ঐতিহাসিক রাষ্ট্রীয় সফরে আজ প্রথমবারের মতো উত্তর কোরিয়া যাচ্ছেন দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুন জে-ইন। তিনদিনের সফরে বৈঠক করবেন দেশটির সর্বোচ্চ নেতা কিম জং-উনের সাথে। দু’নেতার আলোচনায় গুরুত্ব পাবে, পিয়ংইয়ং এর পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ। চির বৈরি দু’দেশের সম্পর্কোন্নয়নে এক বছরের মধ্যে এটি তাদের তৃতীয় বৈঠক।
জুন মাসে ঐতিহাসিক ট্রাম্প-কিম বৈঠকে পূর্ণাঙ্গ পরমাণু নিরস্ত্রীকরণের আশ্বাস দেয় উত্তর কোরিয়া। তিন মাস গড়ালেও প্রতিশ্রুতি পালনে কার্যত কোনো অগ্রগতি নেই। উল্টো কোরীয় উপদ্বীপকে ঘিরে বাড়ছে উত্তাপ। এ অবস্থায় পিয়ংইয়ং এর সাথে বিশ্ব সম্প্রদায়ের সম্পর্ক যখন তিক্ততার দিকে, তখনই হাল ধরতে ফের উদ্যোগী দক্ষিণ কোরিয়া।
কোরীয় যুদ্ধের ৬৮ বছরে, দুই কোরিয়ার সম্পর্কে প্রথম বরফ গলতে শুরু করে গেল এপ্রিলে। দক্ষিণ কোরীয় প্রেসিডেন্ট মুন জে-ইনের আমন্ত্রণে সীমান্তবর্তী নিরাপদ অঞ্চল পানমুনজোমে পা রাখেন, উত্তর কোরিয়ার সর্বোচ্চ নেতা কিম জং উন। পিয়ংইয়ংয়ের পরমাণু অস্ত্র কর্মসূচির ফলে কোরীয় উপদ্বীপে দ্বিতীয় যুদ্ধের শঙ্কা, কিছুটা কাটে বহুল প্রত্যাশিত সে বৈঠকে।
পরের মাসেই ফের জরুরি বৈঠকে মুখোমুখি হন দু’নেতা। এবারও পানমুনজোমেই; তবে ধারবাহিকতা রক্ষা করে মুন জে-ইন পা রাখেন উত্তর কোরিয়ার মাটিতে। কিম-মুন দ্বিতীয় বৈঠকেই জাগে আশার আলো। যার সূত্র ধরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাথে ঐতিহাসিক বৈঠক হয় উত্তর কোরীয় রাষ্ট্রনেতার।
চার মাসের ব্যবধানে, ফের মুখোমুখি হচ্ছেন দু’নেতা। কোরীয় যুদ্ধের ছয় দশকে প্রথমবার পিয়ংইয়ং সফরে কোনো দক্ষিণ কোরীয় রাষ্ট্রপ্রধান। বলা হচ্ছে, কোরিয়া উপদ্বীপে শান্তি ফেরাতে কঠিনতম চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে যাচ্ছেন মুন জে-ইন। তৃতীয় বৈঠক সফল হলে, পরমাণু নিরস্ত্রীকরণে উত্তর কোরিয়ার কার্যকর পদক্ষেপ আর থমকে যাওয়া ওয়াশিংটন-পিয়ংইয়ং আলোচনা- দুই’ই গতি পাবে নতুন করে।
পঞ্চাশের দশকে, অস্ত্রবিরতির মাধ্যমে কোরীয় যুদ্ধের দৃশ্যত অবসান ঘটে। কিন্তু আজও চলছে ছায়াযুদ্ধ। উত্তর কোরিয়ার পরমাণু কর্মসূচি আগে বন্ধ হবে; নাকি কোরীয় উপদ্বীপে দক্ষিণ কোরিয়া-যুক্তরাষ্ট্রের শক্তি প্রদর্শনের সমাপ্তি ঘটবে তা নিয়েই চলছে দ্বন্দ্ব।
যমুনা অনলাইন: এফএম
Leave a reply