আবারও পিছিয়েছে পিআইও নুরুন্নবীর করা মানহানি মামলার অভিযোগ গঠনের আদেশ

|

ছবি: সংগৃহীত

গাইবান্ধা প্রতিনিধি :

আবারও পিছিয়েছে গাইবান্ধার পাঁচ সাংবাদিকের বিরুদ্ধে সাবেক প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) নুরুন্নবী সরকারের করা মানহানির মামলার অভিযোগ গঠন বিষয়ের আদেশ শুনানি। বিচারকের অসুস্থতার কারণে দুই মামলার একটিরও আদেশ হয়নি আদালতে।

বুধবার (২৬ জুলাই) দুপুরে রংপুর অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. রাজু আহাম্মেদের আদালতে আদেশের এই দিন ধার্য ছিল। তবে এদিন আদালতে বাদি নুরুন্নবী সরকার ও জিল্লুর রহমান পলাশসহ বিবাদী ৫ সাংবাদিক উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে, সর্বশেষ গত ১৭ জুলাই মামলা দু’টির অভিযোগ গঠনের বিষয়ে আদেশের দিন থাকলেও আদালত ২৬ জুলাই নতুন করে দিন ধার্য করেন। এ নিয়ে এই দুই মামলায় আদেশ শুনানির জন্য ৯ কার্যদিবস পার হয়েছে গেল এক বছরে। গত বছরের ১৬ জানুয়ারি মামলা দু’টির অভিযোগ গঠন ও বিবাদী সাংবাদিকদের অব্যাহতির (ডিসচার্জ) বিষয়ে উভয় পক্ষের আইনজীবী শুনানি শেষ করেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করে সাংবাদিকদের পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. ফরহাদ হোসেন লিটু বলেন, সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে হয়রানির উদ্দেশ্যে করা দুই মামলা অভিযোগ গঠন বাতিল ও অব্যাহতি চেয়ে শুনানি করা হয়। আদালত উভয় পক্ষের শুনানিতে আদেশের জন্য প্রথম ১৯ ফেব্রুয়ারি দিন ধার্য করলেও কোনো আদেশ দেননি। এরপর কখনো বাদীর সময় আবেদন আবার কখনো বিচারক না থাকাসহ নানা কারণে চাঞ্চল্যকর মামলা দু’টির অভিযোগ গঠনের আদেশ শুনানিতেই এক বছর পার হয়েছে। সর্বশেষ আদেশের জন্য ২৬ জুলাই দিন নির্ধারণ থাকলেও বিচারক অসুস্থ থাকার কারণে কোনো আদেশ হয়নি। এছাড়া নতুন করে আদেশের জন্য পরবর্তী দিনও ধার্য করেনি আদালত।

তিনি আরও বলেন, এই মামলা দু’টি দায়ের করা এবং পুলিশ প্রতিবেদন আদালতে জমার পর কেটে গেছে প্রায় চার বছর। অথচ দীর্ঘ সময়েও মামলা দু’টির আনুষ্ঠানিক বিচার কাজ শুরু করা সম্ভব হয়নি। মূলত বাদী একজন দুর্নীতিবাজ ও প্রভাবশালী। এ কারণে বারবার সময় আবেদন করে বিচার কাজ বিলম্বিত করছেন। এতে আদালতে হাজিরা দিতে এসে বিবাদি সাংবাদিকরা হয়রানির শিকার হচ্ছেন। তবে আমরা এই মিথ্যা মামলা থেকে সাংবাদিকদের অব্যাহতি দেয়াসহ দ্রুতই আদালতের কাছে ন্যায় বিচার প্রত্যাশা করছি।

উল্লেখ্য, ঘুষ ও দুর্নীতির একাধিক সংবাদ প্রকাশের জেরে ২০১৯ সালে ১৫ অক্টোবর রংপুরের আদালতে মানহানির দু’টি মামলা দায়ের করেন পিআইও নুরুন্নবী সরকার। এতে যমুনা টিভি ও কালের কণ্ঠের সম্পাদক-প্রকাশক এবং স্থানীয় প্রতিনিধিসহ ১২ সাংবাদিককে বিবাদী করা হয়। পরে আদালতের নির্দেশে তদন্ত শেষে সাংবাদিক জিল্লুর রহমান পলাশ ও শেখ মামুন-উর রশিদসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করে পিবিআই কর্মকর্তা।

এদিকে, গণমাধ্যমে একাধিক সংবাদ প্রকাশের পর নড়েচড়ে বসে স্থানীয় প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট ত্রাণ ও দুর্যোগ মন্ত্রণালয়। পরে তদন্ত করে আর্থিক দুর্নীতি ও অসদাচরণসহ একাধিক অনিয়মের প্রমাণ মেলে নুরুন্নবী সরকারের বিরুদ্ধে। এ নিয়ে বেতন গ্রেড পদাবনতিসহ তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় দু’টি মামলাসহ সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। শুধু তাই নয় শাস্তি হিসেবে তাকে প্রথমে চট্টগ্রামের সন্দীপ উপজেলা, পরে রাঙামাটির বাঘাইছড়ি ও পরবর্বতীতে বান্দরবান সদর উপজেলায় পদলি করা হয়।

সর্বশেষ নাটোরের বাগাতিপাড়ায় যোগদানেরর এক বছর না যেতেই তাকে বদলি করা হয় রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলায়। কিন্তু দুর্নীতিমূলক কর্মকাণ্ডে আলোচিত হওয়ায় পিআইও নুরুন্নবীকে যোগদানে বাঁধা দেয় স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সচেতন মহল। বর্তমানে নুরুন্নবী সরকার দিনাজপুরের হাকিমপুর উপজেলায় পিআইও হিসেবে কর্মরত।

/আরআইএম


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply