পরিকল্পনা ছিল সাপ্তাহিক ছুটির দিনে স্বামী-স্ত্রী এক সাথে সময় কাটাতে বের হবেন। তাই আগেই টিকিট নিয়ে রেখেছিলেন লাস ভেগাসের একটি কনসার্টের। অনুষ্ঠানস্থলে সময় মতো এসে হাজির হলেন হিদার ও মেল্টন দম্পতি।
কিন্তু কিছুক্ষণের মধ্যেই হাসিখুশি অনুষ্ঠানটি রূপ নিল মৃত্যুপুরীতে। পাশের উঁচু ভবন থেকে নামছে গুলির বৃষ্টি। কিছু বুঝে ওঠার আগেই দিগ্বিদিক ছুটোছুটি শুরু হলো। প্রাণ বাঁচাতে সবাই ছুটছে যে যার মতো। কী করবেন মেল্টন দম্পতি? ভাবনার আগেই কাজ করলেন মেল্টন। স্ত্রীকে বুকে আগলে ধরে ছুটতে থাকলেন সামনের দিকে। ছুটতে ছুটতে স্ত্রীকে পৌঁছে দিলেন নিরাপদ জায়গায়। কিন্তু ততক্ষণে নিজে পৌঁছে গেছেন জীবন-সায়াহ্নে। দৌড়ানোর সময় গুলিবিদ্ধ হয়েছেন মেল্টন। নিজের পিঠ দিয়ে গুলি ঠেকিয়েছেন; লাগতে দেননি প্রিয়তমার শরীরে। গুলিবিদ্ধ মেল্টনকে হাসপাতালে নেয়ার পর মৃত ঘোষণা করেছেন ডাক্তাররা।
হিথার বলছিলেন তখনকার কথা। ‘সে আমাকে ঝাপটে ধরেই দৌড় শুরু করলো। তখন বুঝতে পারছিলাম তার পিটে গুলি লাগছে। সে আমার জীবন বাঁচিয়েছে, কিন্তু তারটা হারিয়েছে।’
হিদার পেশায় সার্জন। কাজ করেন জ্যাকসন-মেডিসন কাউন্টি জেনারেল হাসপাতালে। ২৯ বছর বয়সী মেল্টন একই হাসপাতালে নার্স হিসেবে কর্মরত ছিলেন। অপারেশন থিয়েটারে এক সাথেই কাজ করতেন স্বামী-স্ত্রী। তাদের বিয়ের মাত্র প্রথম বছর চলছে।
‘আমি চাই সবাই জানুক কতটা বড় হৃদয়ের মানুষ ছিল মেল্টন। কতটা ভালবাসতে পারতো মানুষকে। তাকে হারিয়ে নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে আসছে আমার।’
রোববারের ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন ৫৯ জন সাধারণ মানুষ। আহত হয়েছেন ৫ শতাধিক। কনসার্টস্থলের পাশের ক্যাসিনোর ভবন থেকে ৬৪ বছর বয়সী স্টিফেন প্যাডক অটো রাইফেল থেকে নির্বিচারে গুলি করে এই হত্যাযজ্ঞ চালান। পরে হামলাকারী নিজেও আত্মহত্যা করেন।
/কিউএস
Leave a reply