মাহফুজ মিশু:
কূটনৈতিক ও আইনি নানা প্রচেষ্টার পরও বঙ্গবন্ধুর পলাতক পাঁচ খুনিকে ফেরাতে পারছে না বাংলাদেশ। যুক্তরাষ্ট্রে থাকা খুনি রাশেদ চৌধুরীকে আনতে চলতি মাসেই আবারও ওয়াশিংটনকে চিঠি দেয়া হলেও জবাব পায়নি ঢাকা। ক্ষমতার তিন মেয়াদেও এই খুনিদের ফেরাতে না পারাকে ব্যর্থতা বলতে নারাজ পররাষ্ট্রমন্ত্রী। আর হত্যার কুশীলবদের খোঁজে কমিশন গঠনের উদ্যোগ নেয়া হলেও তা এখনও চূড়ান্ত হয়নি বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা।
সবশেষ ২০২০ সালের এপ্রিলে কার্যকর হয় খুনি আব্দুল মাজেদের ফাঁসি। হত্যাকাণ্ডের সাড়ে চার দশক পর এই রায় কার্যকর হলেও এখনও ধরা ছোঁয়ার বাইরে আরও পাঁচ ঘাতক।
রাজনৈতিক আশ্রয়ে যুক্তরাষ্ট্র্রে আছেন রাশেদ চৌধুরী। চার বছর আগে এ বিষয়ক নথি তলব করেন দেশটির অ্যাটর্নি জেনারেল। মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের পরামর্শে আইনী যোগাযোগও শুরু করে ঢাকা। একাধিকবার তাকে দেশে ফেরানোর চিঠি দিলেও মেলেনি সাড়া।
বিষয়টি নিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, আমরা সব ডকুমেন্ট সাবমিট করেছি। তবে ডকুমেন্ট সবমিট করার পর তারা (মার্কিন কর্তৃপক্ষ) আর কোনো কথা বলে না। এ বিষয়ে অ্যাটর্নি জেনারেলের সাথে অ্যাপয়েন্টমেন্ট চাইলেও এখনও তা পাইনি।
এদিকে, কানাডায় ঢাকা নূর চৌধুরীর ব্যাপারে আগের অবস্থানেই যুক্তরাষ্ট্র। মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্ত কাউকে না দেয়ার সিদ্ধান্তে অটল তারা। অবশ্য অবস্থান জানা দুই খুনীকে ফেরাতে না পারাকে ব্যর্থতা বলতে চান না পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, এসব খুনীদের নানাভাবে সুযোগ দেয়া হয়েছে। প্রত্যেকের হয়তো একাধিক পাসপোর্ট আছে। তৎকালীন সময়ে এতবার সরকার পরিবর্তন হয়েছে, তারা সবাই এদেরতে সাহায্য করে গেছে।
বাকি তিন খুনি আব্দুর রশিদ, শরিফুল হক ডালিম ও মোসলেম উদ্দিনের ব্যাপারে ইন্টারপোলের কাছেও কোনো তথ্য নেই। গত কয়েক বছর ধরে এই হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যের কারণ খোঁজার কথা বলছে সরকার। সে জন্য কমিশন গঠনের পরিকল্পনা থাকলেও তা ঝুলে আছে এখনও।
অ্যাটর্নি জেনারেল এম আমিন উদ্দিন বলেন, আইন মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্রান্ত আইনের ড্রাফট করা হয়। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, তারা এরই মধ্যে প্রক্রিয়া শুরু করেছেন। প্রধানমন্ত্রীসহ অন্যান্য সিনিয়র মন্ত্রীদের সাথে কথা বলে তারা ব্যবস্থা নেবেন। আশা করা যায়, অচিরেই এই আইন আসবে।
জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যাকাণ্ডের তিন যুগ পর ২০১০ সালে দেয়া হয় চূড়ান্ত রায়।
এসজেড/
Leave a reply