কুড়িগ্রাম করেসপনডেন্ট:
কুড়িগ্রামে সাত বছরের শিশু চম্পা হত্যা মামলার প্রধান আসামি মিন্টু বসুনিয়া ও স্ত্রী মোর্শেদা বেগমকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ঢাকার গাজীপুরের বড়বাড়ি জয় বাংলা এলাকা থেকে ওই দম্পতিকে গ্রেফতার করা হয়।
বৃহস্পতিবার (১২ অক্টোবর) দুপুরে তাদের কুড়িগ্রাম চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠায় উলিপুর থানা পুলিশ। গ্রেফতারকৃত দম্পতির বাড়ি কুড়িগ্রাম জেলার উলিপুর উপজেলার দলদলিয়া ইউনিয়নের গনকপাড়া গ্রামে।
জানা যায়, ২০১৩ সালে উলিপুর থানাধীন দলদলিয়া ইউনিয়নের গনকপাড়া গ্রামে আশরাফ ডাক্তারের পুকুরে মিন্টু ও তার বড় ভাই চাঁদ মিয়া ওরফে ভগলুসহ কয়েকজন মাটি কাটতে গিয়ে একই এলাকার বজরুল ইসলামের সাথে কথা কাটাকাটি হয়। পরবর্তীতে তাদের মধ্যে মারামারি হয়। মারপিটের ফলে বজরুল গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে মুমূর্ষু অবস্থায় রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। এরমধ্যে গুজব ছড়িয়ে পড়ে বজরুল ইসলাম মারা গেছেন।
পুলিশ ও মামলা সূত্রে জানা যায়, এ ঘটনা থেকে নিজেকে আড়াল করতে এবং প্রতিপক্ষকে মামলায় ফাঁসাতে আসামিরা যোগসাজশে আপন ভাতিজি চম্পাকে (৭) শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। এরপর বাঁশ ঝাড়ে লাশ ফেলে রাখে। পরে খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে মিন্টু নিজেই বাঁশ ঝাড় থেকে চম্পার লাশ শনাক্ত করে। এ ঘটনায় মামলা হয় প্রতিপক্ষ বজরুল ইসলামের পরিবারের বিরুদ্ধে। গ্রেফতারকৃত আসামিসহ বাদীর লোকজন প্রতিপক্ষ বজরুলের ভাতিজা হাফিজুলকে আটক করে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উলিপুর থানার তৎকালীন ইন্সপেক্টর (তদন্ত) জাকির উল ইসলাম চৌধুরী মামলাটি তদন্তের সময়ে ঘটনা ভিন্নদিকে মোড় নেয়। তদন্তের একপর্যায়ে মিন্টু বসুনিয়াকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে। জিজ্ঞাসাবাদে তদন্ত কর্মকর্তা আসামি মিন্টু ও স্ত্রীর এ ঘটনায় জড়িত থাকার বিষয়ে যথেষ্ট প্রমাণ পান। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে মিন্টুকে আদালতে সোপর্দ করা হয়। এরপর তদন্ত কর্মকর্তা বজরুল পরিবারকে মামলার দায় থেকে অব্যাহতি দিয়ে মিন্টু ও তার স্ত্রী মোর্শেদা বেগমের বিরুদ্ধে প্রতিবেদন দাখিল করেন। পরে মিন্টু উচ্চ আদালত থেকে জামিনে মুক্ত হয়ে তার স্ত্রীসহ দীর্ঘ প্রায় ১১ বছর যাবৎ আত্মগোপনে যায়। পরবর্তীতে পুলিশ র্যাবের সহযোগিতায় উলিপুর থানা পুলিশের একটি দল তাদের গাজীপুর জেলার বড়বাড়ি জয় বাংলা তিন রাস্তার মোড় এলাকা থেকে গ্রেফতার করে।
কুড়িগ্রাম জেলা পুলিশের মিডিয়া মুখপাত্র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) রুহুল আমীন বলেন, এটি একটি চাঞ্চল্যকর ও হৃদয়বিদারক ঘটনা। আসামিরা প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে গিয়ে নিজেই ফেঁসে গেছে।
এটিএম/
Leave a reply