‘দুর্নীতি কমাতে স্যাংশন বা নিষেধাজ্ঞা দেয়া যুক্তরাষ্ট্রের একটি টুল বা হাতিয়ার।’ ওয়াশিংটনের এই অবস্থান আনুষ্ঠানিকভাবে ঢাকাকে জানালেন মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের বৈশ্বিক দুর্নীতি প্রতিরোধ সমন্বয়ক রিচার্ড নেফিউ।
আর দেশ থেকে পাচার হওয়া অর্থের তথ্য অনেক দেশই দিতে চায় না বলে তাকে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন। পাশাপাশি এস আলম গ্রুপের বিদেশে টাকা পাচার নিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এখনও কোনো নির্দেশনা পায়নি বলেও জানান সরকারের শীর্ষ এই কূটনীতিক।
সোমবার (৭ আগস্ট) বিকেলে পররাষ্ট্র সচিবের সঙ্গে প্রায় দুই ঘণ্টা বৈঠক করেন ঢাকায় সফররত রিচার্ড নেফিউ। এই বৈঠকের পর মাসুদ বিন মোমেন সাংবাদিকদের এসব কথা জানান।
পররাষ্ট্র সচিব জানান, টাকা পাচারসহ দুর্নীতি প্রতিরোধে সংস্থাগুলোর কার্যক্রম জানতে চেয়েছেন রিচার্ড নেফিউ। বাংলাদেশের দুর্নীতি ও টাকা পাচার নিয়ে তার উদ্বেগ ছিল কি না, সে প্রশ্নের জবাবে মাসুদ বিন মোমেন বলেন, অর্থ পাচার নিয়ে আলোচনা হয়েছে। সেক্ষেত্রে ব্যাংক, হুন্ডির কথা বলা হয়েছে। আর ছোট ছোট কিছু দ্বীপ রাষ্ট্র আছে, সেগুলো নিয়ে কথা হয়েছে। এগুলোতে আরও স্বচ্ছতা বাড়ানো দরকার।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গুঞ্জন রয়েছে, টাকা পাচারসহ দুর্নীতির দায়ে বাংলাদেশের এগারো ব্যক্তির ওপর নিষেধাজ্ঞা দিতে পারে যুক্তরাষ্ট্র। এ বিষয়ে সোমবারের বৈঠকে আলোচনা হয়েছে কি না, তা জানতে চান সাংবাদিকরা।
জবাবে মাসুদ বিন মোমেন বলেন, সে (নেফিউ) এক সময় নিষেধাজ্ঞা প্রদান প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। আমাদের একক কোনো ব্যক্তির কথা বলেনি। কেবল বলেছে, দুর্নীতি কমাতে স্যাংশন বা নিষেধাজ্ঞা দেয়া যুক্তরাষ্ট্রের একটি টুল বা হাতিয়ার।
সম্প্রতি সিঙ্গাপুরে এস আলম গ্রুপের টাকা পাচার নিয়ে প্রকাশিত সংবাদ সত্য কি না তা অনুসন্ধানে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। সেই টাকা ফিরিয়ে আনতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কী করছে জানতে চান সাংবাদিকরা।
মাসুদ বিন মোমেন বলেন, এখন পর্যন্ত আমরা কোনো নির্দেশনা পাইনি। যদি দুদক আমাদের অনুরোধ করে, তাহলে আইনের মধ্যে থেকে আমাদের যেটা করার সেটি করবো।
সরকার জানতে চাইলেও পাচার হওয়া অর্থের ব্যাপারে অনেক দেশ সহায়তা করে না বলেও অভিযোগ করেন সরকারের এই শীর্ষ কূটনীতিক।
এদিকে, চার দিনের সফরে ঢাকায় ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন রিচার্ড নেফিউ। দুর্নীতি দমন কমিশন, বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের সাথে আনুষ্ঠানিক বৈঠক করেছেন তিনি। এছাড়া, ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল ও সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের পাশাপাশি নাগরিক সমাজের কয়েকজনের সাথেও আলোচনা করেছেন তিনি।
/এমএন
Leave a reply