Site icon Jamuna Television

রেকর্ড ছাড়িয়েছে ডেঙ্গুর ভয়াবহতা, আশঙ্কাজনকভাবে বাড়ছে মৃত্যুর হার

আহমেদ রেজা:

ডেঙ্গুতে মৃত্যুর ভয়াবহতা ছাড়িয়ে গেছে গত কয়েক বছরের সব রেকর্ড। হাসপাতালে বাড়ছে ডেঙ্গু রোগীদের ভিড়। ডেঙ্গুতে আক্রান্তের পাশাপাশি ক্রমেই বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যাও। ডেঙ্গুতে মৃত্যুর হারও ছাড়িয়ে গেছে অন্য সব বছরের রেকর্ড। বিশেষ করে রাজধানীতে এর ভয়াবহতা পৌঁছেছে চরম মাত্রায়। তাই দায়িত্বরতদের মশক নিধনে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন সাধারণ মানুষ।

রাজধানীর মহাখালীর আজতপাড়া এলাকার বাসিন্দা মনিরুজ্জামান ময়নার একমাত্র সন্তান তাহসিন। ঈদের আগের দিন ২৮ জুন থেকেই জ্বরে আক্রান্ত হয় সে। এরপর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে দেখা যায়, ডেঙ্গু আক্রান্ত তাহসিন, রক্তে প্লাটিলেট কমে যাচ্ছে তার। চিকিৎসার এক পর্যায়ে তাকে আইসিইউতেও রাখা হয়। তবে সবকিছু ব্যর্থ করে দিয়ে চিরবিদায় নেয় ৮ বছরের এই শিশু। মাত্র কয়েক দিনের মধ্যে জীবনের এমন পরিণতি ডেঙ্গুর থাবায়। মাস সাতেক আগে এখানেই ডেঙ্গুতে প্রাণ গেছে তাহসিনের ১০ বছর বয়সী খালাতো বোনের।

রাজধানীর ভিকারুননিসা নূন স্কুলের অ্যান্ড কলেজের একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী ইলমা জাহানও পরপারে পাড়ি জমিয়েছেন ডেঙ্গুর প্রকোপে। ঢাকার মালিবাগে বাস করা ইকবাল কবির ও মাকসুদা আক্তার জাহান দম্পতি তাদের একমাত্র সন্তান হারিয়ে এখন নিঃস্ব। প্রাণোচ্ছল ইলমাকে হারানোর ব্যাথা কি করে বইবেন তারা?

নিহত ইলমার বাবা-মার আহাজারি, একমাত্র আদরের সন্তানকে হারিয়ে এখন তাদের চোখে শুধুই শূন্যতা। বাকিটা জীবন কীভাবে কাটাবেন সে কথা ভেবেই শোকে বিহ্বল তারা।

রাজধানীর বাইরেও ছড়িয়েছে ডেঙ্গুর প্রকোপ। বৃহস্পতিবার ঢাকায় যেখানে রোগী ভর্তি হয়েছে ৪৩৩ জন, সেখানে ঢাকার বাইরে এই সংখ্যা ২২৮ জন। সব মিলিয়ে গত সাত মাসে দেশে ডেঙ্গুতে মৃত্যু হয়েছে ৬৪ জনের। তাদেরই একজন চট্টগ্রামের শ্রাবন্তি সরকার। মেয়ের শেষকৃত্য শেষ করে ডেঙ্গু আক্রান্ত ছেলেকে নিয়ে হাসপাতালের বারান্দায় হতভাগ্য পরিবারটি।

ডেঙ্গুতে নিহত শ্রাবন্তী সরকারের বাবা বিশ্বজিৎ সরকার বলেন, ডেঙ্গু ধরা পড়ার পর কিছুই খাচ্ছিলো না শ্রাবন্তি। কিন্তু হঠাৎ তার পেট ফুলে যায়। এর কিছুদিন পরই সব শেষ। এখন ছেলেও ডেঙ্গু আক্রান্ত। সব মিলিয়ে দিশেহারা পরিবারটি।

সামান্য কীট থেকে ছড়াচ্ছে যে প্রাণঘাতী ডেঙ্গু, সেই মশা নিধনে নানা উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে প্রশাসনের তরফে। বলা হচ্ছে, সচেতন হতে হবে বাসিন্দাদেরও। কিন্তু যারা এরই মধ্যে স্বজন হারিয়েছেন, তাদের ক্ষোভের অন্ত নেই। তারা মনে করছেন সরকার ও নগরপ্রশানের উদ্যোগ যথেষ্ট নয়।

এসজেড/

Exit mobile version