বিশ্বকাপে নিজেদের চতুর্থ ম্যাচে ভারতের বিপক্ষে টসে জিতে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে তানজিদ তামিম-লিটন দাসের ব্যাটে উড়ন্ত সূচনা পায় বাংলাদেশ। ওয়ানডে বিশ্বকাপ ইতিহাসে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ ৯৩ রানের উদ্বোধনী জুটি গড়েন তারা।এরপরই ছন্দপতন ঘটে টাইগার ব্যাটারদের। মাত্র ৪৪ রানের ব্যবধানে ৪ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায় টাইগাররা।
বৃহস্পতিবার (১৯ অক্টোবর) পুনের মহারাষ্ট্র ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন স্টেডিয়ামে টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। ইনজুরির কারণে খেলছেন না বাংলাদেশ দলের নিয়মিত অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। ফলে তার জায়গায় নেতৃত্ব দিচ্ছেন সহ-অধিনায়ক শান্ত।
ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুটা বেশ রয়েসয়ে করেন দুই ওপেনার লিটন ও তামিম। ভারতের দুই পেসার জাসপ্রিত বুমরাহ এবং মোহাম্মদ সিরাজের দারুণ সব বল ছেড়ে খেলেন দুজনই। তুলনামূলক ধীরগতিতে ছিলেন লিটন। ১৪তম বলে নিজের প্রথম রানের দেখা পান লিটন। পঞ্চম ওভারের প্রথম বলে বুমরাহর ইয়র্কার ফ্লিক করতে গিয়ে লেগ বিফোর উইকেটের ফাঁদে পড়ে যান তানজিদ। যদিও বুমরাহর মনে হয়েছে বলটি তানজিদের প্যাডে লেগেছে, আর তাই আবেদনও করেননি তিনি।
একদম অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে ‘জীবন’ পেয়ে যান এই তরুণ ওপেনার। তবে ষষ্ঠ ওভার থেকেই ম্যাচের মোড় ঘুড়িয়ে দেন লিটন। সিরাজের একই ওভারে দু’টি বাউন্ডারি হাঁকান এই ওপেনার। প্রথম পাঁচ ওভারে বাংলাদেশ করে মাত্র ১০ রান।
এরপর সময় যত গড়িয়েছে নিজেদের স্বভাবসুলভ ব্যাটিং উপহার দেন দুই টাইগার ওপেনার। জাসপ্রিত বুমরাহ-মোহাম্মদ সিরাজদের বাজে বল পেলেই বাউন্ডারি মারেন তারা। বিশেষ করে জুনিয়র তামিম ভারতীয় বোলারদের উপর চড়াও হয়ে ব্যাটিং করেন। লিটনের ব্যাট থেকেও এসেছে বেশ কয়েকটি দর্শনীয় চারের মার।
ইনিংসের ১৪তম ওভারের পঞ্চম বলে শার্দূল ঠাকুরের করা বলে ডিপ পয়েন্টে পাঠিয়ে ওয়ানডে ক্যারিয়ারের প্রথম হাফ সেঞ্চুরির দেখা পান জুনিয়র তামিম। আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে মাত্র ৪১ বলে ৫টি চার ও ৩ ছক্কায় ফিফটি তুলে নেন এই বাঁহাতি ওপেনার। হাফ সেঞ্চুরির পর অবশ্য বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি এই ওপেনার। কুলদীপের গুগলিতে বিভ্রান্ত হয়ে এলবিডব্লিউ হন এই বাঁহাতি ব্যাটার। ৪৩ বলে ৫১ রান করে সাজঘরে ফেরেন তামিম।
জুনিয়র তামিম ফেরার পর লিটনের সঙ্গে জুটি বাঁধতে আসেন নাজমুল হোসেন শান্ত। তবে তাকে থিতু হতে দেননি রবীন্দ্র জাদেজা। ভারতীয় এই স্পিনারের করা ব্যাক অব দ্য লেংথ ডেলিভারিতে এলবিডব্লিউ হয়ে সাজঘরে ফেরেন এই বাঁহাতি ব্যাটার। তৃতীয় উইকেটে লিটনকে সঙ্গ দিতে ক্রিজে আসেন মেহেদী হাসান মিরাজ। এই ব্যাটারকে নিয়ে ৬২ বলে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন লিটন।
ব্যাটিং অর্ডারে প্রোমোশন পেয়ে সাম্প্রতিক সময়ে ভালো খেললেও ভারতের বিপক্ষে হতাশ করেছেন মিরাজ। মোহাম্মদ সিরাজের লেগ স্টাম্পের বাইরে রাখা বলে ব্যাট ঘোরাতে গিয়ে বিপদ ডেকে আনেন এই অলরাউন্ডার। ঝাঁপিয়ে পড়ে এক হাতে দারুণ ক্যাচ লুফে নেন উইকেটরক্ষক লোকেশ রাহুল। স্রোতের বিপরীতে এক লড়াই চালিয়ে যান লিটন দাস। তবে এই ওপেনারকেও ফিরতে হয় বাজে শট খেলার কারণে। রবীন্দ্র জাদেজাকে লং অফ দিয়ে উড়িতে মারতে গিয়ে লং অফে শুভমান গিলের হাতে ক্যাচ দেন লিটন। ব্যক্তিগত ৬৬ রানেই থামতে হয় এই ওপেনারকে।
/আরআইএম
Leave a reply