নাগোরনো-কারাবাখ ইস্যু: প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবিতে উত্তাল আর্মেনিয়া

|

প্রতিবাদে মুখর আর্মেনিয়ান জনগণ। ছবি: রয়টার্স

প্রধানমন্ত্রী নিকোল পাশিনিয়ানের পদত্যাগের দাবিতে উত্তাল আর্মেনিয়ার রাজধানী। অভিযোগ, আজারবাইজানের সাথে যুদ্ধে কোনো প্রতিরোধ ছাড়াই পরাজয় বরণ করেছেন তিনি। খবর রয়টার্সের।

বৃহস্পতিবার (২১ সেপ্টেম্বর) রাতে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন ও দফতর ঘেরাও করেন বিক্ষোভকারীরা। এসময় তারা সরকার পতনের স্লোগান দেন। অভিযোগ, নাগোরনো-কারাবাখ ইস্যুতে ২০২০ সালের যুদ্ধেও প্রতিবেশীর কাছে পরাজিত হয়েছে এই সরকার। এবারও অস্ত্রবিরতির অজুহাতে সরে এসেছে প্রতিরোধ থেকে। হারিয়েছে আলোচিত নাগোরনো-কারাবাখের বাদবাকি নিয়ন্ত্রণও।

এদিকে প্রধানমন্ত্রীর সাফাই, রাশিয়া মধ্যস্থতা করলেও আর্মেনিয়ার পক্ষে ছিলো না পুতিন প্রশাসন। গত দু’দিন ধরেই অঞ্চলটি উত্তাল। মুসলিম রাষ্ট্র আজারবাইজানের অভিযানে মৃত্যু হয় ৩২ জনের, আহত হন আরও ২শ। কয়েকটি মানবাধিকার সংস্থার দাবি, নিহতের সংখ্যা কমপক্ষে ২০০, আহত ৪ শতাধিক। অভিযান শুরুর পর অঞ্চলটি থেকে কমপক্ষে দুহাজার মানুষকে নিরাপদে সরিয়ে নিয়েছে রাশিয়া।

আর্মেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী নিকোল পাশিনিয়ান বলেন, নাগোরনো-কারাবাখে বহাল আছে প্রতিরক্ষা বাহিনী। অস্ত্রবিরতি চুক্তির সময়ও সেখানেই মোতায়েন ছিল তারা। বিতর্কিত অঞ্চল থেকে প্রত্যাহার করা হয়নি আজারবাইজানের সেনাও। বিচ্ছিন্ন কয়েকটি সহিংসতা ছাড়া সার্বিকভাবে মানা হচ্ছে যুদ্ধ থেকে বিরতির নীতিমালা।

প্রসঙ্গত, নাগোরনো-কারাবাখ একটি বিতর্কিত অঞ্চল। তিন দশক ধরে এই অঞ্চল নিয়ে মুখোমুখি প্রতিবেশী দুই দেশ আজারবাইজান ও আর্মেনিয়া। আন্তর্জাতিকভাবে এটি আজারবাইজানের অংশ হিসেবে স্বীকৃত। কিন্তু অঞ্চলটির বড় অংশ আর্টসাখ প্রজাতন্ত্র নিয়ন্ত্রণ করে। এই প্রজাতন্ত্র একটি আর্মেনিয়ান জাতিগত সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে দাবি করে নিজেদের। ১৯৮৮ সালে কারাবাখ আন্দোলনের সূচনার পর থেকে এই অঞ্চলে রাজনৈতিক কর্তৃত্ব প্রয়োগ করতে পারেনি আজারবাইজান। ১৯৯৪ সালে নাগোরনো-কারাবাখ যুদ্ধ শেষ হওয়ার পর থেকে ‘ওএসসিই’র মিনস্ক গ্রুপের মধ্যস্থতায় শান্তি আলোচনা করে আসছে আর্মেনিয়া ও আজারবাইজান সরকার ।

২০২০ সালে নাগোরনো-কারাবাখ অঞ্চল নিয়ে আবারও প্রাণঘাতী যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে দুই দেশ। হামলা-পালটা হামলায় সেই যুদ্ধে উভয়পক্ষের সাড়ে ৬ হাজারের বেশি মানুষের প্রাণহানি ঘটে। চলতি বছরের ১৯ সেপ্টেম্বর আবারও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে অঞ্চলটি। আর্মেনীয় বিচ্ছিন্নতাবাদীদের বিরুদ্ধে আজারবাইজানের অভিযানে হতাহত হয় বহু মানুষ।

/এএম


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply