আশিক মাহমুদ:
তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজধানীর বেইলি রোডে এক শিক্ষার্থীকে নির্মমভাবে কুপিয়ে জখম করেছে দুর্বৃত্তরা। ভাগ্যক্রমে প্রাণে বেঁচে গেলেও সারা শরীরে কোপ আর আঘাতের যন্ত্রণা নিয়ে বিছানায় কাতরাচ্ছেন আরিয়ান খান অনন্ত নামে ওই শিক্ষার্থী। এরই মধ্যে ওই ঘটনার ভিডিও ফুটেজ এসেছে যমুনা টেলিভিশনের হাতে। সেই দৃশ্য মনে করিয়ে দেয় বিশ্বজিৎকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যার ঘটনা। এ ঘটনায় ২ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
গত ১৫ আগস্ট সন্ধ্যায় রাজধানীর বেইলি রোডে ঘটে এই হামলার ঘটনা। ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, প্রকাশ্যে ২০-২৫ জন উঠতি বয়সী তরুণ নির্মমভাবে কোপাচ্ছে আরিয়ানকে। হামলার এক পর্যায়ে বাঁচার জন্য দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করেন আরিয়ান। কিন্তু পেছনে থেকে কালো পাঞ্জাবি পরা আরেকজন লাঠি দিয়ে মাথায় আঘাত করলে পড়ে যান তিনি। পরে আবারো তাকে পেটাতে থাকে হামলাকারীরা। একপর্যায়ে পাশের দোকানে গিয়ে কোনো রকমে প্রাণ রক্ষা করেন অনন্ত।
বেশকয়েকদিন হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে বাড়ি ফেরেন ওই শিক্ষার্থী। সেদিনের সেই ভয়ানক ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন যমুনা টেলিভিশনের কাছে। অনন্ত বলেন, ছুরি, কাঁচি আর লাঠি দিয়ে মাথা ও পাসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাত করেছে দুর্বৃত্তরা। প্রাণ রক্ষার জন্য ছুটতে শুরু করলেও ফের আঘাত করা হয়।
পরিবারের সদস্যরা বলছেন, বিনা অপরাধে কোপানো হয়েছে অনন্তকে। নেক্কারজনক এই ঘটনার বিচার চান তার মা-বাবা।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে, কেনো এই হামলা? জানা গেছে, ঘটনার দিন সকালে অনন্তের বন্ধু ফাহিমের সাথে হামলাকারীদের একজনের বাকবিতণ্ডা হয়। সেই ঘটনার জেরেই সন্ধ্যায় পরিকল্পিতভাবে এই হামলা করা হয়। ফাহিমের সাথে কথা বলেও ঘটনার সত্যতা মিলেছে।
ফাহিম বলেন, প্রথমে আমার সাথে কথা কাটাকাটি হলে আমাকে মারধর করে ওরা। তবে অনন্ত এসবের কিছুই জানতো না। আমি একটি দোকোনে ঢুকে গেলে পরে ওরা অনন্তকে দেখে ওকে নির্মমভাবে মারতে থাকে।
ওই দিন শুধু অনন্ত না, হামলাকারীদের থামাতে গিয়ে তাদের রোশানলে পড়েন আরও কয়েকজন। তাদের একজন সৈয়দ মানিক। হামলাকারীরা তাদের গাড়িও ভাঙচুর করে বলে জানা গেছে। সৈয়দ মানিক জানান, ঘটনার সময় ভয়ে মানুষ ওই স্থান খালি করে দেয়। কিশোর গ্যাংয়ের নাম শুনলেও তাদের ভয়াবহ রূপ নিজের চোখে দেখে আমিও হতবাক।
এই ঘটনায় রমনা থানায় মামলা হয়েছে। এজাহার সূত্রে জানা গেছে, হামলায় অংশ নেয় হামিম, রবিউল, অনন্ত, আরিফসহ আরও অন্তত ২০ জন। এদের মধ্যে রবিউল ও অনন্তকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বাকিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
ডিএমপির ওসি (রমনা থানা) আবুল হাসান জানান, প্রাথমিকভাবে মনে হয়েছে হামলাকারী ও ভুক্তভোগী সবাই একে অপরকে চেনে, তারা সহপাঠী। তুচ্ছ বিষয়কে কেন্দ্র করে এ ঘটনার উৎপত্তি হয়েছে। আমরা তদন্ত করছি। পরে আরও বিস্তারিত জানাতে পারবো। বিপথগামী এসব উঠতি বয়সী তরুণদের অপরাধ জগত থেকে ফেরাতে সবাইকে সচেতন হওয়ার আহ্বান পুলিশের।
এসজেড/
Leave a reply