জাপানে ক্রমেই খাবারের উপাদান হিসেবে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে ঝিঁঝিঁ পোকা, গুবরে পোকার মত বিভিন্ন কীটপতঙ্গ। রেস্তোরাঁগুলোতেও পাওয়া যাচ্ছে এসব দিয়ে তৈরি বাহারি স্বাদের খাবার। যা খেতে আবার হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন মানুষ। বিশ্বজুড়ে যে হারে জনসংখ্যা বাড়ছে, সে হারে খাদ্য উৎপাদন বাড়ছে না। সেকারণে, পোকামাকড়ই খাবারের বিকল্প হিসেবে বিভিন্ন দেশে জনপ্রিয়তা পাচ্ছে।
দেশ-জাতি ভেদে রয়েছে খাবারের ভিন্নতা। মানুষের রুচি ও স্বাদের ভিন্নতার কারণে বিশ্বজুড়ে রয়েছে হাজার হাজার খাবার। এক দেশের খাবার আবার অন্যদেশে অখাদ্য।
জাপানেও রয়েছে বৈচিত্রময় খাবারের চাহিদা। মানুষের সে চাহিদার সাথে পাল্লা দিয়ে খাদ্য তালিকায় যুক্ত হচ্ছে নিত্যনতুন পদ। খাবারের উপকরণ হিসেবে বাড়ছে পোকামাকড়ের জনপ্রিয়তা। ঝিঁঝিঁ পোকা দিয়ে তৈরি ‘রিসোটো’ কিংবা বিভিন্ন কীটপতঙ্গের ডেজার্টের মতো পোকামাকড় দিয়ে তৈরি অদ্ভুত সব খাবারের দেখা মিলছে দেশটির টেক নোকো নামের এই রেস্তোরাঁয়।
টোকিওর যে সড়কে রেস্তোরাঁটির অবস্থান, সেখানে সাধারণত পর্যটকদের পদচারণা বেশি। ব্যতিক্রমী এই খাবার বিক্রি শুরুর পর থেকেই বেড়েছে তাদের বেচাকেনা। কর্তৃপক্ষ বলছে, পোকামাকড় খেতে প্রতিদিনই থাকে ভোজনরসিকদের উপচে পড়া ভিড়।
রেস্টুরেন্ট ম্যানেজার মিচিকো মিউরা জানান, আগের চেয়ে জনপ্রিয়তা বাড়লেও মানুষ এখনও সব ধরণের পোকামাকড় খাওয়ার সাথে অতটা অভ্যস্ত হয়ে উঠতে পারেনি। আমরা চেয়েছি, এই রেস্তোরাঁর মাধ্যমে তাদের জন্য একটা এমন জায়গা তৈরি করতে, যেখানে তারা ইচ্ছেমতো কোনো ঝামেলা ছাড়াই পোকামাকড় খেতে পারে।
জাপানের অন্যান্য রেস্তোরাঁগুলোর মেন্যুতে বাড়ছে পোকামাকড় দিয়ে তৈরি খাবার। অবশ্য বেশ আগে থেকেই, ঘাসফড়িং, রেশম কীটসহ গুটিকয়েক প্রজাতির পতঙ্গ খাওয়ার ঐতিহ্য রয়েছে এশিয়ার দেশটিতে (দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় মাছ-মাংসের বিকল্প হিসেবে এসব পতঙ্গ খাওয়ার প্রচলন শুরু হয়)। এখন খাবার উপাদান হিসেবে বাড়ছে অন্যান্য পতঙ্গের ব্যবহার।
জাতিসংঘের প্রতিবেদন বলছে, ২০৫০ সালের মধ্যে বৈশ্বিক জনসংখ্যা পৌঁছাবে ৯৭০ কোটির ঘরে। মানুষ বাড়ার সাথে পাল্লা দিয়ে কমছে কৃষিজমি এবং জলভূমির সংখ্যা। আর তাই, খাবারের বিকল্প হিসেবে বিভিন্ন দেশে বাড়ছে কীটপতঙ্গের জনপ্রিয়তা।
/এএম
Leave a reply