রোহিঙ্গাদের নিয়ে মিয়ানমার সেনাবাহিনী সত্য প্রকাশের নামে মিথ্যাচার করেছে। ১৯৪০ এর দশকে জাতিগত সংঘাত নিয়ে দেশটির সেনাবাহিনী গত জুলাইয়ে ‘মিয়ানমার পলিটিকস অ্যান্ড দ্য তাতমাদাও: পার্ট ওয়ান’ নামে একটি বই বের করে। ওই বইতে তিনটি ভুয়া ছবি ব্যবহার করা হয়েছে। বার্তা সংস্থা রয়টার্স ছবিগুলো পরীক্ষা করে জানিয়েছে, ভুয়া ছবির দুইটি তোলা বাংলাদেশ এবং তানজানিয়ায়।
প্রথম ছবিতে দেখা যায়, একজন লোক একটি নিড়ানি হাতে দুইটি লাশের পাশে দাঁড়িয়ে আছে। এই ছবির ক্যাপশনে বলা হয়েছে, স্থানীয় বৌদ্ধদের নির্মমভাবে হত্যা করেছে বাঙালিরা। তবে রয়টার্স জানিয়েছে, ছবিটি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় তোলা। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর হাতে দুই বাংলাদেশী নিহতের ওই ছবি তুলেছিলেন আনোয়ার হোসেন।
আরেকটি ছবিতে দেখা যায়, শত শত নারী-পুরুষ তাদের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়ে নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধান খুঁজছে। বইতে এই ছবির ক্যাপশনে লিখা হয়েছে, ব্রিটিশ শাসনের পর বাঙালিরা মিয়ানমারে প্রবেশ করছে। তবে অনুসন্ধানে জানা যায়, ছবিটি রুয়ান্ডায় সহিংসতার পর ১৯৯৬ সালে হুতু শরণার্থীদের দেশত্যাগের। এটি তুলেছিলেন মার্থা রিয়াল।
অপর ছবিতে দেখা যায়, একটি নৌকায় অনেক মানুষ ভেসে আছে। মিয়ানমার সেনাবাহিনী তাদের বইতে ছবিটি প্রকাশ করে ক্যাপশন দেয়, সমুদ্রপথে বাঙালিরা মিয়ানমারে প্রবেশ করছে। তবে জানা যায়, ছবিটি গেটি ইমেজের। সেখানে ২০১৫ সালে মিয়ানমারের নৌবাহিনীর জব্দ করা নৌকায় দেশান্তরের চেষ্টায় থাকা রোহিঙ্গাদের দেখা যাচ্ছে।
এসব ছবির বিষয়ে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। রয়র্টাসের বরাতে মিয়ানমারের তথ্য মন্ত্রণালয়ের স্থায়ী সচিব উ মায়ো মিন্ট মং জানান, ওই বই তিনি পড়ে দেখেননি। ইয়াঙ্গুনের প্রায় সব দোকানে বইটি পাওয়া গেলেও পাঠকের কাছে এর চাহিদা কম বলে জানা গেছে।
গত বছরের ২৫ আগস্ট নিরাপত্তা চৌকিতে হামলার অভিযোগে রোহিঙ্গাদের দমনে অভিযান শুরু করে দেশটির সেনাবাহিনী। নির্যাতন সহ্য করতে না পারে রোহিঙ্গারা সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে। এ ঘটনার পর বিশ্বব্যাপি সমালোচনার মুখে পড়ে মিয়ানমার।
যমুনা অনলাইন: এফএম
Leave a reply