বিশ্বের অন্যতম বিষধর সাপ ‘রাসেল ভাইপার’ এর প্রতিষেধক তথা অ্যান্টিভেনম তৈরি হচ্ছে চট্টগ্রামে। প্রথমবারের মতো মেডিকেলের ভেনম রিসার্চ সেন্টারে এ নিয়ে কাজ করছে একদল গবেষক। এরই মধ্যে প্রথম দফা পরীক্ষামূলক প্রয়োগ সফল হয়েছে। অ্যান্টিভেনম তৈরি হলে সাপের কামড়ে মৃত্যু কমবে বলে আশা প্রকাশ করছেন গবেষকরা।
গায়ের রং দেখে এই সাপকে অজগর ভেবে যে কেউ ভুল করতে পারেন। এটি বিশ্বের অন্যতম বিষধর সাপ হিসেবে পরিচিত। নাম রাসেল ভাইপার, বাংলায় বলা হয় চন্দ্রবোড়া। সেকেন্ডের ১৬ ভাগের এক ভাগ সময়ের মধ্যে কামড় বসায় মারাত্মক বিষধর এই সাপ। নেই শতভাগ প্রতিষেধকও। তবে প্রথমবারের মতো চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে ভেনম রিসার্চ সেন্টারে চলছে রাসেল ভাইপারের অ্যান্টিভেনম তৈরির কাজ। তাদের মতে, বাংলাদেশের বিষধর সাপের বিষ ভারতীয় সাপের চেয়ে আলাদা। ফলে অনেক ক্ষেত্রে ভারতীয় সাপের প্রতিষেধক পুরোপুরি কার্যকর হয় না।
চট্টগ্রামের ভেনম রিসার্চ সেন্টারের রিসার্চ অ্যাসোসিয়েট নোমান বলেন, যদি আমাদের অ্যান্টিভেনম তৈরি হয় আমাদের নিজস্ব সাপ থেকে, তাহলে ঔষধের পরিমাণ কম লাগবে।
ভেনম রিসার্চ সেন্টারের রিসার্চ অ্যাসোসিয়েট মিজানুর রহমান বলেন, জীবন বাঁচানোর জন্য অনেক সাশ্রয়ী এবং নিরাপদ অ্যান্টিভেনমের প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে। সেই উদ্দেশ্য সামনে রেখে আমাদের অ্যান্টিভেনম প্রজেক্ট।
অ্যান্টিভেনম তৈরির অংশ হিসেবে এরই মধ্যে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের ল্যাবে মুরগির ওপর চালানো হয়েছে পরীক্ষা। সফল হলে দ্বিতীয় ধাপে পরীক্ষা চালানো হবে ছাগল ও ইঁদুরের ওপর। ভেনম রিসার্চ সেন্টারের সমন্বয়ক ডা. আবুদল্লাহ আবু সাইয়ীদ বলেন, এই অ্যান্টিবডি আলাদা করে নিয়ে এটা আমরা ইঁদুর বা অন্য কোনো প্রাণীর দেহে অ্যান্টিজেন-অ্যান্টিবডি রিয়্যাকশন করে নিউট্রিলাইজেশন ক্যাপাসিটি দেখে আমরা এই ভেনমের সাকসেস রেটটা বুঝতে পারবো।
এই অ্যান্টিভেনম আলোর মুখ দেখলে সেটি যেমন সহজলভ্য হবে তেমনি কমবে সাপের কামড়ে প্রাণহানি। চট্টগ্রাম ভেনম রিসার্চ সেন্টারের প্রিন্সিপাল ইনভেস্টিগেটর অধ্যাপক ড. অনিরুদ্ধ ঘোষ বলেন, এটা থিওরিটিক্যালি অনেক বেশি কার্যকর হওয়ার কথা। সেই সাথে, ফার্মাসিউটিক্যাল প্রোডাকশন এখানে হওয়ার কথা অর্থাৎ, এখানে বা সরকারের নিয়ন্ত্রণে থাকলে দামও সাশ্রয়ী হবে।
গবেষণার তথ্য মতে, বাংলাদেশের ৬৪ জেলার মধ্যে ১৭টিতেই রাসেল ভাইপারে উপস্থিতি মিলেছে।
/এম ই
Leave a reply