স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, ঠাকুরগাঁও :
ঠাকুরগাঁওয়ে বাড়িভাড়া ও মুদি দোকানের দেনা মেটাতে না পেরে মাত্র ৩০ হাজার টাকায় নিজ সন্তানকে বিক্রি করেছেন শিল্পী বেগম নামে এক মা। বৃহস্পতিবার (২৬ অক্টোবর) রাতে সদর হাসপাতালে এ ঘটনা ঘটে। শিল্পী বেগম ঠাকুরগাঁও শহরের গোয়ালপাড়া এলাকার রায়হানের স্ত্রী।
জানা যায়, প্রায় একযুগ আগে রায়হানের সাথে শিল্পীর বিয়ে হয়। দুই ছেলে ও একটি মেয়ে সন্তান রয়েছে তাদের। তবে চতুর্থ সন্তান গর্ভে আসার পরেই হঠাৎ বাড়ি ছেড়ে চলে যান তার স্বামী রায়হান। এরপর অভাবের সংসারে বিপাকে পরে যান শিল্পী বেগম। স্বামীর সাথে সম্পর্ক ছিন্ন হওয়ার পর দীর্ঘদিন ভাড়া বাড়িতে বসবাস করতেন তিনি।
শিল্পী বলেন, স্থানীয় মুদি দোকানে দেনা ও বাড়ি ভাড়াসহ প্রায় দশ হাজার টাকা তার দেনা রয়েছে। বকেয়া টাকা পরিশোধ করতে মাত্র ৩০ হাজার টাকায় সদ্য ভূমিষ্ঠ হওয়া নবজাতক পুত্র সন্তানকে বিক্রি করে দিয়েছেন তিনি। তবে সন্তান বিক্রির টাকার বড় অংশই দালাল চক্র।
নবজাতক বিক্রির দালাল চক্রের সদস্য মিনি বেগম জানান, তিনি এই বছর ৫টি শিশু কেনাবেচার কাজ করেছেন। কোনো সমস্যা হয়নি। ক্রেতাদের সাধ্য অনুযায়ী বাচ্চার ব্যবস্থা করে দেন তিনি। তারা বেশ কয়েকজন মিলে এই কাজ করেন। বাজারে ছেলে শিশুর চাহিদা একটু বেশি। ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকায় মেয়ে শিশু পাওয়া যায়। আর ছেলে শিশুর ক্ষেত্রে ২০ থেকে ৩০ হাজার খরচ করতে হয় ।
নবজাতক শিশুর ক্রেতা জসিম বলেন, বিয়ের দীর্ঘ ১৫ বছর অতিক্রান্ত হয়ে গেছে। অনেক চিকিৎসা করেও কোনো সন্তান হয়নি। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন কখনও বাবা হতে পারবো না। তাই বাচ্চা কিনেছি।
এবিষয়ে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বেলায়েত হোসেন বলেন, নবজাতক শিশু ক্রয় বা বিক্রয়ের কোনো সুযোগ নেই। এটি সম্পূর্ণ অপরাধ। এ ধরণের ঘটনা ঘটলে অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এএস/এনকে
Leave a reply