মেহেরপুর প্রতিনিধি:
মেহেরপুরের মুজিবনগর উপজেলার মোনাখালিতে ৩ ছাগল চোর গণধোলাইয়ের শিকার হয়েছে। মঙ্গলবার (১৫ আগস্ট) দুপুরে উত্তর পাড়া খেলার মাঠে ২ জন ছাগল চোর এবং ১ জন রিকশাচালককে গণধোলাই দিয়েছে স্থানীয় জনগণ। গণধোলাইয়ের শিকার হন রিকশাচালক সাগর (২৩), কবির (৩৫) এবং রায়হান (২৫)।
স্থানীয়রা জানায়, দুপুরে উত্তর পাড়ার শান্ত শেখের ছাগল চুরি করে রিকশা যোগে পালিয়ে যাওয়ার সময় মোনাখালি চকশ্যামনগর মাঠের পাশের সড়ক থেকে ছাগলসহ ৩ জনকে পাকড়াও করে স্থানীয় জনগণ। পরে উত্তরপাড়া খেলার মাঠে তাদের নিয়ে আসলে গণধোলাই দেয় উত্তেজিত জনতা। খবর পেয়ে মুজিবনগর থানা পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থলে পৌঁছে তাদের উদ্ধার করে।
মুজিবনগর থানার অফিসার ইনচার্জ মেহেদি রাসেল বলেন, তাদের চিকিৎসার জন্য মুজিবনগর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রেরণ করা হয়েছে। আটককৃত ছাগল চোরদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বাংলাদেশে গণধোলাই (মব জাস্টিস) বা গণপিটুনির ঘটনা অহরহ ঘটতে দেখা যায়। বিশেষজ্ঞদের মতে, এটি বিপজ্জনক। কারণ, এতে অপরাধীদের পাশাপাশি অনেক সময় নিরপরাধ মানুষও হত্যার শিকার হয়। ২০১৯ সালের জুলাই মাসে ঢাকার বাড্ডায় সন্তানের ভর্তির খোঁজখবর করতে গিয়ে তাসলিমা বেগম রেনুকে ছেলেধরা সন্দেহে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছিল। একই মাসে ছেলেধরা সন্দেহে আটজন গণপিটুনির শিকার হন। তখনকার পুলিশের আইজি স্বীকার করেছিলেন, ছেলেধরা বা অপহরণকারী ছিলেন না তারা কেউই।
বাংলাদেশে গণধোলাইয়ে হত্যার ঘটনায় বিচারের উদাহরণ থাকলেও তা বিরল। ২০১১ সালে আমিনবাজারে ডাকাত ঘোষণা দিয়ে ছয় ছাত্রকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। পরে প্রমাণিত হয়, তারা ডাকাত ছিল না। এ ঘটনার বিচারে ১১ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়, যারা সে রাতে গণধোলাইয়ে অংশগ্রহণ করেছিল। কিন্তু এখনও গণপিটুনির বেশিরভাগ ঘটনা রয়ে যায় বিচারহীন অবস্থায়। এ কারণে যারা মব জাস্টিসের অংশীদার হন, তাদের মধ্যে তেমন কোনো ভীতি কাজ করে না। এমনকি, এ নিয়ে খুব বেশি উচ্চবাচ্য করে না সুশীল সমাজও।
/এএম
Leave a reply