কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও দৈনিক যায়যায়দিন পত্রিকার প্রতিনিধি ইকবাল মনোয়ারকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট। এছাড়া, ইকবালের বহিষ্কারাদেশ কেন অবৈধ ও বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন আদালত।
সোমবার (১৪ আগস্ট) বিচারপতি ভীষ্মদেব চক্রবর্তী ও বিচারপতি মো. আলী রেজার হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
গতকাল রোববার বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার চেয়ে হাইকোর্টে রিট করেন শিক্ষার্থী ইকবাল। তার আইনজীবী ব্যারিস্টার শিহাব উদ্দিন জানান, যে অফিস আদেশের মাধ্যমে ইকবালকে বহিষ্কার করা হয়েছে, সে আদেশে কোনো আইন বা বিধির উল্লেখ করা হয়নি। এছাড়া তার সংবাদে উল্লিখিত উপাচার্যের বক্তব্য বিকৃতের আপাতত কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তা থেকে প্রতীয়মান হয়, উপাচার্য তার ব্যক্তিগত ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটাতেই ইকবালকে বহিষ্কার করেছেন।
‘দুর্নীতি হচ্ছে তাই বাংলাদেশে উন্নয়ন হচ্ছে’ শিরোনামে গত (৩১ জুলাই) যায়যায়দিনের অনলাইন সংস্করণে সংবাদ প্রকাশিত হয়। ইকবাল মনোয়ার ওই প্রতিবেদনটি করেন।
প্রতিবেদনে বলা হয়, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এফ এম আবদুল মঈন বলেন, ‘অনেকে বলে দেশে দুর্নীতির কারণে উন্নয়ন হচ্ছে না। কিন্তু আমি বলব উল্টো কথা। দেশে দুর্নীতি হচ্ছে বলেই উন্নতি হচ্ছে। এটা নিয়ে অনেকেই বিভিন্ন কথা বলতে পারে। যে ঘুষ খায়, সে পদ্মা পাড়ে যায় ইলিশ খেতে। এতে পদ্মা পাড়ের গরিব মানুষেরা ধনী হচ্ছে। দুর্নীতি এভাবে অর্থনীতিতে অবদান রাখে। তাই অর্থনীতিবিদগণ দুর্নীতি নিয়ে কখনো কোনো বিরূপ মন্তব্য করে না। তবে যারা পলিটিক্যাল ইকোনমি নিয়ে কাজ করে তারা দুর্নীতি নিয়ে কথা বলে থাকে। নৈতিকতার জায়গায়ও এটি প্রশ্নবিদ্ধ। তবে অর্থনীতির জায়গা থেকে যদি বলি, দুর্নীতি কখনোই উন্নয়নের জন্য বাধা নয়।’
এরপর, ২ আগস্ট এক অফিস আদেশে ইকবাল মনোয়ারকে বহিষ্কারের কথা জানানো হয়। অফিস আদেশে বলা হয়, সোমবার (৩১ জুলাই) কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের ‘নবীনবরণ ও বিদায়’ অনুষ্ঠানে উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এফ এম আবদুল মঈনের বক্তব্যকে বিকৃত, উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বিভ্রান্তমূলক তথ্য প্রচার করে বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম ক্ষুণ্ন করার প্রেক্ষিতে উদ্ভূত পরিস্থিতি বিবেচনায় প্রক্টরিয়াল বডির প্রাথমিক প্রতিবেদন ও সুপারিশে বুধবার (২ আগস্ট) অনুষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের উচ্চপর্যায়ের সভায় শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে ইংরেজি বিভাগের ২০১৭-২০১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ ইকবাল মনোয়ারকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হলো।
এরপর, গত ৯ আগস্ট বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যসহ ৮ জনকে আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছিল।
/এমএন
Leave a reply