মহাকাশ বিজ্ঞান চর্চায় আরেকটি বড় নজির তৈরি করলো নাসা। বেন্নু নামের এক গ্রহাণুর নমুনা নিয়ে পৃথিবীতে ফিরলো সংস্থাটির মহাকাশযান ওসিরিস রেক্স। সোমবার (২৫ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমস।
এর আগে, রোববার (২৪ সেপ্টেম্বর) যুক্তরাষ্ট্রের ইউটা মরুভূমিতে অবতরণ করে ক্যাপসুলটি। নির্ধারিত সময়ের তিন মিনিট আগে, স্থানীয় সময় সকাল ৮টা ৫২ মিনিটে পৃথিবীর বুকে ফেরে ওসিরিস রেক্স। যাতে আছে গ্রহাণু বেন্নু থেকে সংগ্রহ করা আড়াইশ’ গ্রাম নুড়ি-পাথর। কোনো গ্রহাণু থেকে এত বেশি পরিমাণে নমুনা পৃথিবীতে নিয়ে আসার ঘটনা এবারই প্রথম।
নুড়ি-পাথরের নমুনাগুলো নাসার নতুন গবেষণাগার ‘হিউস্টনের জনসন স্পেস সেন্টার’-এ পাঠানো হবে । অর্ধশতকের বেশি সময় আগে অ্যাপোলো মিশন থেকে আনা চাঁদের প্রায় ৪শ’ কেজি পাথর রাখা আছে ওই গবেষণাগারে।
এ প্রসঙ্গে নাসা জনসন স্পেস সেন্টারের চিফ সায়েন্টিস্ট এইলিন স্টান্সবেরি বলেন, জনসন স্পেস সেন্টারে নিয়ে যাওয়া হবে ক্যাপসুলকে। সে লক্ষ্যে কাজ করছে মহাকাশযান প্রকৌশলী, বিজ্ঞানীসহ বড় একটি দল। সেখানেই উন্মোচিত হবে এই মহামূল্যবান সম্পদ। এরপর শুরু হবে মূল গবেষণা।
মহাকাশ বিজ্ঞানীরা বলছেন, আগামী ৩শ’ বছরের মধ্যে পৃথিবীতে আছড়ে পড়তে পারে বেন্নু। তাই গ্রহাণুটির গঠন সম্পর্কে জানতে সংগৃহীত উপাদানগুলো বিশ্লেষণকে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। এছাড়াও ৪৬০ কোটি বছর আগের সোলার সিস্টেম সম্পর্কেও মিলতে পারে ধারণা।
এদিকে, মহাকাশযান ওসিরিস রেক্সের প্রিন্সিপাল ইনভেস্টিগেটর দান্তে লরেটা বলেন, আমরা বেশ ভালো পরিমাণে নমুনা পেয়েছি। বিশ্লেষণের অপেক্ষায় আছি। এতে ধারণা অনুযায়ী ক্লে মিনারেল, কার্বোনেট মিনারেল, আয়রন অক্সাইড কিংবা অন্য কিছু আছে কিনা পরীক্ষা করে দেখা হবে। বেন্নুর অবস্থান এখন পৃথিবীর বেশ কাছাকাছি। তাই পৃথিবীর সংস্পর্শে আসলে কী ধরনের প্রভাব হতে পারে আগে থেকেই ধারণা পাওয়া সম্ভব হবে।
এর আগে, ১৯৯৯ সালে খোঁজ মিলেছিলো গ্রহাণুটির। তখনই এটি সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহের মিশনে নামে নাসা। কয়েক বছরের মাঝেই মার্কিন স্পেস এজেন্সি ও ইউনিভার্সিটি অব অ্যারিজোনার যৌথ উদ্যোগে পাঠানো হয় মহাকাশযান ওসিরিস রেক্স। ২০২০ সালে বেন্নুর পৃষ্ঠদেশে খোঁড়াখুঁড়ি চালায় ওসিরিস রেক্স। তিন বছরের মাথায় নমুনা নিয়ে এটি ফিরলো পৃথিবীতে। যুক্তরাষ্ট্র ছাড়াও, ২০১০ ও ২০২০ সালে গ্রহাণুর নমুনা এনেছিল জাপানের একটি মহাকাশযান। দু’বারই এক চা চামচের মতো নমুনা সংগ্রহ করতে পেরেছিল জাপানের মহাকাশযানটি।
/এআই
Leave a reply