বাগেরহাট করেসপন্ডেন্ট:
বাগেরহাটের ঐতিহাসিক হযরত খানজাহান আলী (রহ:) মাজার দিঘির কুমির ‘মাদ্রাজী’ মারা গেছে। বৃহস্পতিবার (১৮ অক্টোবর) সন্ধ্যায় দিঘির দক্ষিণ-পশ্চিম কোণে কুমিরটির মরদেহ ফুলে ভেসে ওঠে। ‘মাদ্রাজী’ নামের কুমিরটি ছিল পুরুষ। মাজার দিঘিতে এখন শুধু পিলপিল নামের একটি নারী কুমির থাকলো।
জানা যায়, মিঠাপানির একটি কুমির প্রায় দেড়শো বছর বেঁচে থাকে। তবে এটির বয়স হয়েছিলো মাত্র ৩০ বছর। বৃহস্পতিবার (১৯ অক্টোবর) সন্ধ্যায় কুমিরটির মরদেহ দিঘি থেকে উদ্ধার করেছে স্থানীয় প্রশাসন। ময়নাতদন্ত শেষে কুমিরটি মাটিচাপা দেয়া হবে।
খানজাহান (রহ:) মাজার শরীফের প্রধান খাদেম শের আলী ফকির অভিযোগ করে বলেন, দর্শনার্থীদের কাছ থেকে টাকা আদায় করে ব্যক্তিগতভাবে লাভবান হতে খাদেম মোস্ত ফকির কুমিরটি তার পুকুরে আটকে রেখেছিলো। মুরগির মধ্যে অধিক পরিমাণ ঘুমের ওষুধ খেতে দিয়েছিলো সে। এর ফলে কুমিরটি মারা গেছে।
এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ পুলিশ সুপারের তত্ত্বাবধানে কুমিরটির ময়নাতদন্ত করা হচ্ছে।
বাগেরহাট মডেল থানার ওসি আজিজুর রহমান জানান, খানজাহান (রহ:) মাজার দিঘির কুমিরকে আটকে রেখে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে মারার অভিযোগ পাওয়া গেছে। জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের নির্দেশে কুমিরটির ময়নাতদন্ত করা হচ্ছে। ঘটনার পর খাদেম মোস্ত ফকির পালিয়ে গেছে। তাকে খোঁজা হচ্ছে।
মারা যাওয়া কুমিরটির ময়নাতদন্ত দলের প্রধান ও খুলনা বিভাগীয় প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. লুৎফর রহমান বলেন, ধারণা করা হচ্ছে তিনদিন আগেই এটি মারা গেছে। সেজন্য ফুলে ভেসে উঠেছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনের পরেই মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।
১৪ শতকের প্রথম দিকে নিজের শাসনামলে হযরত খানজাহান আলী ‘কালাপাহাড়’ ও ‘ধলাপাহাড়’ নামে দু’টি কুমির নিজ হাতে এই দিঘিতে ছাড়েন বলে কথিত আছে। সাড়ে ছয়শো বছর ধরে বংশপরম্পরায় মাজার দিঘিতে থাকা কুমির ধলাপাহাড় মারা যায় ২০১৫ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি। দিঘির ঐতিহ্য ধরে রাখতে ২০০১ সালে সরকার ভারতের মাদ্রাজ ক্রোডাইল ফার্ম থেকে ৭টি মিঠাপানি প্রজাতির কুমির এনে এই দিঘিতে ছাড়ে। আগে সবগুলোই মারা গেছে। মাদ্রাজী নামের এই কুমিরটি মারা যাওয়ার পর এখন শুধুমাত্র নারী কুমির ‘পিলপিল’ একা রইল দিঘিতে।
/এনকে
Leave a reply