রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ভূতত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক এস তাহের আহমেদ হত্যা মামলার দুই আসামি মিয়া মোহাম্মদ মহিউদ্দিন ও জাহাঙ্গীরের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছে বৃহস্পতিবার (২৭ জুলাই) রাতে। মরদেহ দুটি তাদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এরই মধ্যে জানাজা শেষে দাফন সম্পন্ন হয়েছে মোহাম্মদ মহিউদ্দিনের।
শুক্রবার (২৮ জুলাই) বেলা ১১টায় জানাজা সম্পন্ন হয় মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়া মহিউদ্দিনের। ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার তুজারপুর ইউনিয়নের জান্দি গ্রামে তাদের পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়েছে।
এর আগে, বৃহস্পতিবার রাত ১০টা ১ মিনিটে রাজশাহী কারাগারে একসঙ্গে দুজনেরই ফাঁসি কার্যকর করা হয়। রাত ৯টার দিকে ফাঁসি কার্যকরের বিষয়টি জানানো হয় দুই আসামিকে। ফাঁসি কার্যকরের সময় উপস্থিত ছিলেন কারাগারের ডিআইজি প্রিজন, সিনিয়র জেল সুপার ও জেলার ছাড়াও জেলা প্রশাসন, সিভিল সার্জন, মেট্রোপলিটন পুলিশের প্রতিনিধিরা।
জানা গেছে, আলোচিত এ হত্যাকাণ্ডের দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই আসামির ফাঁসি কার্যকর করতে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে আটজন জল্লাদকে।
এর আগে, গত ২৫ জুলাই দুই আসামির সাথে শেষ সাক্ষাৎ করেছেন তাদের পরিবারের সদস্যরা। ওইদিন জাহাঙ্গীরের পরিবারের ৪০ সদস্য তার সাথে দেখা করেন। আর মহিউদ্দিনের সঙ্গে দেখা করেন স্ত্রীসহ তার পরিবারের চার সদস্য।
প্রসঙ্গত, ২০০৬ সালের ১ ফেব্রুয়ারি নিখোঁজ হন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক এস তাহের আহমেদ। দুইদিন পর তার বাসার পেছনের একটি ম্যানহোল থেকে উদ্ধার করা হয় তার গলিত মরদেহ। ওই রাতেই মতিহার থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন নিহত অধ্যাপকের ছেলে সানজিদ আলভি আহমেদ।
এরপর, তদন্ত সাপেক্ষে নিহত অধ্যাপক তাহেরের সহকর্মী সহযোগী অধ্যাপক ড. মিয়া মোহাম্মদ মহিউদ্দিন ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ইসলামী ছাত্রশিবিরের তৎকালীন সভাপতি মাহবুবুল আলম সালেহী ও স্থানীয় জাহাঙ্গীর আলমসহ আটজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ২০০৭ সালের ১৭ মার্চ এ ছয়জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দেয় পুলিশ। ২০০৮ সালের ২২ মে রাজশাহীর দ্রুত বিচার আদালতের বিচারক এ মামলার চারজন আসামিকে ফাঁসির আদেশ ও দুজনকে খালাস প্রদান করেন।
সাজাপ্রাপ্তরা হলেন নিহত অধ্যাপক ড. তাহেরের সহকর্মী রাবি’র সহযোগী অধ্যাপক ড. মিয়া মোহাম্মদ মহিউদ্দিন, অধ্যাপক ড. তাহেরের বাসার কেয়ারটেকার জাহাঙ্গীর আলম, তার ভাই নাজমুল আলম ও নাজমুল আলমের স্ত্রীর ভাই আব্দুস সালাম। তবে বিচারে খালাস পান রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রশিবিরের তৎকালীন সভাপতি মাহবুবুল আলম সালেহী ও জাহাঙ্গীরের বাবা আজিমুদ্দিন মুন্সি।
এসজেড/
Leave a reply