এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের উদ্বোধন আজ

|

দীর্ঘ এক যুগেরও বেশি সময় পর খুলছে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে। আজ (২ সেপ্টেম্বর) প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধনের মধ্যদিয়ে আরেকটি মাইলফলক স্পর্শ করবে বাংলাদেশ। বিকেলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উদ্বোধন করতে যাচ্ছেন ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে। পরদিন রোববার সকাল ৬টা থেকে সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হবে এ উড়াল সড়ক।

অর্থায়ন, নকশা ও ভূমি অধিগ্রহণ জটিলতায় কাজ ৫ দফা পিছিয়ে এই মেগা প্রকল্পের কাজ আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয় ২০২০ সালের ১ ডিসেম্বর। যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন ও রাজধানীর যানজট নিরসনে ২০১১ সালে এই মেগা প্রকল্প হাতে নেয়া হয়। বর্তমানে পুরোপুরি কাজ শেষ না হলেও আপাতত খুলে দেয়া হবে প্রকল্পের বিমানবন্দর থেকে ফার্মগেট অংশ। এটি চালু হলে কমে আসবে রাজধানীর যানজট। প্রকল্পের নির্মাণ শেষ হওয়ার কথা ২০২৪ সালের ৩০ জুন।

সরকারি বেসরকারি অংশীদারিত্ব- পিপিপি’র আওতায় এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের দৈর্ঘ্য ১৯ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার। ২৭ কিলোমিটার দীর্ঘ ৩১টি র‍্যাম্পসহ যার দৈর্ঘ্য ৪৬ দশমিক সাত তিন কিলোমিটার। প্রকল্পটি বিমানবন্দর থেকে তেজগাঁও, মগবাজার, সায়েদাবাদ হয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুতুবখালী গিয়ে শেষ হবে।

এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কাজ চলছে ৩টি ধাপে। ১ম ধাপে বিমানবন্দর হতে বনানী রেল স্টেশন পর্যন্ত। যার দৈর্ঘ্যে ৭.৪৫ কিলোমিটার। ২য় ধাপ, বনানী থেকে মগবাজার রেল ক্রসিং, দৈর্ঘ্য ৫.৮৫ কিলোমিটার এবং ৩য় ধাপ মগবাজার রেল ক্রসিং হতে ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুতুবখালী। এই অংশের দৈর্ঘ্যে ৬ দশমিক ৪৩ কিলোমিটার।

এখন পর্যন্ত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের ৬৫ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। প্রকল্পের ১ম ধাপের কাজ শতভাগ শেষ হলেও ২য় ধাপের অগ্রগতি ৫৮ শতাংশ। আর ৩য় ধাপের অগ্রগতি মাত্র ৬ শতাংশ। যানজটের কথা মাথায় রেখে আপাতত খুলে দেয়া হচ্ছে বিমানবন্দর থেকে ফার্মগেট পর্যন্ত সাড়ে ১১ কিলোমিটার অংশ। এতে ১৫টি র‍্যাম্প রয়েছে। এগুলোর ১৩টি খুলে দেয়া হবে।

এই মেগা প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয় ৮ হাজার ৯৪০ কোটি টাকা। যার ২৭ শতাংশ সরকার বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানকে দেবে। বাকি অর্থের যোগান দেবে বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান। এরমধ্যে ইতালিয়ান থাই ডেভেলপমেন্ট কোম্পানি ৫১ শতাংশ, চায়না শানডং ইন্টারন্যাশনাল ৩৪ শতাংশ এবং সিনোহাইড্রো কর্পোরেশন দেবে ১৫ শতাংশ অর্থ। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে ‘ফার্স্ট ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে’। সরকারের সাথে চুক্তি অনুযায়ী, ২৫ বছরের চুক্তির মধ্যে সাড়ে ২১ বছর টোল আদায় করবে বিনিয়োগাকরী প্রতিষ্ঠান।

ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে চলাচলে যানবাহনকে ৪টি শ্রেণিতে ভাগ করে টোল হার নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রাইভেটকার, ট্যাক্সি, জিপ, মাইক্রোবাসসহ হালকা গাড়ির জন্য টোল ৮০ টাকা। মাঝারি ট্রাক ৩২০ টাকা। ৬ চাকার বেশি ট্রাকের জন্য ৪০০ টাকা। সব ধরনের বাসের টোল ১৬০ টাকা। দুর্ঘটনা রোধে এলিভেটেড এক্সপ্রেস দিয়ে ছোট ও কম গতির যানবাহন চলাচল করবে না।

প্রকল্পটি পুুুরোপুরি বাস্তবায়ন হলে ঢাকা শহরের ৩০-৪০ শতাংশ যানজট কমে যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। জ্বালানি সাশ্রয় হবে, কমবে পরিবহন খরচও। সেই সাথে মূল্যবান কর্মঘণ্টাও বাচবে বলে আশা করা হচ্ছে।

এসজেড/


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply