পর্দা উঠছে ৩৬তম টোকিও আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের

|

৩৬তম টোকিও আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের পর্দা উঠছে অবশেষে। আগামী ২৩ অক্টোবর থেকে চলবে ১ নভেম্বর পর্যন্ত। এবারের উৎসব আগের চেয়ে আরও বেশি বিস্তৃত পরিসরে হবে বলে আশা করছেন আয়োজকরা। করোনা মহামারির জন্য আরোপিত সব নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ার পর, উৎসব আরও ভালোভাবে আয়োজন করতে পারা নিয়ে আশাবাদী উদ্যোক্তারা। ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে উৎসবের প্রস্তুতি।

জাপানের কিংবদন্তি পরিচালক ইয়াসুজিরো ওজু’কে বিশেষভাবে স্মরণের মাধ্যমে পর্দা উঠছে টোকিও আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের ৩৬তম আসরের। চলতি বছর তার ১২০তম জন্মবার্ষিকী উদ্ যাপন করা হবে। তার কালজয়ী চলচ্চিত্র ‘টোকিও স্টোরি’র প্রতি সম্মান জানিয়েছে আয়োজকরা। যে তিন পরিচালক জাপানি চলচ্চিত্রকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নিয়ে আসায় মুখ্য ভূমিকা পালন করেছেন, ইয়াসুজিরো ওজু তাঁদের মধ্যে অন্যতম।

১৯৫৩ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘টোকিও স্টোরি’কে ভাবা হয় ওজুর অন্যতম মাস্টারপিস। ২০১২ সালে সাইট অ্যান্ড সাউন্ড ম্যাগাজিনের এক জরিপে বিশ্বের সর্বকালের সেরা সিনেমার তালিকায় স্থান পায় এটি। কিংবদন্তি নির্মাতা কেনজি মিজোগুচি ও আকিরা কুরোসাওয়ার পাশাপাশি ওজুকে স্মরণ করা হয় সাধারণ মানুষের কাছে চলচ্চিত্র পৌঁছে দেওয়ায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখার জন্য।

এবারের উৎসবের অফিসিয়াল পোস্টারে দেখা যাচ্ছে, জাপানি অভিনেতা-নির্মাতা ওকুদা এজি ও তার মেয়ে চলচ্চিত্র পরিচালক আন্দো মোমোকোকে। তাদের মাধ্যমে ‘টোকিও স্টোরি’ সিনেমায় থাকা প্রয়াত অভিনেতা চিশু রিয়ু ও প্রয়াত অভিনেত্রী সেতসুকো হারার মধ্যকার সম্পর্ক তুলে ধরা হয়েছে। এটি সাজিয়েছেন জাপানিজ ফ্যাশন ডিজাইনার জুনকো কোশিনো। ওজু’র জীবন ও সৃজনশীল কর্মকাণ্ড নিয়ে একাধিক অনুষ্ঠানের পরিকল্পনা করছে টোকিও চলচ্চিত্র উৎসব কমিটি। জানা গেছে, নির্মাতা আন্দো মোমোকো ৩৬তম আসরের শুভেচ্ছাদূত হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।

‘টোকিও স্টোরি’ দেখেই ইয়াসুজিরো ওজুর নির্মাণশৈলীর প্রতি আগ্রহী হন খ্যাতিমান জার্মান পরিচালক-আলোকচিত্রী ভিম ভেন্ডার্স। প্রয়াত নির্মাতার প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে তিনি নির্মাণ করেন প্রামাণ্যচিত্র ‘টোকিও-গা’। এবারের আসরে আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতা বিভাগে বিচারকদের প্রধান থাকবেন ভিম। ৫৫ বছরের ক্যারিয়ারে অনেক বৈশ্বিক সম্মানে ভূষিত হয়েছেন তিনি।

১৯৮৫ সালে টোকিও চলচ্চিত্র উৎসবের প্রথম আসরে দেখানো হয় ভিম ভেন্ডার্সের ‘প্যারিস, টেক্সাস’। ১৯৯১ সালের সমাপনী সিনেমা ছিল তার পরিচালিত ‘আনটিল দ্য এন্ড অব দ্য ওয়ার্ল্ড’। ১৯৯৩ সালে উৎসবের তরুণ নির্মাতাদের প্রতিযোগিতা বিভাগে প্রধান বিচারক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০১১ সালে তার ‘পিনা’ দেখানো হয় স্পেশাল স্ক্রিনিং বিভাগে। ১২ বছর পর আবারও টোকিও উৎসবে দেখা যাবে তাকে।

টোকিও হলো বিশ্বের প্রথম সারির ১৫টি আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের একটি। আগামী ২৩ অক্টোবর টোকিও তাকারাজুকা থিয়েটারে এর উদ্বোধন হবে। চলবে ১ নভেম্বর পর্যন্ত। সমাপনী আয়োজন থাকবে তোহো সিনেমাস হিবিয়াতে। এবারও জাপানে বসবাসরত পুরোপুরি আনকোরা একজন পরিচালককে দেওয়া হবে ‘টেক ওয়ান অ্যাওয়ার্ড’। সবমিলিয়ে সিনেপ্রেমীরা অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন এই উৎসবের জন্য।

এটিএম/


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply