ইলিশ ধরায় নিষেধাজ্ঞা অক্টোবরের শেষদিকে দেয়ার দাবি জেলে ও মৎস্যজীবীদের

|

ভোলা করেসপন্ডেন্ট:

ইলিশের প্রজনন নির্বিঘ্ন করতে অক্টোবর মাসকে প্রধান প্রজনন মৌসুম ধরে প্রতি বছর নদ-নদী ও সাগরে মাছ ধরায় ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা দেয় সরকার। তবে এই নিষেধাজ্ঞার সময় পেছানোর দাবি জানিয়েছেন ভোলার জেলে ও মৎস্য ব্যবসায়ীরা।

তাদের দাবি, অক্টোবরের শুরুতে নয়, শেষে কিংবা নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহ থেকে নিষেধাজ্ঞা দিলে এর সুফল মিলবে। গেলো দুই বছর ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষেও প্রচুর ডিমওয়ালা মা ইলিশ ধরা পড়েছিল বলে জানান তারা।

ভোলার এক জেলে বলেছেন, গতবছর নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ার পরও ডিমওয়ালা অনেক ইলিশ ধরা পড়েছিল। ফলে অন্য সময়ে নদীতে কাঙ্ক্ষিত ইলিশের দেখা মেলেনি। তাই প্রজনন নির্বিঘ্ন করতে নিষেধাজ্ঞার সময় পেছানো দরকার।

নিষেধাজ্ঞার সময় নির্ধারণ বিষয়ে জেলেদের সাথে একমত পোষণ করেছেন বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের মৎস্য বিজ্ঞানী ও ইলিশ গবেষক ড. মো. আনিসুর রহমান।

তিনি বললেন, ইলিশ সাগর থেকে নদ-নদীর মোহনায় আসে ডিম ছাড়ার জন্য। অক্টোবরের শেষে ভরা পূর্ণিমা ডিম ছাড়ার প্রধান সময়। এ বছর ২৯ অক্টোবর পূর্ণিমা আছে। তাই আশা করা যায় অক্টোবরের শেষভাগে প্রজনন সময় নির্ধারণ করলে প্রজনন ভালো হবে।

এদিকে, ইলিশের বড় যোগান আসে মেঘনা ও তেঁতুলিয়ার নদী থেকে। প্রজনন মৌসুমে মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞার সময় নির্ধারণ সভায় এখানকার জেলে ও মৎস্যজীবীদের রাখা হয়নি। এতে ক্ষোভ জানিয়েছেন তারা।

এ বিষয়ে ভোলা জেলা ক্ষুদ্র মৎস্যজীবী জেলে সমিতির সভাপতি মো. এরশাদ বলেন, নিষেধাজ্ঞার পরও ডিমওয়ালা ইলিশ ধরা পড়ে। কিন্তু নিষেধাজ্ঞা অভিযান পরিচালনার জন্য যেসব সভা করা হয়, সেখানে জেলে ও মৎস্যজীবীদের ডাকা হয় না। আশা করছি পরেরবার ঢাকায় জেলে ও মৎস্যজীবীদের সঙ্গে সভা করে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

গত বছরের চেয়ে ১৫ দিন পিছিয়ে নিষেধাজ্ঞার সময় শুরুর প্রস্তাব দেয়া হয়েছে বলে জানান ভোলা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোল্লা এমদাদুল্যাহ। তিনি বলেন, এ বছর দেরিতে মাছের পেটে ডিম এসেছে। জেলা টাস্কফোর্স কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ১৫ দিন পিছিয়ে মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞা আরোপের প্রস্তাব করা হয়েছে। তবে কত তারিখ থেকে ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুম শুরু হবে, সেটি মন্ত্রণালয় সিদ্ধান্ত দেবে।

উল্লেখ্য, গত বছর ৭ থেকে ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত ইলিশ শিকারে নিষেধাজ্ঞা ছিল। ২০২২-২৩ অর্থবছরে ভোলায় ইলিশ আহরণ হয় ১ লাখ ৯১ হাজার ৬৮৩ মেট্রিক টন।

/এনকে/এমএন


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply