ইউক্রেনকে বিতর্কিত ক্লাস্টার বোমা সরবরাহে যুক্তরাষ্ট্রের সিদ্ধান্ত নিয়ে তোলপাড় চলছে আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে। শতাধিক দেশে নিষিদ্ধ বিধ্বংসী গুচ্ছবোমা দেয়াকে ওয়াশিংটনের দ্বিচারিতা হিসেবে দেখছে মানবাধিকার সংগঠনগুলো। এমন পদক্ষেপ না নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তনিও গুতেরেস। তবে রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধজয় ও ইউক্রেনের জনগণের স্বার্থেই এ সিদ্ধান্ত বলে সাফাই গেয়েছে মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। খবর রয়টার্সের।
ইউক্রেনের জন্য বরাদ্দ যুক্তরাষ্ট্রের ৮শ’ মিলিয়ন ডলারের সামরিক সহায়তা প্যাকেজের আওতায় সবশেষ সংযোজন বিতর্কিত ক্লাস্টার বোমা। এরই মধ্যে মানিবাধিকার সংস্থাগুলোর সমালোচনার মুখে ওয়াশিংটনের এমন সিদ্ধান্ত।
মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বক্তব্য, মস্কোর বিরুদ্ধে রণক্ষেত্রে সাফল্যের লক্ষ্যেই পাঠানো হচ্ছে ক্লাস্টার বোমা। রাশিয়া আগে থেকেই বিতর্কিত অস্ত্র ব্যবহার করছে বলেও দাবি পেন্টাগনের। যুক্তরাষ্ট্রের সরবরাহকৃত গুচ্ছ বোমার তীব্রতা কম বলেও জানানো হয়। ইউক্রেনকে দেয়ার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের কাছে যেসব ক্লাস্টার বোমা মজুত আছে তা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ে তৈরি। ওয়াশিংটন বলছে, তাদের তুলনায় রাশিয়ার ক্লাস্টার বোমার মজুদ আরও বেশি।
ইউক্রেনের পক্ষে সাফাই গেয়ে পেন্টাগনের মুখপাত্র কলিন কাল বলেন, রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের শুরু থেকেই গুচ্ছ বোমা ব্যবহার করছে। বিপরীতে ইউক্রেনকে আইসিএম রাউন্ড দিলে সাফল্যের হার অনেক কম হবে। ইউক্রেনের সাথে আমরা ঝুঁকি কমানোর বিষয়ে আলোচনা করে নিয়েছি। তারা নিশ্চয়তা দিয়েছে, বেসামরিক অধ্যুষিত এলাকায় ব্যবহার করবে না।
জাতিসংঘ বলছে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ শুরুর পর উভয় দেশই ব্যবহার করেছে ক্লাস্টার বোমা। বিস্তৃত এলাকায় ছড়িয়ে যায় বলে বেসামরিকদের জন্য অনেক বেশি ক্ষতিকর বলে মনে করা হয় ক্লাস্টার বোমাকে। তাই সব দেশকেই এর ব্যবহার থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব।
ক্লাস্টার বোমা নিষিদ্ধ বিষয়ক এক সনদে স্বাক্ষর করেছে যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জার্মানিসহ ১২০টির বেশি দেশ। তবে যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, ইউক্রেন, ইসরায়েল, চীন, ভারত, পাকিস্তান, ব্রাজিলসহ অনেক দেশই মেনে নেয়নি এ সনদ।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ব্যাপক আকারে ব্যবহার হয়েছিল ক্লাস্টার বোমা। সবশেষ ২০০৩ থেকে ২০০৬ সালে ইরাকে এই অস্ত্র ব্যবহার করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
এটিএম/
Leave a reply