনুমতি নিয়েই পেশাগত দায়িত্ব পালন করছিলেন সংবাদকর্মীরা। এ প্রসঙ্গে আমতলী প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. জামাল হোসাইন বলেন, আমাদের ভবনটা পুরানো, আমাদের স্থানের সংকট আছে, বসার মতো পর্যাপ্ত জায়গা নেই ইত্যাদি বিষয় নিয়েই উনি রিপোর্ট করতে চাইছিলেন। আমাদের অফিস সহকারীরা তাকে সব ধরনের সাহায্য করেছে।

এর আগেও, বাদল চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে সাংবাদিকদের সাথে অশোভন আচরণ ও কাজে বাধা দেয়ার অভিযোগ আছে। এসব বিষয়ে জানতে গেলে ক্যামেরায় কথা বলতে রাজি হননি অভিযুক্ত জনপ্রতিনিধি।

এদিকে, এ ব্যাপারে লিখিত অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা।

এ প্রসঙ্গে আমতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ আশরাফুল আলম বলেন, যেকোনো বৈধ কাজে বাধা বা হুমকি দেয়া তো অবশ্যই অপরাধ। আমি এ ব্যাপারে মৌখিক অভিযোগ পেয়েছি। লিখিত অভিযোগ পেলে অবশ্যই এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এ ঘটনায় আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছে স্থানীয় প্রেসক্লাব। বরগুনা প্রেসক্লাবের সভাপতি সঞ্জীব দাস এ প্রসঙ্গে বলেন, মঙ্গঅবার (৫ জুলাই) প্রেস ক্লাবে আয়োজিত জরুরি মিটিংয়ে সাংবাদিকদের কাজে বাধা দেয়ার কারণে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

প্রসঙ্গত, গত বছরের ৩০ আগস্ট আমতলী আওয়ামী লীগের কাউন্সিলের সংবাদ সংগ্রহের সময় সাংবাদিকদের লাঞ্ছিত করেছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আখতারুজ্জামান খান বাদল।

/এসএইচ


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply