ইরানে ‘নির্যাতনে’ কোমায় কিশোরী, হিজাব ইস্যুতে হামলার শিকার বলে অভিযোগ

|

সিসি ক্যামেরার ছবি: সংগৃহীত

মেট্রো রেলের সিসিটিভি ফুটেজে ১৬ বছরের কিশোরী আরমিতা জেরাভান্দ ও তার বন্ধুদের দেখা যায় প্ল্যাটফর্মে অপেক্ষা করতে। ট্রেন আসার পর অন্যদের সাথে ভেতরে প্রবেশ করে তিন বন্ধু। পরের ফুটেজে দেখা যায়, আরমিতাকে তুলে ট্রেন থেকে বের করে প্ল্যাটফর্মে রাখছে বন্ধুরা। বর্তমানে হাসপাতালে কোমায় আছেন আরমিতা। তার অসুস্থতার পেছনে মেট্রোর এজেন্টদের দায়ী করছেন মানবাধিকার কর্মীরা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দুই মানবাধিকারকর্মী জানান, হিজাব আইন ভঙ্গের অভিযোগে সাজা দেয়া হয়েছে আরমিতাকে। যদিও স্বাভাবিক অসুস্থতা বলে দাবি করেছেন কিশোরীর বাবা মা।

এ প্রসঙ্গে আরমিতার মা বলেন, সাবওয়ের ছবি দেখলাম। মনে হয় না, সবাই যা বলছে, তা সত্যি। অসুস্থতা ছাড়া এর মধ্যে অন্য কোনো ব্যাপার নেই। যারা আমার মেয়ের জন্য দোয়া করছেন, তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা।আরমিতার বাবা বলেন, সিসিটিভি ফুটেজ পরীক্ষা করে দেখেছি। আমাদের কাছে সব স্পষ্ট।

মানবাধিকারকর্মীরা বলছেন, প্রশাসনের চাপের মুখে এধরনের বিবৃতি দিয়েছে আরমিতার বাবা-মা। তাদের সাথে যোগাযোগ করতেও দেয়া হচ্ছে না বলে জানান। যদিও সেসব অস্বীকার করেছে প্রশাসন।

তেহরান মেট্রো অপারেশন কোম্পানির সিইও মাসুদ দোরোস্তি বলেন, শোহাদা স্টেশন থেকে স্কুলে যাওয়ার জন্য ওঠে সে। স্কুলের আরও দুই বন্ধু ছিল। ট্রেনের শেষ কামরার দিকে যাচ্ছিল তারা। ভিডিওটিতে দেখা যায়, ভারসাম্য হারিয়ে ট্রেনে প্রবেশের সময়ই পড়ে যায় সে। রক্তচাপ কমে যাওয়ার কারণে এটা হতে পারে।

মানবাধিকারকর্মীরা বলছেন, প্রকাশিত সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়েছে কেবল এক দিকের দৃশ্য। প্রকাশ করা হয়নি ট্রেনের ভেতরের দিকের ছবি। ভিডিওটির মাঝখান থেকে কাট ও এডিট করা হয়েছে বলে পুরো ভিডিও প্রকাশের দাবি করেছেন তারা।

মানবাধিকার সংস্থা হেনগাও তাদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ করে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আরমিতার ছবি। বিষয়টি নিয়ে এক্স প্ল্যাটফর্মে লেখেন জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আনালেনা বেয়ারবোক। জানান, আবারও এক তরুণী মৃত্যুর সাথে লড়ছে ইরানে। কারণ, তার চুল দেখা গেছে। বাবা মাও ভয়ে আসতে চাইছেন না ক্যামেরার সামনে।

উল্লেখ্য, গত বছর ১৬ সেপ্টেম্বর হিজাব ঠিকভাবে না পড়ার দায়ে নৈতিকতা পুলিশের হাতে আটক হন মাহশা আমিনি। পুলিশি হেফাজতেই মৃত্যু হয় তার। ওই ঘটনার পর বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে ওঠে ইরান। পোশাকের স্বাধীনতার দাবিতে দেশজুড়ে চলে আন্দোলন। সহিংসতায় ও পুলিশের সাথে সংঘর্ষে প্রাণ যায় ৫শ’র বেশি মানুষের।

/এএম


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply