রাশিয়ার নাকের ডগায় অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ন্যাটোর শীর্ষ সম্মেলন

|

ছবি: রয়টার্স থেকে সংগৃহীত।

রাশিয়ার নাকের ডগায় অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে সামরিক জোট ন্যাটোর বার্ষিক শীর্ষ সম্মেলন। মঙ্গলবার (১১ জুলাই) ও বুধবার (১২ জুলাই) দু’দিনের আসরকে ঘিরে নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে ফেলা হয়েছে আয়োজক লিথুয়ানিয়াকে। খবর রয়টার্সের।

বাল্টিক দেশটিকে সহায়তায় এক হাজার সেনা পাঠিয়েছে জোটের ১৬ দেশ। মোতায়েন করেছে উন্নত আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা। বিশ্লেষকরা বলছেন, সামরিক জোটে ইউক্রেনের অন্তর্ভুক্তি ইস্যুই হতে যাচ্ছে এবারের সম্মেলনের মূল এজেন্ডা।

রাশিয়ার সীমান্ত থেকে লিথুয়ানিয়ার রাজধানী ভিলনিয়াসের দূরত্ব ২০০ কিলোমিটারেরও কম। আর মস্কোর মিত্র বেলারুশ সীমান্ত থেকে দূরত্ব মাত্র ৩২ কিলোমিটার। এ শহরেই বসছে সামরিক জোট ন্যাটোর বার্ষিক সম্মেলনের আসর। বাল্টিক দেশটির নিরাপত্তা পরিস্থিতি দেখে মনে হতে পারে রণক্ষেত্রের মহড়া। রীতিমতো সুরক্ষিত দুর্গে পরিণত হয়েছে ভিলনিয়াস।

কাঁটাতারে ঘেরা সীমান্তে তিনগুণ বাড়ানো হয়েছে সীমান্তরক্ষীর সংখ্যা। পুলিশ সদস্য পাঠিয়েছে লাটভিয়া ও পোল্যান্ড। ১২টি প্যাট্রিয়ট মিসাইল লঞ্চার মোতায়েন করেছে জার্মানি। ভিলনিয়াস বিমানবন্দর থেকে রাশিয়ার কালিনিনগ্রাদের দিকে তাক করা আটটি, আর দুটি বেলারুশের দিকে। শুক্রবার সকালেই মহড়া চালিয়ে ঝালিয়ে নেয়া হয় সক্ষমতা।

বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা-এনএএসএএমএস সরবরাহ করেছে স্পেন। হ-ইটজার পাঠিয়েছে ফ্রান্স। পোল্যান্ড ও জার্মানি থেকে এসেছে বিশেষ হেলিকপ্টার ও পরিচালনাকারী সদস্য।

লিথুয়ানিয়ার প্রেসিডেন্ট গিটানাস নসেদা বলেন, ৪০ দেশের নেতারা আসছেন। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনসহ জোটের সদস্য দেশগুলোর নেতারা। আকাশসীমাকে অরক্ষিত রাখা দায়িত্বজ্ঞানহীন কাজ হবে।

ট্রান্স-আটলান্টিক জোটের এ সম্মেলনে অংশ নেবেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান, জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শোলজ, ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাকরন ও ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাকের মতো নেতারা। যোগ দেবেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলদেমির জেলেনস্কিও। এরই মধ্যে ছোট বাল্টিক দেশটিতে জড়ো হচ্ছেন বিশ্বনেতারা।

ইউক্রেনের সদস্যপদ পাওয়ার রাস্তা তৈরি হবে এবারের ন্যাটো সম্মেলনের মূল এজেন্ডা। আসতে পারে কিয়েভের জন্য বড় সামরিক সহায়তার ঘোষণাও। এছাড়া সুইডেনের অন্তর্ভুক্তি নিয়ে তুরস্ককে আপত্তি তুলে নিতে সুপারিশ করবে বাকি সদস্য দেশগুলো।

ন্যাটোর মহাসচিব জেন্স স্টলটেনবার্গ বলেন, ৫০০ দিন ধরে ইউরোপের বুকে হত্যা ও ধ্বংসযজ্ঞ চালাচ্ছে মস্কো। ইউক্রেনকে ধ্বংস ও ন্যাটোকে বিভক্ত করতে চায় তারা। আমাদের সম্মেলন স্পষ্ট বার্তা দেবে, ন্যাটো সদস্যরা ঐক্যবদ্ধ। যতদিন প্রয়োজন ইউক্রেনের পাশে দাঁড়াতে হবে, সে বিষয়েও একমত নেতারা।

ন্যাটোয় অন্তর্ভুক্তি নিয়ে আশাবাদী ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলদেমির জেলেনস্কি। দাবি, জোটের যোগ্য সদস্য হতে প্রস্তুত তার দেশ। জেলেনস্কি বলেন, ন্যাটো সম্মেলনে একটি উপসংহারে আসতে মিত্রদের সাথে কাজ করছি। ইউরোপের সবচেয়ে শক্তিশালী সেনাবাহিনী নিয়ে জোটের সদস্যপদ নিয়ে এবারই সিদ্ধান্ত পাবো বলে আশা করি।

ন্যাটোর এবারের শীর্ষ সম্মেলনে প্রথমবারের মতো সদস্য দেশ হিসেবে অংশ নেবে ফিনল্যান্ড।

এএআর/


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply