আবারও জ্বালানি সংকটের শঙ্কায় বাংলাদেশ, জনগণকে সাশ্রয়ী হওয়ার আহ্বান

|

মাহফুজ মিশু:

ফিলিস্তিন-ইসরায়েল যুদ্ধ দীর্ঘ হলে জ্বালানির আন্তর্জাতিক বাজার আবারও অস্থির হতে পারে বলে আশঙ্কা করছে বাংলাদেশ। বিষয়টি নিয়ে সরকার খুবই চিন্তিত বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। পরিস্থিতি মোকাবেলায় চাইলেও এক মাসের বেশি জ্বালানি তেল মজুদ রাখার সুযোগ নেই বলে জানিয়েছেন তিনি। তাই জনগণ সাশ্রয়ী হলে সংকট কিছুটা সামাল দেয়া সম্ভব হবে বলে ধারণা তার।

গাজায় থামছেই না ইসরাইলের আক্রমণ। এ দফায় শুরু থেকেই যুদ্ধ-পাল্টা যুদ্ধে ফিলিস্তিন। প্রথমবারের মত ইসরাইলে হতাহতের সংখ্যাও অনেক বেশি। শুরু থেকেই ইসরাইলের পক্ষে সক্রিয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা অনেক দেশ।

এরই মধ্যে এই যুদ্ধের উত্তেজনা ছড়াচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য দেশেও। প্রকাশ্যে বেশিরভাগ আরব দেশ ফিলিস্তিনের পক্ষে অবস্থান নিলেও বিবেচনায় আছে ভূরাজনীতির নানা সমীকরণ।

সৌদি আরব, কাতার, ওমানের মত হাতে গোনা কয়েকটি দেশ মূলত বিশ্বব্যাপী তেল ও গ্যাস সরবরাহকারী। যুদ্ধের দামামায় এরই মধ্যে বেড়েছে গ্যাসের দাম, জ্বালানি তেলের বাজারও ঊর্ধ্বমুখী হওয়ার শঙ্কা রয়েছে।

রাশিয়া- ইউক্রেন যুদ্ধ পরবর্তী নিষেধাজ্ঞায় মস্কোর সাথে লেনদেন বন্ধ ইউরোপীয়দের। তাদেরও জ্বালানির প্রধান ঊৎস এখন মধ্যপ্রাচ্য। এ অবস্থায় জ্বালানির বিশ্ববাজার ও তার গতিপ্রকৃতি ভাবাচ্ছে বাংলাদেশকে।

এ বিষয়ে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, খুবই চিন্তিত আছি। তেল এবং গ্যাস এই দুটোই মধ্যপ্রাচ্য বেসড। আমাদের মেইন সাপ্লায়ার যারা তারাও। তারপরে এখন সারা ইউরোপে হিটিং এর জন্য গ্যাস লাগছে। গ্যাসের প্রাইজ ইতোমধ্যে ঊর্ধ্বমুখী। ১৪ ডলার ছাড়িয়ে ১৫-তে চলে গেছে ঋণখেলাপি। যার কারণে বোঝা যাচ্ছে না। পরিস্থিতি খারাপের দিকে যেতে পারে।

তিনি আরও বলেন, তেল কিনে বিরাট আকারে স্টক রাখা সম্ভব না। স্টক রাখা যায় সর্বোচ্চ ৩০ দিনের মতো। গ্যাসের ব্যাপারে আমরা কাতার , ওমানের ওপর নির্ভরশীল। আর ট্রেডারসদের ওপর। তারাও আবার মিডিল ইস্টের ওপর নির্ভরশীল। পরিস্থিতি খারাপ হলে শুধু আমাদের দেশে না, সবাই ভুক্তভোগী হবে। এটা সামাল দেয়া সম্ভব না, সবাই এটার এডভান্টেজ নিবে। যাদের কাছে স্টক আছে তারাও নিবে। এটাই পেট্রোলিয়ামের মার্কেট।

এ অবস্থায় বাড়তি জ্বালানি কিনে মজুদ করছে অনেক দেশ। বাংলাদেশের একমাত্র তেল শোধনাগার চট্টগ্রামের ইস্টার্ন রিফাইনারি। সেখানে কোনোভাবেই ৩০-৪০ দিনের বেশি মজুদ সম্ভব না। এ অবস্থায় জ্বালানি সংকট কীভাবে সামলাবে সরকার, তা নিয়ে চিন্তিত নীতিনির্ধারকরা।

তবে শীতে বিদ্যুতের চাহিদা কিছুটা কমার সম্ভাবনা আছে। সেখানেই আশার আলো দেখছেন প্রতিমন্ত্রী। পাশাপাশি, জ্বালানি ব্যবহারে সাশ্রয়ী হওয়ারও তাগিদ দিয়েছেন তিনি।

এমএইচ/এটিএম


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply