আফগানিস্তানকে ৬ উইকেটে হারিয়ে সিরিজ জিতলো টাইগাররা

|

ফাইল ছবি

দুই ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে আফগানিস্তানকে ৬ উইকেটে হারিয়েছে বাংলাদেশ। এতেই আফগানিস্তানের বিপক্ষে প্রথমবারের মতো টি-টোয়েন্টি সিরিজ জিতলো টাইগাররা। বৃষ্টির কারণে এই ম্যাচের দৈর্ঘ্য নেমে এসেছিল ১৭ ওভারে। আফগানিস্তান আগে ব্যাট করে ৭ উইকেট হারিয়ে তোলে ১১৬ রান। ডাক ওয়ার্থ লুইস পদ্ধতিতে বাংলাদেশের সামনে লক্ষ্য দাঁড়ায় ১১৯ রানের। জয়ের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে উদ্বোধনী জুটিতে লিটন দাস এবং আফিফ হোসেন জয়ের ভীত গড়ে দিয়ে যান। সেই পথ ধরে সাকিব আল হাসানের দল ৫ বল হাতে রেখেই জয় তুলে নেয়। সেই সাথে ২০২১ সালের পর টানা তিন টি-টোয়েন্টি সিরিজ জিতলো বাংলাদেশ।

রোববার (১৬ জুলাই) সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টসে জিতে বোলিং করার সিদ্ধান্ত নেন বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। অধিনায়কের নেয়া সিদ্ধান্ত সঠিক প্রমাণ করতে বেশিক্ষণ সময় নেয়নি টাইগার বোলাররা। ইনিংসের প্রথম ওভারেই রহমানউল্লাহ গুরবাজকে ফেরান তাসকিন। মাত্র ৮ রান করে সাজঘরে ফেরেন গুরবাজ। এরপর নিজের দ্বিতীয় ও ইনিংসে তৃতীয় ওভারে আরেক ওপেনার হজরতউল্লাহ জাজাইকেও আউট করেছেন বাংলাদেশ দলের স্পিডস্টার।

ছবি: সংগৃহীত

আফগান ইনিংসের ৭ দশমিক ২ ওভার শেষে বৃষ্টি হানা দেয় মাঠে। তখন আফগানিস্তানের সংগ্রহ ছিল ২ উইকেটে ৩৯ রান। বৃষ্টি দীর্ঘক্ষণ দর্শকদের অপেক্ষা করায়। বৃষ্টি থামার পর আবার যখন খেলা শুরু হয়, খেলার দৈর্ঘ্য তখন সতেরো ওভারে নির্ধারিত হয়। বৃষ্টির পর খেলা শুরু হলে আফগান শিবিরে আঘাত হানেন পেসার মোস্তাফিজুর রহমান। তার বলে ক্যাচ তুলে দিয়ে ফেরেন আফগান সাবেক অধিনায়ক মোহাম্মদ নবি। সাজঘরে ফেরার আগে নবি ২২ বলে করেন ১৬ রান।

ছবি: সংগৃহীত

এরপর আফগান শিবিরে আঘাত হানেন সাকিব আল হাসান। দলীয় ৬২ রানে ২৭ বলে ২২ রান করা ইব্রাহিমকে আউট করেন তিনি। ইব্রাহিমের পর পরই আউট হন নাজিবুল্লাহ জাদরান। দলীয় ৬৭ রানে ৩ বলে ৫ রান করে সাকিবের বলে বোল্ড হন নাজিবুল্লাহ। এরপর ক্রিজে আসা করিম জানাতকে সঙ্গে নিয়ে আগ্রসী ব্যাটিং করতে ওমরজাই। দুজন মিলে ৪২ রানের জুটি গড়েন।

তবে দলীয় ১০৯ রানে জোড়া উইকেট হারায় আফগানিস্তান। ২১ বলে ২৫ রান করে ওমরজাই ও করিম জানাত ১৫ বলে ২০ রান করে সাজঘরে ফিরে যান। শেষ পর্যন্ত ১৭ ওভার শেষে ৭ উইকেট হারিয়ে ১১৬ রান সংগ্রহ করে আফগানিস্তান। বাংলাদেশের পক্ষে তাসকিন ৩টি, সাকিব ও মোস্তাফিজ নেন ২টি করে উইকেট।

ছবি: সংগৃহীত

আফগানিস্তানের দেয়া ১১৯ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা দারুণ করেন দুই টাইগার ওপেনার লিটন ও আফিফ। ৯ ওভারে দুজনে মিলে গড়েন ৬৭ রানের জুটি। ৩৭ বলে ৬ বাউন্ডারিতে ৩৫ রান করে লিটন রশিদের অসাধারণ ক্যাচে ফিরে গেলে ভাঙে জুটি। এরপর বেশিক্ষণ টিকতে পারেনি আফিফও। রনি তালুকদারের ইনজুরিতে একাদশে সুযোগ পাওয়া বাঁহাতি এ ব্যাটার ২০ বলে ২ ছক্কায় করেন ২৪ রান।

ছবি: সংগৃহীত

নাজমুল হোসেন শান্ত পারেননি ইনিংস বড় করতে, ৬ বলে ৪ রান করে বাঁহাতি এ ব্যাটার ফিরে গেলে বিপদ বাড়ে বাংলাদেশের। শেষ পাঁচ ওভারে টাইগারদের জয়ের জন্য দরকার ছিল ৪০ রান। উইকেটে ছিলেন তাওহিদ হৃদয় ও সাকিব আল হাসান। ১৩ ও ১৪ তম ওভারে ২০ রান তুলে ম্যাচ বাংলাদেশের দিকে নিয়ে আসেন দু’জনে। কিন্তু, ইনিংসের ১৫তম ওভারে ওমরজাইকে ছক্কা মারার পর হৃদয় ফিরে গেলে শঙ্কা জাগে টাইগার সমর্থকদের মনে। শেষ পর্যন্ত আর কোনো অঘটন হতে দেননি সাকিব ও শামীম পাটোয়ারি। দুজনে দলকে জয় এনে দিয়েই মাঠ ছাড়েন। সাকিব শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থাকেন ১১ বলে ১ চার ও ১ ছক্কায় ১৮ রান করে; আর শামিমের ব্যাট থেকে আসে অপরাজিত ৭ রান।

আফগানিস্তানের হয়ে সর্বোচ্চ দুটি করে উইকেট নেন মুজিবুর রহমান ও আজমতউল্লাহ ওমরজাই।

ব্যাটে বলে দুর্দান্ত পারফর্ম করে ম্যাচ সেরা ও সিরিজ সেরা হয়েছেন বাংলাদেশ ক্রিকেটের পোষ্টার বয় সাকিব আল হাসান।

/আরআইএম


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply