লোকসভায় ক্ষমতাসীন এমপির গালিগালাজকে কেন্দ্র করে ভারতের রাজনীতিতে উত্তেজনা

|

ভারতের নয়াদিল্লিতে দেশটির নতুন ও পুরাতন সংসদ ভবন।

লোকসভা অধিবেশনে ক্ষমতাসীন এক সংসদ সদস্যের গালিগালাজ ও বাজে মন্তব্য ঘিরে উত্তেজনা ছড়িয়েছে ভারতের রাজনীতিতে। রমেশ বিধুরি নামের বিজেপির ওই এমপির বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নেয়ার দাবি তুলেছে বিরোধীরা। খবর রয়টার্সের।

গত বৃহস্পতিবার (২১ সেপ্টেম্বর) অধিবেশনে মুসলিম এক এমপিকে ধর্মীয় পরিচয় তুলে গালিগালাজ করেন তিনি। বিষয়টিকে ‘সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ’ ও হেইট স্পিচ হিসেবে অভিহিত করেছে বিরোধী দলগুলো।

বহুজন সমাজ পার্টির মুসলিম এমপি দানিশ আলিকে রমেশ বিধুরির গালিগালাজের এই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার পরই শুরু হয়েছে তোলপাড়।

ঘটনার সূত্রপাত হয়, লোকসভার অধিবেশনে চন্দ্রযান-৩ এর সাফল্য নিয়ে চলা বিতর্কে। দানিশ আলিকে সন্ত্রাসী-উগ্রপন্থীসহ আরও বেশকিছু গালি দেন রমেশ। দেখে নেয়ারও হুমকি দেন। স্পিকার ওম বিরাল তার বক্তব্যকে এক্সপাঞ্চ করে সতর্কবার্তা দেন। জানান, ভবিষ্যতে একই আচরণ করলে নেয়া হবে কঠোর ব্যবস্থা।

বিতর্কিত এই কাণ্ডের পর নিজ দল বিজেপিকেও পাশে পায়নি রমেশ বিধুরি। এরইমধ্যে দল থেকে তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়েছে। যদিও এই পদক্ষেপ যথেষ্ট নয় বিরোধীদের কাছে। দেশজুড়ে হেইট স্পিচ ছড়ানোর অভিযোগ তুলে অবিলম্বে এই আইনপ্রেণাতকে গ্রেফতারের দাবি তুলেছে তারা। গত শুক্রবার দানিশ আলির সাথে দেখা করেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী।

কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ বলেন, দানিশ আলি সম্পর্কে রমেশ বিধুরি যা বলেছে তা অন্ত্যন্ত নিন্দনীয়। যত নিন্দাই করি সেটাই কম হবে। প্রতিরক্ষামন্ত্রী ক্ষমা চাইলেও সেটা যথেষ্ট নয়। এমন ভাষা আমি কখনওই শুনিনি। এটা শুধু দানিশ আলিই নয়, আমাদের সবার জন্যই অপমানজনক। নতুন সংসদের সূচনা হলো বিধুরির গালির মাধ্যমে।

কংগ্রেস আরেক নেতা সালমান খুরশিদ বলেন, কোনো না কোনো ব্যবস্থা নিয়ে বিজেপি বিষয়টি রফাদফা করতে চাইবে। তবে প্রশ্ন এটি নয়, প্রশ্ন হচ্ছে বারবার কেন দলটির নেতারা এই ধরনের কথা বলে? বিজেপি সরকারের ইশারাতেই কি দলটির সদস্যরা এমন বিতর্কিত কথা বলে থাকে?

তৃণমূল কংগ্রেসের নেত্রী মহুয়া মৈত্র বলেন, রমেশ বিধুরি এসব গালি দিলেও তা অসংসদীয় আচরণ নয়। অথচ আমরা কাউকে হারামি বললে সেটা অসংসদীয় আচরণ। রমেশ বিধুরি লোকসভায় দাঁড়িয়ে একজনকে মোল্লা, উগ্রপন্থী বলে গালি দিলো। কিন্তু স্পিকার এখনও কোনো ব্যবস্থা নিলো না।

এ বিষয়ে কঠোর ব্যবস্থা নিতে স্পিকারের কাছে দেয়া হয়েছে লিখিত অভিযোগও। উপযুক্ত বিচার না পেলে পার্লামেন্ট থেকে পদত্যাগের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন দানিশ আলি।

/এমএন


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply