নির্বাচনের মাত্র ১০ দিন আগে ইকুয়েডরে হত্যাকাণ্ডের শিকার হলেন এক প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী। নির্বাচনী প্রচারণায় ভাষণ শেষে গাড়িতে ওঠার সময় গুলি করা হয় প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী ফার্নান্দো ভিল্লাভিসেনসিওকে। ৫৯ বছর বয়স্ক এ রাজনীতিক সোচ্চার ছিলেন দুর্নীতির বিরুদ্ধে। তার পরিবার ও বন্ধুদের অভিযোগ, হত্যাকাণ্ডের জন্য বর্তমান প্রেসিডেন্টই দায়ী। সন্ত্রাসবাদ ও মাদক সন্ত্রাসরোধে তার দুর্বল অবস্থানের কারণেই দেশটিতে বাড়ছে অপরাধ। নির্বাচনী লড়াইয়ে থাকা বাকি প্রার্থীরাও চান উপযুক্ত পদক্ষেপ। খবর আলজাজিরার।
বৃহস্পতিবার (১০ আগস্ট) ইকুয়েডরের কুইতো শহরে ছিলো প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী ফার্নান্দো ভিল্লাভিসেনসিওর নির্বাচনী প্রচারণা। দুর্নীতির বিরুদ্ধে শক্ত পদক্ষেপ গ্রহণের প্রতিশ্রুতি দিয়ে বক্তব্য শেষ করে গাড়িতে ওঠেন প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ফার্নান্দো ভিল্লাভিসেনসিও। গাড়িতে বসা মাত্র দিকে ছুটে আসে একঝাঁক বুলেট। গুলির আওয়াজের সাথে সাথে অডিটোরিয়ামে শুরু হয় হুড়োহুড়ি। পায়ের নীচে পিষ্ট হন অনেকে।
এ ঘটনার পর দেয়া এক বিবৃতিতে ইকুয়েডরের অ্যাটর্নি জেনারেল জানান, ফার্নান্দো ভিল্লাভিসেনসিওকে তিনদফা গুলি ছোঁড়া হয়। নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযানে প্রাণ গেছে হামলাকারীরও। গোলাগুলিতে আহত হয়েছেন কমপক্ষে ৯ জন। আহতদের তালিকায় দুই পুলিশ সদস্যও আছেন।
এদিকে, এ হত্যাকাণ্ডের জন্য সরাসরি দেশটির বর্তমান রাষ্ট্রপ্রধানকে দায়ী করছে নিহত ফার্নান্দোর পরিবার-স্বজনরা।
নিহত প্রেসিডেন্ট প্রার্থীর বোন প্যাট্রিসিয়া ভিল্লাভিসেনসিও বলেন, আমি ভাইয়ের পেছনেই ছিলাম। হঠাৎ-ই তীব্র আলোয় চোখ ধাঁধিয়ে গেলো। একঝাঁক বুলেট ছুটে আসছিলো আমাদের দিকে। চোখের সামনেই গুলিবিদ্ধ হয় এক বন্ধু। আমার ভাইয়ের হত্যার জন্য প্রেসিডেন্ট দায়ী। তিনি সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে শক্ত পদক্ষেপ না নেয়ায়, আজ এ পরিস্থিতি।
নিহত প্রেসিডেন্ট প্রার্থীর বন্ধু ড. কার্লোস ফিগুরোয়া বলেন, গোলাগুলিতে আহত অনেক কর্মী-সমর্থককে ক্লিনিকে নেয়া হয়েছে। কারও গলায়, কারও বা পায়ে বুলেট বিদ্ধ হয়েছে। সে সময় ভাবছিলাম- ফার্নান্দো নিশ্চয় নিরাপদ স্থানে সরতে পেরেছে। কিন্তু, কিছুক্ষণ পরই জরুরি বিভাগে আসে তার নিথর দেহ।
এরইমধ্যে এ ব্যাপারে রাষ্ট্রীয়ভাবে বিবৃতি দিয়েছেন ইকুয়েডরের প্রেসিডেন্ট গুইলারমো লাসসো। তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়ে বলেন, যেকোনো মূল্যে এই হত্যাকাণ্ডের বিচার করা হবে। অপরাধীরা কিছুতেই নিস্তার পাবে না।
তবে প্রেসিডেন্টের এমন আশ্বাসকে ফাঁকা বুলি আওড়ানোর সাথে তুলনা করেছেন, বাকি প্রেসিডেন্ট প্রার্থীরা।
সপ্রেসিডেন্ট প্রার্থী ওত্তো সোনেনহোলজার এক প্রতিক্রিয়ায় বলেন, ফার্নান্দোর পরিবারের প্রতি রইলো গভীর সমবেদনা। এটা শুধু প্রেসিডেন্ট প্রার্থী বা মান্তা শহরের মেয়রের হত্যার ইস্যু নয়। চলতি বছর ৩ হাজারের বেশি ইকুয়েডরের নাগরিক একই ভাগ্য বরণ করেছেন। সরকারের প্রতি আকুতি- আমরা আর কোনো শোকসভা, স্বান্তনাবাণী চাই না। বরং, সহিংসতা প্রতিরোধে কার্যকর উদ্যোগ দেখতে চাই।
প্রসঙ্গত, আগামী ২০ আগস্ট ইকুয়েডরে অনুষ্ঠিত হবে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। বিল্ড ইকুয়েডর মুভমেন্ট’ দলের নেতা ফার্নান্দো ছিলেন ৮ প্রেসিডেন্ট প্রার্থীর মধ্যে অন্যতম। তাকে বর্তমান প্রেসিডেন্টের অন্যতম শক্তিশালী প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছিলো।
ভিডিওটি দেখতে ক্লিক করুন এখানে
/এসএইচ
Leave a reply