বসবাসের অযোগ্য হয়ে উঠছে পৃথিবী। ক্রমেই ভয়ঙ্কয় হচ্ছে এই গ্রহের ইকোসিস্টেম। জলবায়ু বিজ্ঞানীদের গবেষণায় উঠে এসেছে এমন ভয়াবহ তথ্য। গবেষকদের দাবি, মানুষের খামখেয়ালিতে পৃথিবীর নয়টি স্বাস্থ্য সূচকের ছয়টিই সবশেষ নিরাপদ সীমা অতিক্রম করে ফেলেছে। এর জন্য দায়ী বন উজাড়, রাসায়নিক ও প্লাস্টিকের অতিরিক্ত ব্যবহারসহ মানবসৃষ্ট নানা কারণ।
তাহলে কি অসুস্থ হয়ে পড়ছে ৮শ কোটি মানুষের এই আবাসস্থল? এ অবস্থায় পৃথিবীর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে উদ্বেগজনক তথ্য দিয়েছেন গবেষকরা। তাদের দাবি, আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে লাইফ সাপোর্ট সিস্টেম বর্তমানে অনেক বেশি ঝুঁকির মুখে। মানুষের খামখেয়ালি কার্যকলাপের কারণে সৃষ্ট প্রভাবের নয়টি সীমা নির্ধারণ করেছেন বিজ্ঞানীরা; যার নাম দেয়া হয়েছে ‘গ্রহের সীমানা’। গবেষণার তথ্যে, এই ৯ সূচকের ৬টিই নিরাপদ সীমা অতিক্রম করে ফেলেছে।
জলবায়ু বিজ্ঞানী জোহান রকস্ট্রোম বলেন, আমরা গ্রহের স্থায়িত্ব, পৃথিবীতে বসবাসযোগ্যতা মূল্যায়ন করেছি। পৃথিবীর নয়টি সূচকের মধ্যে ছয়টি নিরাপদ সীমা অতিক্রম করেছে। আমরা ভুল পথে অগ্রসর হচ্ছি। এটি বড় উদ্বেগের বিষয়।
২৯ সদস্যের বিশেষজ্ঞ দলের চালানো এই গবেষণায় দাবি করা হয়েছে, সমুদ্রে অ্যাসিডের পরিমাণ, ওজোনস্তর ক্ষয় ও বায়ুবাহিত দূষণ- এই তিনটি সূচকই শুধুমাত্র নিরাপদ সীমার মধ্যে রয়েছে। এর মধ্যে সমুদ্রের পানিতে অ্যাসিডের পরিমাণ শিগগিরই নিরাপদ সীমা অতিক্রম করবে।
গবেষকরা বলছেন, ক্রমবর্ধমান বন উজাড়, রাসায়নিক পদার্থের অত্যাধিক ব্যবহার, বিভিন্ন প্রজাতির প্রাণীর বিলুপ্তি, প্লাস্টিকের ব্যবহার বৃদ্ধিসহ নানা কারণে হুমকিতে পড়েছে ইকোসিস্টেম।
জোহান রকস্ট্রোম আরও বলেন, জলবায়ু ঠিক রাখতে ‘প্যারিস চুক্তি’ মেনে জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার পর্যায়ক্রমে বন্ধ করাই যথেষ্ট নয়। আপনাকে জীবজগত ধ্বংস বন্ধ করতে হবে। পাশাপাশি বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ ও জমির সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।
গবেষকদের তথ্যে, ২০১৫ সালে চারটি সূচক সর্বোচ্চ নিরাপদ সীমা অতিক্রম করেছিল। গত ৮ বছরে অবশ্য ওজোনস্তরের কিছুটা উন্নতি হয়েছে।
/এএম
Leave a reply